বাসস
  ১৯ জুন ২০২৪, ১৮:১৫

সুপার এইটে কাল মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-আফগানিস্তান

বার্বাডোজ, ১৯ জুন ২০২৪ (বাসস) : জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের সুপার এইট পর্ব শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও আফগানিস্তান। গ্রুপ পর্বের দুর্দান্ত পারফরমেন্স সুপার এইটে অব্যাহত রাখতে মরিয়া দু’দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজে সুপার এইটে গ্রুপ-১এর ভারত-আফগানিস্তানের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে।
গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচের সবগুলোতেই জিতেছে ভারত। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় দিয়ে বিশ^কাপ মিশন শুরু করে ভারত। পরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৯ রানের পুঁজি নিয়েও ৬ রানের রোমাঞ্চকর জয় তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া।
প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর নিজেদের তৃতীয় খেলায় যুক্তরাষ্ট্রকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করে ভারত। কানাডার বিপক্ষে ভারতের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। এতে ৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সুপার এইট নিশ্চিত করে টিম ইন্ডিয়া।
গ্রুপ পর্বে ব্যাট-বল হাতে  পারফরমেন্স করেছে ভারত। বিশেষভাবে বোলারদের পারফরমেন্স ছিলো চোখে পড়ার মত। প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ৯৬ রানে গুটিয়ে দেয় ভারতীয় বোলাররা। পরের ম্যাচে পাকিস্তানকে ১২০ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়ে, বাবর-রিজওয়ানদের ১১৩ রানে আটকে দেয় জসপ্রিত বুমরাহ-হার্ডিক পান্ডিয়ারা।
বোলাররা ভালো করলেও, ব্যাটিংয়ে ভারতের একমাত্র চিন্তার কারন বিরাট কোহলির ফর্ম। তিন ইনিংসে কোহলির রান যথাক্রমে- ১,৪ ও ০। তবে দলের সেরা ব্যাটারের এমন ফর্ম নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, ‘কোহলির ফর্ম নিয়ে আমাদের কোন চিন্তা নেই। সে দলের সেরা ব্যাটার। দ্রুতই  রানে ফিরবে সে। অতীতে নিজেকে প্রমান করেছে এবং দলের জন্য বড় অবদান রেখেছে কোহলি।’
গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়কের রহস্যময় উইকেটে খেলেছে ভারত। এবার সুপার এইটের ম্যাচগুলো খেলবে  ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে খেলতে।  আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে চারদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বার্বাডোজে পৌঁছায় ভারতীয় দল। সেখানকার উইকেট এবং আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে তারা।
সুপার এইট মিশন শুরুর আগে ভারত অধিনায়ক রোহিত বলেন, ‘আমরা নিজেদের শক্তি এবং দক্ষতার জায়গাগুলোয় গুরুত্ব দিচ্ছি। দল হিসাবে আমরা যা চাই, সেটাা মাঠে নিশ্চিত করতে চাই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আমাদের খেলার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। দলের সকলে জানে, কার কি করা উচিত ও কাকে কি করতে হবে। দলের সবাই সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রত্যেকেই  বিশেষ কিছু করতে চায়। সবাই গুরুত্ব দিয়ে অনুশীলন করছে। দক্ষতার জায়গাগুলো আরও মজবুত করার চেষ্টা করছি আমরা।’
এ দিকে, গ্রুপ পর্বে দারুন ছন্দে ছিলো আফগানিস্তানও। উগান্ডা, নিউজিল্যান্ড ও পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ জিতে সহজেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছিলো আফগানরা। শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরে গ্রুপ রানার্স-আপ হয় আফগানিস্তান।
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মে আছে আফগানিস্তানের ওপেনিং জুটি। উগান্ডা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শতরানের জুটি গড়েন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। এখন পর্যন্ত ৪ ইনিংসে গুরবাজ ১৬৭ ও জাদরান ১৫২ রান করেছেন। চলতি বিশ^কাপের এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও গুরবাজ।
বোলিংয়েও সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছেন আফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকি। ৪ ইনিংসে ৮০ রানে ১২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। উগান্ডার বিপক্ষে ৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন ফারুকি।
গ্রুপ পর্বের পারফরমেন্স সুপার এইটেও ধরে রাখতে চায় আফগানিস্তান। দলের অধিনায়ক রশিদ খান বলেন, ‘গ্রুপ পর্বে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আশা করি সতীর্থরা নিজেদের সেরাটা ধরে রাখবে এবং সুপার এইটেও ভালো খেলবে। সুপার এইটে আমাদের লক্ষ্য ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলা এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। সব ম্যাচেই জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠে নামবো।’
শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে সতর্ক আফগানিস্তান। তিনি বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। বিশ^ ক্রিকেটে অন্যতম সেরা দল তারা। এজন্য আমাদের বেশ কিছু পরিকল্পনা আছে। পরিকল্পনাগুলো মাঠে বাস্তবায়ন করতে চাই।’
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে আটবার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও আফগানিস্তান। এরমধ্যে ভারত জয় ৭বার। ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। পরিত্যক্ত হওয়া ম্যাচটি ছিলো এশিয়ান গেমসে। বিশ^কাপের মঞ্চে তিনবার দেখা হয়েছে, তিনবার হেরেছে আফগানরা।
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া, যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পান্থ (উইকেটরক্ষক), সঞ্জু স্যামসন, শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্রা চাহাল, আর্শদীপ সিং, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ।
আফগানিস্তান দল : রশিদ খান (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, করিম জানাত, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ ইশাক, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, নাঙ্গিয়াল খারোতি, নুর আহমেদ, নাভিন উল হক, ফজলহক ফারুকি, ফরিদ মালিক ও হজরতুল্লাহ জাজাই।