
রংপুর, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে গত ৫ মাসে অস্ত্রোপচার করা ২৬৭ ক্যান্সার রোগীর মধ্যে ১০২ জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। এ ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীরা সঠিক সময়ে চিকিৎসা করাতে না পেরে অনেকে মারা যাচ্ছেন। তাই স্তন ক্যান্সার রোধে স্ক্রিনিংসহ সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার ব্যাপারে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের আয়োজনে লেকচার গ্যালারি-১ এ ‘স্তন ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব তথ্য জানান।
হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সামিহা তাসনিম মুনমুন সেমিনারে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্রেস্ট ক্লিনিকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্তনের সমস্যা নিয়ে মোট ১ হাজার ১৩৭ জন রোগী সেবা নিতে এসেছিলেন। এর মধ্যে ৫৪ জনের ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৪২ জন ক্যান্সারের তৃতীয় অথবা চতুর্থ পর্যায়ের রোগী।
ডা. সামিহা তাসনিম মুনমুন জানান, রমেক হাসপাতালে ক্যান্সারে আক্রান্ত অস্ত্রোপচার করা ২৬৭ জন রোগীর মধ্যে রেক্টাম ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৫ দশমিক ৫৪ ভাগ, কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত ২১ দশমিক ৯ ভাগ, স্ট্রোমাক ক্যান্সারে আক্রান্ত ২৪ দশমিক ৪২ ভাগ এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত ৩৭ দশমিক ৭৪ ভাগ রোগী।
তাই স্তন ক্যান্সার রোধে স্ক্রিনিংসহ সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার ব্যাপারে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ দেওয়া হয় সেমিনারে।
সেমিনারে রমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান, প্যাথলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকন্দ, মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মোখলেছুর রহমান সরকার। আরও বক্তব্য দেন হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট ডা. শফিকুল ইসলাম, রমেকের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক নুর ইসলাম, সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. জাবেদ আখতারসহ অন্যরা। রমেকের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন।
রমেক হাসপাতাল ইলেক্ট্রনিক ডাটা ট্র্যাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং কর্মসূচির তথ্য সংগ্রহে সারা দেশে তৃতীয় স্থান অর্জন করায় সরকারিভাবে পুরস্কৃত হয়েছে বলে জানানো হয় সেমিনারে।
এর আগে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে একটি জনসচেতনতামূলক র্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এরপর কলেজ প্রাঙ্গনে সচেতনতা দিবসের কেক কাটা হয়।