এমআইএসটি’র শিক্ষার্থী ইয়ামিন হত্যা: ১০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা

বাসস
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৫, ১৮:৫৯

ঢাকা, ১১ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): সাভারে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন।

আজ শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। এ সময় প্রসিকিউটর ওমর ফারুক, প্রসিকিউটর তারেক আব্দুল্লাহ ও মঈনুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

আদেশের বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, সাভারে গুলির পর পুলিশের সাঁজোয়া যানে তুলে সেখান থেকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এর মধ্যে ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নাম রয়েছে বলে জানান, প্রসিকিউটর তামিম। গ্রেফতারের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্যে আগামী ১৮ মে পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সাভারে গুলির পর পুলিশের সাঁজোয়া যানে তুলে সেখান থেকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর বরাবরে এ অভিযোগ দাখিল করেন নিহতের মামা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুন কাদির। তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন সাকিল আহমাদ।

এ আইনজীবীরা জানান, গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের কাছে নিয়ে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে বুকের বামপাশে গুলি করে। বন্দুকের গুলিতে ইয়ামিনের বুকের বামপাশে অসংখ্য গুলির স্পিøন্টার বিদ্ধ হয়।

এ অবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরে ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি এপাশ থেকে ওপাশ প্রদক্ষিণ করতে থাকেন। ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেন এবং সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে একজন পুলিশ সদস্যকে বের করে তার পায়ে পুনরায় গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃত ভেবে পায়ে গুলি না করে রাস্তার ওপরের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেন। গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচণ্ড কষ্টে নিঃশ্বাস নিতে তখনও দেখা যায়। এ অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ থেকে আরেক পাশ ছুড়ে ফেলে দেন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কোনো ধরনের ময়নাতদন্ত না করে এবং তৎক্ষণাৎ কোনো মৃত্যুর সনদ না দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের লাশ হস্তান্তর করে। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ করলেও পুলিশ বাহিনী ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লোকজন ছাত্র-জনতাকে হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করেন এবং ইয়ামিনের পরিবারের দায়িত্বশীল সদস্যদের ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মৃত্যু নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে সংবাদমাধ্যমে তথ্য দিতে বারণ এবং মামলা না করার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। উদ্ভূত বিশেষ পরিস্থিতিতে ইয়ামিনের পরিবার তাকে সাভার ব্যাংক টাউন কবরস্থানে দাফন করেন।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ১৮ জুলাই সাভারে এপিসি থেকে গুলি করে একটি ছেলেকে অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে দেয়। তিনি এমআইএসটি-এর ছাত্র। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি। তার মামা প্রধানমন্ত্রীসহ ৭৮জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নিমূর্লে এ বর্বরোচিত মানবতাবিরোধী অপরাধ পরিচালনা করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা দরকার: আমির খসরু
স্থানীয় নির্বাচন দ্রুত প্রয়োজন: তোফায়েল আহমেদ
রাবি প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে মাহিন ও মিশন
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: রাষ্ট্রদূত
গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে: পিডিবি চেয়ারম্যান
এই মুহূর্তে রাজনৈতিক ঐক্য জরুরি : মির্জা ফখরুল
ফেনীর যুবলীগ নেতা চট্টগ্রামে গ্রেফতার
নগরীর যানজট নিরসনে হকার ব্যবস্থাপনা জরুরি : চসিক মেয়র
সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনে ভালো ফল পাওয়া যাবে না: তোফায়েল আহমেদ
৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার হলে নিষিদ্ধ সামগ্রীসহ প্রবেশ করা যাবে না
১০