বাসস
  ২৯ আগস্ট ২০২৩, ১৭:২০

পাকিস্তান-নেপাল ম্যাচ দিয়ে কাল শুরু হচ্ছে ’এশিয়ার বিশ্বকাপ’

মুলতান(পাকিস্তান), ২৯ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : পাকিস্তান-নেপালের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে  আগামীকাল শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৬তম আসর। জয় দিয়ে ১৫ বছর পর ঘরের মাঠে শুরু হওয়া এশিয়া কাপ শুরুর লক্ষ্য  পাকিস্তানের। অন্য দিকে এশিয়া কাপে নিজেদের অভিষেক ম্যাচে বিশ^কে চমকে দিতে মরিয়া নেপাল।
এ’ গ্রুপের ম্যাচটি মূলতানে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল  ৩টা ৩০ মিনিটে।
সর্বশেষ ২০০৮ সালে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ আয়োজন করেছিলো পাকিস্তান। ১৫ বছর পর এবার ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ আয়োজনের সুযোগ পায় পাকরা। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে ভারতীয় দল  পাকিস্তান সফরে রাজি না থাকায় হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের এশিয়া কাপ। হাইব্রিড মডেলের কারনে টুর্নামেন্টের ১৩টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪টি ম্যাচ পাকিস্তানে এবং বাকী ৯টি হবে শ্রীলংকার মাটিতে। নিজেদের সবগুলো ম্যাচ শ্রীলংকায় খেলবে ভারত। ১৭ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্টের ফাইনাল হবে শ্রীলংকার কলম্বোতে।        
ঘরের মাঠে চার ম্যাচের মধ্যে পাকিস্তানে খেলা রয়েছে মাত্র দু’টি। নেপালের পর সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ (যদি সুপার ফোরের টিকিট পায়) খেলবে তারা।
এশিয়া কাপের মঞ্চে পাকিস্তানের পারফরমেন্স খুব বেশি ভালো নয়। ২০০০ ও ২০১২ সালে, মাত্র দু’বার শিরোপা জিতেছিলো তারা। গেল আসরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জিততে পারেনি পাকিস্তান।
সদ্য শ্রীলংকার মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনি ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে পাকিস্তান। আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে দ্বিতীয়বারের মত ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষেও উঠে পাকিস্তান।
ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই ভারসাম্যপূর্ণ দল পাকিস্তান। দারুন ফর্মে রয়েছেন ব্যাটার  ইমাম উল হক, অধিনায়ক বাবর আজম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ২টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ১৬৫ রান করে সিরিজ সেরা হন ইমাম। ২টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ১১৩ রান করেছেন বাবর। এ  সিরিজেই ক্যারিয়ারের ১শতম ইনিংস শেষে সর্বোচ্চ রানের বিশ^রেকর্ড দখলে নেন বাবর।
মিডল অর্ডারে পাকিস্তানের ভরসা মোহাম্মদ রিজওয়ান, আগা সালমান, ইফতিখার আহমেদ, শাদাব খান। আফগানিস্তানের সিরিজে সেই প্রমান রেখেছেন তারা।
বিশে^র অন্যতম সেরা বোলিং লাইন আপ পাকিস্তানের। বিপক্ষ দলের বড় চিন্তার কারন পাকিস্তানের তিন পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ ও নাসিম শাহ। আফগানিস্তান সিরিজে আফ্রিদি ৬টি ও রউফ ৫ উইকেট নেন। অলরাউন্ডার হিসেবে দলের ভরসা শাদাব, ফাহিম আশরাফ, মোহাম্মাদ নাওয়াজ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম।
শেষ মুর্হূতে এশিয়া কাপের দলে পরিবর্তন আনে পাকিস্তান। তায়েব তাহিরের পরিবর্তে সৌদ শাকিলকে দলে নেয় তারা। দেশের হয়ে ৫টি ওয়ানডেতে মাত্র ৭৬ রান করলেও, টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ৭ ম্যাচেই দু’টি সেঞ্চুরি ও ৬টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৮৭৫ রান তুলেন তিনি।
এদিকে গত মে’তে এসিসি প্রিমিয়ার কাপের ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে প্রথমবারের মত এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নেপাল। ২০১৮ সালে ওয়ানডে মর্যাদা পাবার পর এখন অবধি ৫৭টি ম্যাচ খেলেছে তারা। এরমধ্যে ৩০টিতে জয় ও ২৫টিতে হার রয়েছে। ১টি করে ম্যাচ টাই ও পরিত্যক্ত হয় নেপালের।
২০১৯ সালের বিশ^কাপের পর চতুর্থ সর্বোচ্চ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে নেপাল। ৫১টি ম্যাচে ২৭টিতে জয় ও ২২টিতে হেরেছে তারা। এসময় ৩১টি ম্যাচ খেলেছে পাকিস্তান।
এবারই প্রথম পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে নেপাল। এখন পর্যন্ত আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলগুলোর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছে হিমালয়ের  পাদদেশের দলটি।   
নেপাল ক্রিকেটের বড় তারকা স্পিনার সন্দ্বীপ লামিচানে। এশিয়া কাপের কারনে সদ্য লামিচানের বিরুদ্ধে চলমান ধর্ষণ মামলা স্থগিত করা হয়। গত রোববার মামলার শুনানি থাকার কারনে মূল দলের সাথে পাকিস্তান যেতে পারেননি তিনি। দেরিতে হলেও ২৮ আগস্ট একাকী দলের সাথে যোগ দেন তিনি।
গেল বছর মুলতানের এই ভেন্যুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ২৫০এর বেশি রান উঠেছে। এরমধ্যে প্রথম ওয়ানডেতে ৩০৬ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। ঐ সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় শীর্ষ তিনস্থানই দখলে রাখেন তিন স্পিনার- পাকিস্তানের নাওয়াজ-শাদাব ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল হোসেন। ধারনা করা হচ্ছে, মুলতানের উইকেট থেকে সুবিধা পাবে স্পিনাররাই।
পাকিস্তান-নেপালের সাথে ‘এ’ গ্রুপ আছে ভারত। ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান।
পাকিস্তান দল : বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব  খান, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সাউদ শাকিল, ফখর জামান, আবদুল্লাহ শফিক, ইমাম-উল-হাক, সাউদ শাকিল, সালমান আলি আঘা, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ নাওয়াজ, উসামা মীর, হারিস রউফ, নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ হারিস, ফাহিম আশরাফ, মোহাম্মদ ওয়াসিম।
নেপাল দল : রোহিত পাউডেল (অধিনায়ক), আসিফ শেখ, কুশল ভুর্টেল, ললিত রাজবানশি, ভিম শারকি, কুশাল মাল্লা, দিপেন্দ্র সিং আইরি, সন্দীপ লামিচান, কারান কেসি, গুলশান ঝা, সোমপাল কামি, আরিফ শেখ, প্রতিশ জিসি, কিশোর মাহাতো, সুন্দীপ জোরা, অর্জুন সৌদ ও শ্যাম ধাকাল।