ঢাকা, ১৩ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ভাবমূর্তির সবকিছু হিন্দুস্তানের কাছে ইজারা দিয়েছিল। তাই তিনি তিস্তার পানি আনতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব এক মিনিটে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করার মতো নেতা।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার ভোট ডাকাতির সহযোগিতা করা সাবেক তিন নির্বাচন কমিশনারদের বিচার ও গ্রেফতারের দাবিতে’ আয়োজিত ‘প্রতিবাদী অবস্থান’ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজ পদ্মা শুকিয়ে যাচ্ছে। তিস্তা শুকিয়ে যাচ্ছে। জাগো বাহে তিস্তার জনগণ জাগো, এই স্লোগান তারেক জিয়াকে দিতে হয়। বিএনপিকে তিস্তার পানির জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়।
শেখ হাসিনার পক্ষে যে সব আমলারা কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ইউনূস সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না উল্লেখ করে ফারুক বলেন, কিছুদিন আগে সচিবালয়ে আগুন লাগলো, বহু তথ্য পুড়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টার চারপাশে এখনও যে সব আমলারা আছেন, তারা অনেকেই হাসিনার আমলে লুটপাটের দোসর ছিল। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।
তিনি বলেন, বিএনপি অফিস ভেঙ্গে অমানবিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে পুলিশ মেহেদী ও ডিবি হারুন বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছিল। বিএনপির শত-শত নেতাকে তারা রিমান্ডের নামে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছিল। তাদের হাত ধরেই হাসিনা তিন-তিন বার অবৈধ নির্বাচন করতে পেরেছে। তাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিচারের আওতায় আনুন। নইলে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না।
ফারুক বলেন, যারা বিদেশে ডলার-পাউন্ড নিয়ে পালিয়েছে তারা কিন্তু কারো বাসায় থাকে না। তারা বিদেশে ভিক্ষা করে না। তারা বিদেশের ফাইভ স্টার হোটেলে থাকে। আর হাসিনা ঠিকমতো ২৮টি সুটকেস নিয়ে ভারতে মোদির কাছে আশ্রয় নিয়েছে। তাই তাদের অভাব নাই। অভাব, কেবল ডক্টর ইউনূসের শাসন আমলের ১৮ কোটি মানুষের।
দেশে কোনো বিদেশি বিনিয়োগ নেই উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, স্বৈারাচারের দোসররা গার্মেন্ট সেক্টর অস্থিতিশীল করে তুলেছে। সরকারকে বিতর্কিত করতে তারা প্রতি মূহূর্তে দেশের ভেতরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। কারণ, স্বৈরাচারের প্রেতাত্নাদের টাকার অভাব নাই, অস্ত্রের অভাব নাই, তাদের ঢাকা শহরে লুকিয়ে রাখার মতো লোকেরও অভাব নাই।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নতুন দল নিয়ে মাঠে, গ্রামে, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা সদর, বিভাগে যান নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। আমরা ভাইয়ে-ভাইয়ে আর রক্তক্ষরণ করতে চাই না। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য একই মাঠে থাকি। মত ভিন্ন হতে পারে কিন্তু লক্ষ্য এক। আমাদের মধ্যে আর মতবিরোধ নয়, আমরা যেন সংসদ নির্বাচনে আর মতানৈক্য না করি।
তৃণমূল নাগরিক কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে এসময় অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।