ঢাকা, ১৯ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, আফতাবনগর থেকে বনশ্রী যাওয়া-আসার জন্য প্রধান সড়ক ছাড়া বিকল্প কোনো মাধ্যম নেই। তাই এলাকাবাসীর সুবিধার্থে নড়াই নদীর ওপর কমপক্ষে দুটি সেতু নির্মাণ করা হবে। যেগুলো দুই আবাসিক এলাকার মধ্যে সহজ ও সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।
শনিবার ঢাকার বনশ্রীতে ডিএনসিসির সার্বিক সহযোগিতায় এবং সমমনা পরিষদ, বনশ্রীর উদ্যোগে বনশ্রী খালপাড় (নড়াই নদী) এলাকায় 'ময়লা পরিষ্কার ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির' উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, প্রস্তাবিত সেতুর নাম হবে 'নড়াই সেতু'। তিনি আরো বলেন, যে খালটিকে আমরা বনশ্রী খাল নামে চিনি, আশির দশকেও এটি ছিল প্রবাহমান নড়াই নদী। অবৈধ দখলের মাধ্যমে প্রবাহ রুদ্ধ করে এটিকে খালে রূপান্তর করা হয়। আমাদের উদ্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে একে পুনরায় ‘নড়াই নদী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
মোহাম্মদ এজাজ জানান, এই নদী রক্ষা করতে পারলে ভবিষ্যতে রামপুরা থেকে নৌপথে শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও বালু নদী হয়ে সদরঘাট ও মিরপুর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন চালুর সম্ভাবনা তৈরি হবে।
গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কারণে ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, শুধু গাছ লাগালেই চলবে না, অন্তত দুই থেকে তিন বছর সেগুলোর পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই একটি টেকসই সবুজ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
খালে ময়লা না ফেলার বিষয়ে নাগরিকদের সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রশাসক বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় নাগরিক অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শহর আমাদের সবার। তাই এর সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বনশ্রীর সমমনা পরিষদের সভাপতি মো. শাহবুদ্দিন শিকদার। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বনশ্রীর নানজিং কমিউনিটি সেন্টার থেকে শুরু করে খালপাড় এলাকা পর্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগ এই কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
এ ধরনের সামাজিক ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সমবেতভাবে কাজ করার ইতিবাচক সংস্কৃতিও গড়ে তুলছে।