রাজশাহী, ৩০ জুন, ২০২৫ (বাসস): আজ এখানে এক আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, প্লাস্টিক দূষণ একটি বড় পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা প্রতিবেশ ব্যবস্থা, বন্যপ্রাণী এবং মানুষের কল্যাণের জন্য গুরুতর হুমকিস্বরূপ।
জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর দূষণের এই ব্যাপক সমস্যা মোকাবেলায় তারা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ, গণসচেতনতা এবং সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক সেমিনারে এই মতামত প্রকাশ করা হয়েছে।
রাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দিন এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান যথাক্রমে প্রধান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফা অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অধ্যাপক খন্দকার এনামুল হক প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহ পরিণতি তুলে ধরেন এবং পরিবেশ রক্ষা ও সকল জীবের বেঁচে থাকার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণ, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবের কারণে পরিবেশ ইতোমধ্যে গুরুতর হুমকির মুখে। তিনি এই সমস্যাগুলি মোকাবেলায় সরকারি, বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
অধ্যাপক হক বন উজাড় হওয়ার কারণে সৃষ্ট নির্গমন কমাতে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে ইতিবাচক প্রণোদনা প্রদানের উপরও জোর দেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আমিনুজ্জামান সালেহ রেজা উলে¬খ করেন, জলাশয় ও পরিবেশকে আরও অবক্ষয় থেকে রক্ষা করার জন্য প্লাস্টিক দূষণর হ্রাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যাপক রেদোয়ানুর রহমান পদ্মা নদীতে কঠিন ও তরল উভয় বর্জ্য নির্বিচারে ফেলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এ কারণে পানি দূষণ ও নদী ভাঙ্গনের মতো দীর্ঘমেয়াদি হুমকি সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, "রাজশাহী অঞ্চলে পদ্মা নদী অবৈধ দখল ও দূষণের শিকার হচ্ছে। নির্মাণ কাজের বর্জ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রী সহ কঠিন বর্জ্য শহর সুরক্ষা বাঁধের পাশে ফেলা হচ্ছে।"
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবরিনা নাজ উদ্বেগের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন যে, প্লাস্টিক বর্জ্য ও পলিথিন ব্যাগ পদ্মা নদীর সবচেয়ে ক্ষতিকারক দূষণ ঘটাচ্ছে।
তিনি বলেন, "পলিথিনের ব্যবহার হ্রাস করার লক্ষ্যে পরিচালিত প্রচারণা থেকে আমরা এখনও কোনও সুনির্দিষ্ট সুফল পাইনি।" তিনি সতর্ক করে বলেন যে, দূষণ ও নদী দখল নিয়ন্ত্রণ করা না হলে বরেন্দ্র অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এর আগে, প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সেমিনার ভেন্যুতে শেষ হয়।