
ঢাকা, ২০ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সাইবার নিরাপত্তা, ভুল তথ্য এবং গুজবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি)-এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আরও শক্তিশালী সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা, ভুল তথ্য এবং গুজবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের সম্মিলিত পদক্ষেপগুলো স্পষ্টভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এ বিষয়ে সিএসসির পদক্ষেপের অপেক্ষায় আছি।
নয়াদিল্লিতে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম বৈঠকে বাংলাদেশের হয়ে ড. খলিলুর রহমান এ সব কথা বলেন। বৈঠকে তিনি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে এই সম্মেলন আয়োজন এবং বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
খলিলুর রহমান উল্লেখ করেন, সিএসসির কার্যক্রমে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে এবং ঢাকা সার্বভৌমত্ব, সমতা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও হস্তক্ষেপ না করার নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, কনক্লেভের পাঁচটি মূল স্তম্ভ যৌথ নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অভিন্ন সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অপরিহার্য।
সমুদ্র নিরাপত্তা, জলদস্যুতা ও সংগঠিত সামুদ্রিক অপরাধ দমন, সন্ত্রাসবাদ দমন এবং সাইবার নিরাপত্তায় বাংলাদেশের ভূমিকার ওপর জোর দেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
তিনি চরমপন্থীদের সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকার দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের ধারাবাহিকভাবে নিন্দা জানিয়ে আসছে এবং সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।
দ্রুত ডিজিটালাইজেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবির্ভাবের কারণে সাইবার অপরাধ বড় আঞ্চলিক উদ্বেগে পরিণত হয়েছে বলে তিনি সতর্ক করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ ভুল তথ্য এবং গুজবের অবিরাম আক্রমণের মুখোমুখি হচ্ছে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য সাইবারস্পেস, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং প্রযুক্তি সুরক্ষিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
খলিলুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, উদীয়মান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেবল জাতীয় প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়।
বৃহত্তর আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতার অংশ হিসেবে যৌথ স্বার্থ এবং সুবিধাগুলো অনুসরণ করার সময় পারস্পরিক বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধাবোধ জোরদার করার জন্য সিএসসি সদস্যদের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিশ্চিত করতে এবং সাধারণ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমরা কোনো বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ শক্তিকে আমাদের সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও কল্যাণকে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দিতে পারি না।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পুনরায় নিশ্চিত করেন, জটিল ও পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিএসসি সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও উন্মুক্ততার ভিত্তিতে অভিন্ন অবস্থান খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।
সবশেষে খলিলুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, কনক্লেভ একটি উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক বহুপাক্ষিক সংস্থায় পরিণত হবে, যা উন্মুক্ত আঞ্চলিকতার দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা পরিচালিত হবে।
গতকাল বুধবার ড. খলিলুর রহমান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তারা সিএসসির কাজ এবং গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তথ্যানুযায়ী খলিলুর রহমান ভারতের দোভালকে তার সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।