ঢাকা, ১২ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যাদেশ প্রদান ও প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয় থেকে আজ বুধবার একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে দুদক টিম রেল খাতের অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের বাস্তবায়িত চিনকি আস্তানা-আশুগঞ্জ ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ সংস্কার প্রকল্প, দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ ও আখাউড়া -লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
প্রাপ্ত রেকর্ডপত্রের তাৎক্ষণিক পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, প্রায় ২৯৯ কোটি টাকার চিনকি আস্তানা-আশুগঞ্জ প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা চাহিদা ছিল বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে ৫০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ ও ১১০ কোটি টাকার একই কাজ সম্পাদনা এবং ১৪০ কোটি টাকার বাৎসরিক টার্নওভার। অন্যদিকে প্রায় ৬২৮ কোটি কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প যোগ্যতা ছিল বিগত ১০ বছরে একই প্রকৃতির ২০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের দু’টি চুক্তির কার্য সম্পাদন যার মূল্যমান ৩শ’ কোটি টাকা ও যেকোনো তিন বছরের ৩শ’ কোটি টাকার বাৎসরিক টার্নওভার। এই কাজ দু’টি এককভাবে পায় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। কিন্তু, ওই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক যোগ্যতা চুক্তি অনুযায়ী ছিল না বলে প্রাথমিকভাবে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়।
সার্বিক পর্যালোচনায় ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটিকে অনৈতিক প্রক্রিয়ায় কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে বলে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এ ছাড়াও আখাউড়া-লাকসাম ও দোহাজারি-কক্সবাজার প্রকল্পসহ ম্যাক্স গ্রুপের অন্যান্য প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যাদি প্রাপ্তি সাপেক্ষে যাচাই ও বিশ্লেষণপূর্বক টিম একটি পূর্ণাঙ্গ এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবে।
এ ছাড়া রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ড.ওয়াজেদ আন্তর্জাতিক রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে কার্যক্রম পরিচালনা না করেই বেতন ভাতা উত্তোলন করে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত রংপুর জেলা কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান পরিচালনাকালে ওই রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়। এনফোর্সমেন্ট টিম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্টারের সাথে সাক্ষাত করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র, উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের বক্তব্য এবং সরেজমিন পরিদর্শনে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে এনফোর্সমেন্ট টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।