বাসস
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:৩৭
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:১৬

ফেলিক্স-ক্যান্সেলোর গোলে বেটিসকে উড়িয়ে দিল বার্সেলোনা

বার্সেলোনা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : দলে নতুন আসা দুই পর্তুগীজ তারকা হুয়াও ফেলিক্স ও হুয়াও ক্যান্সেলোর গোলে শনিবার লা লিগায় রিয়াল বেটিসকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বার্সেলোনা। কাতালান জায়ান্টদের হয়ে এটাই দুই পর্তুগীজের প্রথম গোল।
ফরোয়ার্ড ফেলিক্সের ৎুকস  গোলে বার্সেলোনা এগিয়ে যায়। এরপর একে একে স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন রবার্ট লিওয়ানদোস্কি, ফেরান তোরেস, রাফিনহা ও ক্যান্সেলো।
বড় এই জয়ে বার্সেলোনা রিয়াল মাদ্রিদের থেকে এক পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে।
ঘরের মাঠে কাল বার্সেলোনা সবদিক থেকেই ছিল অপ্রতিরোধ্য, যা গত মৌসুমে একেবারেই দেখা যায়নি। যদিও মৌসুম শেষে লিগ শিরোপা ঠিকই ঘরে তুলেছিল কাতালান জায়ান্টরা। মঙ্গলবার রয়্যাল এ্যান্টার্পের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে বার্সা। তার আগে বড় এই জয়ে জাভির শিষ্যদের আত্মবিশ্বাস নি:সন্দেহে বেড়েছে। 
পুরো দলের গোছানো পারফরমেন্সে আলাদা করে ফেলিক্সের কথা করতেই হয়। ট্রান্সফারের শেষ দিনে পর্তুগীজ দুই তারকাকে ধারে দলে ভিড়িয়ে জাভি যে কোন ভুল করেননি তা সহজেই অনুমেয়। ফেলিক্স ও ক্যান্সেলো উভয়ই কাল বার্সেলোনার জার্সি গায়ে প্রথমবারের মত মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন। উভয়ই খুব দ্রুত স্বাগতিক সমর্থকদের মন জয় করে নেন। 
ইউরো ক্লাব রেকর্ড ১২৬ মিলিয়ন ইউরোতে  ২০১৯ সালে বেনফিকা থেকে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদে খেলতে  গিয়েছিলেন ফেলিক্স। কিন্তু ধারাবাহিক ফর্মের অভাবে গত মৌসুমে ধারে চেলসিতে খেলতে যান। এরপর বার্সেলোনায় আসতে পেরে নিজের ও পরিবারের স্বস্তির কথা জানিয়েছেন ফেলিক্স। রক্ষনভাগে চারজন নিয়ে খেলেও প্রতিরোধ গড়তে পারেনি বেটিস। বার্সেলোনার আক্রমনাত্মক কৌশলের কাছে বারবার পরাস্ত হতে হয়েছে। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার লুইজ হেনরিক ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির বেটিসকে অবশ্য শুরুটা ভালই উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয় বার্সা। গ্রীষ্মে বার্সেলোনায় আসা তিন খেলোয়াড়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২৫ মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। দারুন এক ট্যাকলে বল নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে বাড়িয়ে দেন ক্যান্সেলো, সেই পাস থেকে ওরিয়ল রোমেউর ক্রসে ফেলিক্স গোলরক্ষক রুই সিলভাকে পরাস্ত করেন। আন্দ্রেস ক্রিস্টিনসেনের পাস থেকে লিওয়ানদোস্কি ৩২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। এই গোলের পিছনে সহায়তা ছিল ফেলিক্সের। উইলিয়ান হোসের একটি শট দারুন দক্ষতায় রুখেন দেন মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান। ইসকোর পাস থেকে এই ব্রাজিলিয়ন ফরোয়ার্ড ডি বক্সের ভিতর থেকেও বেটিসকে গোল উপহার দিতে পারেননি। বিরতির ঠিক আগে কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ফেলিক্সকে হতাশ করেন সিলভা। 
টিনএজার লামিস ইয়ামালের জায়গায় মূল দলে খেলতে নামা তোরেস লো ফ্রি-কিকে ৬২ মিনিটে দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন। ২০২১ সালের মে মাসে লিওনেল মেসি সর্বশেষ বার্সেলোনার জার্সিতে ফ্রি-কিকে গোল করেছিলেন। এই গোলের পরপরই তোরেসের বদলী হিসেবে রাফিনহাকে মাঠে নামান জাভি। মাঠে নেমেই কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন রাফিনহা। ডি বক্সের বাইরে থেকে জোড়ালো শটে তিনি স্কোরশিটে নাম লেখান। ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ধারে খেলতে আসা ডিফেন্ডার ক্যান্সেলো একক প্রচেষ্টায় দলের হয়ে শেষ গোলটি করেছেন। বার্সার সাবেক লেফট-ব্যাক হুয়ান মিরান্ডাকে কাটিয়ে দুর্দান্ত এক গোল উপহার দেন সমর্থকদের। 
ম্যাচ শেষে  পেলেগ্রিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই এই ধরনের পরাজয় সবসময় হতাশার। শারিরীক ভাবে তো বটেই মানসিক ভাবেও বড় পরাজয়ে পুরো দল মুষড়ে পড়ে। আমরা যে কৌশলে খেলেছি তাতে দুই গোল হজমের পর ঝুঁকি নিয়েই বাকি ম্যাচ খেলতে হয়।’
নতুন চেহারার বার্সেলোনা ইউরোপীয়ান আসরে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে কিনা তা সময়ই বলে দিবে। তবে আপাতত যে আক্রমনাত্মক কৌশল তারা দেখিয়েছে তাতে দলের সামনে এগিয়ে যাবার সম্ভাবনা অনেকটা উজ্জ্বল হয়েছে।