চট্টগ্রাম, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : সনাতনী হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতা ও বহিস্কৃত ইসকন সংগঠক চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারী ডা. কথক দাশের ফের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ধর্মীয় সংগঠন ইসকন নিয়ে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী লেনে যৌথবাহিনীর ওপর হামলার মামলায় সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী শরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, হাজারী গলি মিয়া শপিং সেন্টার নামের মার্কেটের একটি দোকানের মালিক ওসমান মোল্লা ফেসবুকে হিন্দুদের ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে নিয়ে ‘ব্যাঙ্গাত্মক’ পোস্ট করেন। তা নিয়ে গত বছরের ৫ নভেম্বর স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে বিক্ষুব্ধরা রাতে দল বেঁধে মার্কেটের সামনে জড়ো হয়ে দোকানটি ঘিরে ফেলে।
পরে পুলিশ গিয়ে পোস্টদাতা ওসমানকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সে সময় তারা পুলিশকে ধাওয়া করে বলে অভিযোগ ওঠে। বিক্ষুব্ধরা সে সময় যৌথবাহিনীর সদস্যদের দিকে ইট-পাটকেল ও এসিড ছুঁড়ে মারে।
এই ঘটনায় পরদিন রাতে কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫শ’ থেকে ৬শ’ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘হাজারী গলির ঘটনার মামলায় ডা. কথক দাশের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
এরআগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হলে কথক দাশকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। এরপর তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরদিন সকালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় আনা হয় কথক দাশকে।
ওইদিন নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই মামলায় দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
ডা. কথক দাশ লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালের সার্জন এবং বাংলাদেশ আই হসপিটালের একজন কনসালটেন্ট। এছাড়াও ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারী হিসেবেও পরিচিত।