শিরোনাম
ঢাকা, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ৪৭, ৫২, ৬৯, ৭১ সহ বাংলাদেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহিদদের কোনো দলিল বাংলাদেশে কেন নেই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘কারণ এক ব্যক্তির মিথ্যাচারকে টিকিয়ে রাখতে প্রকৃত শহিদদের কোনো দলিলপত্র করা হয়নি। জুলাইয়ের ইতিহাস যাতে কখনো কেউ বিকৃত করতে না পারে কিংবা মুছে দিতে না পারে সেজন্য জামায়াতে ইসলামী সর্বপ্রথম জুলাই বিপ্লবের শহিদ স্মারক প্রকাশ করেছে।’
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারক’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি দেশের দশটি শহর থেকে একযোগে ভিডিও মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়।
শফিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের বীরত্ব তুলে ধরতে ভূমিকা রাখবে জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারক। এসময় তিনি জুলাই বিপ্লবের শহিদ স্মারক পৃথিবীর সকল ভাষায় পর্যায়ক্রমে প্রকাশ ও সংরক্ষণ করার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ১০ খণ্ডে ও ২৫০০ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত এই শহিদ স্মারকে ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে যারা আত্মদান করেছেন সকল বীর শহিদদের তথ্য সংরক্ষণ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। ৫ আগস্ট তথা ৩৬ জুলাইকে জাতীয় ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ৩৬ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। এই দিন হাজার-হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবকের জীবন ও রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এই ফ্যাসিবাদ ছিলো স্বাধীন দেশে ভিনদেশী সরকারের আওয়ামী পুতুল সরকার।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং উত্তরের সেক্রেটারী ড. রেজাউল করিম।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২য় স্বাধীনতা জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস যাতে কখনো কেউ মুছে দিতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শহিদদের স্মরণিকা প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়ে এই স্মারক প্রকাশ করছে।
জাতীয় প্রেসক্লাব ছাড়াও নারায়নগঞ্জ, চট্রগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট প্রেসক্লাবে একযোগে ‘জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারক’- মোড়ক উম্মোচন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, জামায়াতে ইসলামী জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারক প্রকাশের মাধ্যমে এক মহান দায়িত্ব ও দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে আর কোনো অপশক্তি যাতে জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতন করতে না পারে সেই লক্ষ্যে জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের বিকল্প নাই।
দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছাড়াই জামায়াতে ইসলামী বরাবরই রাষ্ট্রের জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে। জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারক প্রকাশ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল কিন্তু রাষ্ট্র সেটি করতে পারেনি। সেটি করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামী মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের সক্ষমতা রাখে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
১২ দলীয় ঐক্য জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারক প্রকাশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী ইতিহাসের পাতায় এক প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর একুশে পদক প্রাপ্ত ড. সুকোমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সংগ্রামের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাজ্জাদ রহমানসহ জাতীয় নেতারা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।