ঢাকা, ২১ মে, ২০২৫ (বাসস) : কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, কৃষি উৎপাদনকে টেকসই ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ২০৫০ সাল পর্যন্ত সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে, এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদেই এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে।
এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আজ বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি সচিব বলেন, দেশের কৃষিকে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি নির্ভর করতে সরকার কাজ করছে। এ লক্ষ্যে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল প্রতিষ্ঠানের সেবাসমূহ একটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এম আই এস)-এর আওতায় আনা হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিটি ভূমি মৌজাকে ডাটাবেইজের আওতায় এনে সার, বীজ, বালাইনাশক, সেচ, ফসল বৈচিত্র্য, আবহাওয়া ও রোগ-বালাইসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য সন্নিবেশিত করে একটি মোবাইল অ্যাপস ‘খামারি’ চালু করা হচ্ছে।
ড. এমদাদ উল্লাহ বলেন, এ অ্যাপসের মাধ্যমে, কৃষক জমিতে কোন মৌসুমে কী ফসল চাষ করতে হবে এবং তার পরিচর্যা থেকে শুরু করে ফসল উঠানো পর্যন্ত সকল তথ্য ও সেবা পাবে।
কৃষি সচিব বলেন, দেশের শিক্ষিত নারী ও তরুণদের কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করবে। কৃষি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বাড়াতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে।
তিনি বলেন, চলতি বছর দেশে ফসলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। ধান ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন সন্তোষজনক। পচনশীল শাক-সবজি, আলু ও পিঁয়াজ সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার ও সংরক্ষণাগার তৈরি করা হচ্ছে।
গত বছর আগস্টে অকস্মাৎ বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল উল্লেখ করে কৃষি সচিব বলেন, বিশেষ প্রণোদনা ও তদারকির মাধ্যমে সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের সহযোগিতা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও নেতৃত্বের কারণে সার ক্রয়ের বিশাল অঙ্কের বকেয়া পরিশোধ করে, দেশে সারের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। দেশে বর্তমানে কোনো সার সংকট নেই।
সচিব আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর সাম্প্রতিক চীন সফরের পর বাংলাদেশ থেকে চীনে কৃষি পণ্য, বিশেষ করে আম রপ্তানির বিষয়ে সরকার জোরালোভাবে কাজ শুরু করেছে। চলতি মাসেই দেশ থেকে আমের চালান চীনে যাবে। দেশে আম উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ২৭ লক্ষ মে. টন। বর্তমানে কয়েকটি দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। আমের নতুন নতুন বাজার অনুসন্ধান ও রপ্তানির লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, আমের পাশাপাশি কাঁঠাল ও অন্যান্য ফল রপ্তানির জন্য সরকার কাজ করছে। চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রণোদনার মাধ্যমে আম চাষে কৃষকদের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
পরে সচিব সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।