বাসস
  ০৯ জুলাই ২০২৪, ১৬:০২

ইংল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস সেমিফাইনাল ঘিড়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লড়াই

ডর্টমুন্ড, ৯ জুলাই ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ১৯৬৬ সালের ফিফা  বিশ^কাপের পর আর কোন বড় শিরোপা পাওয়া হয়নি ইংল্যান্ডের। অন্যদিকে ১৯৮৮ সালে ইউরো শিরোপা পাওয়া নেদারল্যান্ডস ৩৬ বছর ধরে শিরোপা খরায় ভুগছে। দুই দলের মধ্যকার আগামীকালকের সেমিফাইনাল সে কারনেই হয়ে উঠেছে মর্যাদার লড়াই।
আগামী ১৪ জুলাই বার্লিনে এবারের আসরের ফাইনালে কে খেলবে তার নির্ধারনের জন্য শেষ চারের লড়াইকে ছাপিয়ে গেছে আরো কিছু লড়াই :
কেন বনাম ভন ডাইক :
ইংলশি স্ট্রাইকার হ্যারি কেন এখনো পর্যন্ত ইউরোর এবারের আসরে নিজেকে প্রমান করতে পারেননি। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জার্মান লিগে খেলার অভিজ্ঞতাও তিনি কাজে লাগাতে পারছেন না। অথচ প্রথম মৌসুমে তিনি বায়ার্নের হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ৩৬ গোল করেছেন।
পিঠের ইনজুরি নিয়ে মৌসুম শেষ করার পর কেন কোনভাবেই আর শতভাগ ফিটনেস ফিরে পাননি। যা ইউরোতে তার পারফরমেন্সে দৃশ্যমান। কাল সেমিফাইনালের ম্যাচে তাকে লিভারপুলের ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক বিপক্ষে লড়তে হবে। দীর্ঘদেহী এই ডাচম্যানও নিজেকে প্রমানে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তারপরও পুরো দলের মত নক আউট পর্বে দারুন খেলেছেন ফন ডাইক।
ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও অবশ্য তার দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকারকে যতটা সম্ভব মাঠে রাখতে চাচ্ছেন। আগের ম্যাচগুলোতেও ইংলিশ বস সেটাই করেছেন। তবে ডাচ রক্ষনভাগ ভেঙ্গে কেন এবার কতটা এগিয়ে যেতে পারবেন তা সময়ই বলে দিবে।
ট্রিপিয়ার বনাম ডামফ্রাইস :
ইংলিশ রক্ষনভাগের বামদিকে কিয়েরান ট্রিপিয়ারকে খেলানোর সাউথগেটের সিদ্ধান্তেÍ সমালোচকদের সমারেঅচনা চলছেই। তাদের দাবী  এতে করে ইংল্যান্ড নাকি অতি মাত্রায় রক্ষনাত্মক কৌশল অবলম্বন করেছে।
তবে এটাও ঠিক টিপ্রিয়ারের উপস্থিতি প্রমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হতে যাচ্ছে আগামীকাল নেদাল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। ডাচ রাইট-ব্যাক ডেনজেল ডামফ্রাইস তিন বছর আগে ইউরো ২০২০’এ যেভাবে নিজেকে এগিয়ে নিয়েছিলেন এবারের আসরেও তার একটুও ব্যতিক্রম হয়নি। মাঠে সবসময়ই উজ্জীবিত ডামফ্রাইস তুরষ্কের বিপক্ষে বিপদজনক এত ক্রস করে কোয়ার্টার ফাইনালে দলকে জয় উপহার দিয়েছিলেন।
ট্রিপিয়ারের প্রথম কাজ হবে কাল ডামফ্রাইসকে পুরোপুরি অকার্যকর করে দেয়া, যা কোনভাবেই সহজ কাজ হবে না।
ডাচ লেফট বনাম ইংল্যান্ড রাইট :
লিভারপুল উইঙ্গার কোডি গাকপো ইউরোতে এখনো পর্যন্ত তিন গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। নেদারল্যান্ডসের আক্রমনভাগে তিনিই মূল হুমকি। এ পর্যন্ত ডাচদের প্রায় সবকটি বিপদজনক আক্রমনে গাকপোর সংশ্লিষ্টতা ছিল। কিন্তু ইংলিশ রাইট-ব্যাক কাউল ওয়াকারও কম যাননি। গাকপোকে আটাকাতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন। বিশেষ করে গাকপোর গতিকে থামানোর জন্য ম্যানচেস্টার সিটির এই ডিফেন্ডার একাই যথেষ্ঠ বলে সাউথগেট বিশ^াস করেন। নেদারল্যান্ডসের লেফট সাইডের হুমকিকে নষ্ট করার করা বুকায়ো সাকাকে এক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য খেলাতে পারেন ইংলিশ বস।
বেলিংহাম বনাম শুটেন ও রেইন্ডার্স :
ইংল্যান্ড ও রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার জুড বেলিংগাম এখনো তার সেরা ফর্ম দেখাতে না পারলেও ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালের পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ২১ বছর বয়সী বেলিংহামের নাটকীয় ওভারহেড কিকে স্লোভাকিয়ার শেষ ষোল থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়।
নেদারল্যান্ডস মধ্যমাঠে টিয়ানি রেইন্ডার্স ও জার্ডি শুটেনকে দিয়ে বেলিংহামকে বাক্সবন্দী করার চেষ্টা করবে। ডাচ এই জুটি একসাথে দারুণ ফর্মে রয়েছে। কোচ রোনাল্ড কোম্যান তাদের জুটি ভেঙ্গে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে জো ভারম্যানকে খেলিয়ে পরাজয়ের মুখে পড়েছিলেন।
সাউথগেট বনাম কোম্যান :
সেমিফাইনালে ফলাফলের উপর দুই কোচের খেলোয়াড় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত একটি প্রভাব ফেলতে পারে। শেষ আটের নিজ নিজ ম্যাচে যা প্রমান হয়েছে।
সাউথগেট লুক শ’কে মাঠে নামিয়ে সুইসদের বিপক্ষে ১০ মিনিটের মধ্যে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান। এছাড়া ইভান টনি, ট্রেন্ট আলেক্সান্দার আর্নল্ড ও কোল পালরমারকে বদলী বেঞ্চ থেকে একসাথে উঠিয়ে আনেন, যাদের গোলে ইংল্যান্ড পেনাল্টিতে ৫-৩ গোলের জয় পায়।
অন্যদিকে ১৯৮৮ ইউরো জয়ী নেদারল্যান্ডস দলের অধিনায়ক কোম্যান তুরষ্কের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ওট উইগর্স্টকে মাঠে নামিয়ে ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।