ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘দেশে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র রুখে দিতে স্বৈরাচার বিরোধী সকল শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, দেশে বিশৃঙ্খলা বাড়লে নির্বাচন হবে না। আর নির্বাচন না হলে, ফ্যাসিবাদ আবারো মাথাচারা দিয়ে উঠবে, ষড়যন্ত্রকারীদের হাত শক্তিশালী হবে। এ কারণেই স্বৈরাচার বিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে ছোটখাটো মন-মালিন্য পরিত্যাগ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ইঞ্জিনিয়ার শরীফ নাগিবের উদ্যোগে জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শরীফ হাফিজুর রহমানের (টিপু মাস্টার) স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
বিএনপি’র এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর লড়াই সংগ্রামের শেষ ইনিংস ছিল এক মাসের চূড়ান্ত আন্দোলন। সেই আন্দোলন শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। এর ফলে আওয়ামী লীগ চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়েছে। এই পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই গণতন্ত্র পূণরুদ্ধারে এই মূহূর্তে নির্বাচন জরুরি।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়ে যারা আসবে, তারা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে, ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। যাদের প্রত্যাশায় দেশের মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনছে তারা হলেন- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান কান্ডারি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। তাই আগামীর সরকার বেগম জিয়া, তারেক রহমান ও জনগণের সরকার।
বাংলাদেশ এখন গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছে উল্লেখ করে- বিএনপি’র এই নেতা বলেন, দেশ সবচেয়ে কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরের মধ্যে এত বিতর্কিত সময় এর আগে অতিক্রম করেনি। গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, যে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে, যেই হাজার হাজার ছাত্র-জনতা হাসপাতালের বেডে প্রতিনিয়ত কষ্ট ভোগ করছে, তাদের লক্ষ্যই ছিল ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে ফিরে আসা। সেই গণতন্ত্রের পথ এখনো সুস্পষ্ট হয়নি।
দুদু বলেন, আমি চাই, স্বৈরাচার খুনিদের বিচার দ্রুত হবে। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি যে, এই বিচারের ক্ষেত্রে একটু ঢিলা ব্যাপার রয়েছে। তবে আশার কথা হলো- অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগ নিয়েছে ও বলেছে তারা দ্রুতই স্বৈরাচারের বিচার করবে। এ কারণে আমরা ড. ইউনূসের সরকারকে সমর্থন করেছি। আমরা যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে আছি।
ছাত্রদলের এই সাবেক সভাপতি বলেন, ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনা পার্শ্ববর্তী একটা দেশে অপেক্ষা করছে। সেই দেশ খুনি হাসিনাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সারা বিশ্বে কাজ করছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। সর্বশেষ আমেরিকা গিয়েছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যেসব কথা বলেছে তাতে খুনি ও খুনির অভিভাবক হতাশ হয়েছে। সামনে তারা আরও হতাশ হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপত্বিতে ও দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার ও কৃষক দলের শাজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।