নারায়ণগঞ্জ, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা ও স্বচ্ছ হতে হবে।
তিনি বলেন, এই নির্বাচনে বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দল যদি ৩০০টি আসনও পায়, আর কেউ যদি কিছু না পায় তাতেও আমাদের আপত্তি থাকবে না। কিন্তু স্পষ্ট কথা, গণঅভ্যুত্থানকে সামনে রেখে নির্বাচনটি হতে হবে।
আজ রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন কর্মসূচিতে সারজিস আলম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যদি মনে করে ডিসেম্বর-জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের উপযুক্ত সময়, আমরা দ্বিমত করবো না, কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোনো পক্ষ বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় বিন্দুমাত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করার চেষ্টা করে, বিন্দুমাত্র প্রভাবিত করার চেষ্টা করে তাহলে সেখানে হবে আমাদের পাল্টা অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র।’
সারজিস আলম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার লড়াইয়ে খুনি হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। এই খুনি হাসিনা থেকে আমাদের কিছু শিক্ষা নেয়ার রয়েছে। খুনি হাসিনা নিজেকে বাঁচানোর জন্য, তার পরিবারের সদস্যদের বাঁচানোর জন্য, নিজে পালানোর আগে তাদের সেইফ এক্সিট দিয়েছে। কিন্তু এই খুনি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে যাদের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবহার করেছে তাদেরকে শুধু টিস্যুর মতো ব্যবহার করেছে। আর বিপদে এভাবে রাস্তাঘাটে ফেলে পালিয়ে চলে গেছে। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ে নেতা কর্মীদের এখান থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত, কোন নেতা বা নেত্রীর পিছনে আপনি ছুঁটবেন। আগামীর বাংলাদেশে কাদের পেছনে আপনি দাঁড়াবেন।’
নির্বাচনে ছাত্রদের ভূমিকা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি যে মাসেই নির্বাচন হোক না কেন ছাত্র জনতা ক্ষমতামুখী না। যদি ক্ষমতামুখী হতো, তাহলে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতা যদি নির্ধারণ করতো, এই ছাত্র জনতাই সরকার গঠন করবে তাহলে বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের তার বিপক্ষে গিয়ে কথা বলার মতো স্পর্ধা ছিল না। কিন্তু আমরা ওই ৫ আগস্টে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
‘আমরা এই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের যত শিকার ছিল তাদের সবার সঙ্গে কথা বলেছি। সবার মতামতের ভিত্তিতে এই উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হয়েছে। তাই এখন আমাদের জায়গা থেকে ক্ষমতাকে দেখছি না। আমরা জনতাকে দেখছি। ফ্যাসিস্টদের বিরোধী ছাত্রদের যে নতুন রাজনৈতিক দল হবে, সেই দল সব শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’