ঢাকা, ২২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : বিমসটেক মহাসচিব ইন্দ্র মণি পাণ্ডে আজ বলেছেন যে, সংস্থাটি উন্নয়নের উপর দৃঢ়ভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখার পাশাপাশি সদস্য রাষ্ট্রগুলির উন্নয়নমূলক লক্ষ্য ও আকাঙ্ক্ষাগুলোকে প্রভাবিত করে এমন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলিও মোকাবেলা করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তার উপর বেশি মনোযোগ দিচ্ছি কিনা সেই বিষয়টি নিয়ে আমি পুনর্ব্যক্ত করতে চাই যে, আমাদের মনোযোগ হচ্ছে সদস্য রাষ্ট্রগুলির টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলি নিয়ে কাজ করা এবং সেই প্রেক্ষাপটে, যেসব নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ আমাদের সদস্যদের উন্নয়নমূলক আকাঙ্ক্ষাকে প্রভাবিত করে, আমরা সেগুলিও মোকাবেলা করতে পারি।’
ঢাকায় বিমসটেক (বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন) সদর দপ্তরে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) এর সদস্যদের সাথে এক ইন্টারেক্টিভ অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ বর্তমান সভাপতি এবং বিমসটেক সচিবালয়ের আয়োজক হওয়ায়, সংগঠনের এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়ার জন্য চেয়ার এবং সচিবালয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে।
মহাসচিব বলেন, “বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলি তাদের অভিন্ন নিরাপত্তা ও উন্নয়নমূলক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বিমসটেককে তাদের পছন্দের আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজে লাগাতে আগ্রহী। বিমসটেক কর্মপরিকল্পনা থেকে তাদের মনোযোগ বাস্তবায়নের দিকে সরিয়ে নিচ্ছে।”
সংস্থার এজেন্ডা প্রসঙ্গে পান্ডে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, নিরাপত্তা একটি অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্র হলেও, প্রাথমিক দৃষ্টি উন্নয়নের উপরই রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, “আপনি আমাদের এজেন্ডা লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, সদস্য রাষ্ট্রগুলি উন্নয়নের প্রচেষ্টার উপর বেশি মনোযোগ দিয়েছে এবং উন্নয়নের প্রায় সকল দিক আমাদের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
মহাসচিব আরো বলেন, বিমসটেক সকল সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ঐক্যমত্যের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
তিনি বলেন, “সকল সদস্য রাষ্ট্র যদি মনে করে যে, তারা একটি নির্দিষ্ট সমস্যা মোকাবেলা করতে চায়, তবে তারা তা মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নেবে।” সংস্থাটি মানব পাচার, মাদক পাচার, সাইবার নিরাপত্তা এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার মতো নিরাপত্তার দিকগুলিও মোকাবেলা করছে।
পান্ডে আরও বলেন, “আমরা যে সকল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই, সেগুলোর একটি আন্তর্জাতিক মাত্রা রয়েছে। এগুলো উন্নয়নের উপর প্রভাব ফেলবে। তাই, সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার জন্য নিরাপত্তার কয়েকটি দিক চিহ্নিত করেছে।”
তিনি উলে¬খ করেন, বিদ্যমান ব্যবস্থার মাধ্যমে, সংস্থাটি এমন চ্যালেঞ্জগুলি চিহ্নিত করতে চায় যেখানে আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজন হবে এবং জাতীয় পর্যায়ে অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করার প্রয়াস অব্যাহত থাকে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিমসটেকের অগ্রগতিকে প্রভাবিত করতে পারে কিনা জানতে চাইলে, মহাসচিব ভারত ও বাংলাদেশ সহ সকল সদস্য সরকারের বিমসটেকের মাধ্যমে একসাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেন।
পান্ডে সংস্থার কার্যক্রমে গতি বজায় রাখার জন্য বিমসটেকের ওয়ার্কিং গ্রুপ, বিশেষজ্ঞ গ্রুপ এবং অন্যান্য সাব গ্রুপের নিয়মিত বৈঠকের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, “এই গ্রুপগুলোর অধীনে আমাদের বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ, বিশেষজ্ঞ গ্রুপ এবং অন্যান্য সাব গ্রুপ রয়েছে। তাই, সচিবালয়ের প্রচেষ্টা হবে আমাদের সদস্য রাষ্ট্রগুলির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যাতে আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, আমরা নিয়মিতভাবে এসব বৈঠক করতে পারছি এবং আমরা এই বৈঠকগুলোর মাধ্যমে অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হব।”
সকল সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে পান্ডে বলেন, “সচিবালয় এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলির জন্য চ্যালেঞ্জ হল সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়িত করা এবং সে কারণেই তারা সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়নের উপর বেশি মনোযোগ দিতে চায়।”