বাসস
  ০৯ জুলাই ২০২৪, ১৬:০৬

নেদারল্যান্ডস বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার পাঁচটি স্মরণীয় ম্যাচ

ডর্টমুন্ড, ৯ জুলাই ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : আগামীকাল ডর্টমুন্ডে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস মুখোমুখি হবে। দুই দলেরই লক্ষ্য আগামী ১৪ জুলাই বার্লিনের ফাইনালে জায়গা করে নেয়া।
একটা সময় ছিল যখন ইউরোপীয়ান ফুটবলের এই দুই পরাশক্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়মিত একে অপরের মোকাবেলা করতো। কিন্তু এই শতকে আগামীকালকের ম্যাচটি এই দুই দলের মধ্যকার মাত্র দ্বিতীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ হতে যাচ্ছে।
ইংল্যান্ড বনাম নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার অতীতের পাঁচটি স্মরণীয় ম্যাচ :
ফন বাস্তেনের হ্যাটট্রিক :
১৯৮৮ ইউরোপয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা নেদারল্যান্ডসের প্রথম ও একমাত্র বৈশি^ক কোন টুর্ণামেন্টের শিরোপা। ফাইনালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে এই ম্যাচটি সব সময়ই সাবেক তারকা মার্কো ফন বাস্তেনের দুর্দান্ত গোলের জন্য ডাচদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এই আসরে গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ড সবচেয়ে কম পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নিয়েছিল। একমাত্র বড় টুর্নামেন্ট যেখানে ইংল্যান্ড তাদের প্রতিটি ম্যাচেই পরাজিত হয়েছিল। ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস উভয় দলই গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পরাজিত হয়েছিল। এরপর ডাসেলডর্ফে দ্বিতীয় ম্যাচে যখন দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হয় তখন ফন বাস্তেনের হ্যাটট্রিকে ডাচরা বড় জয় পায়। ইংল্যান্ড সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। গ্যারি লিনেকার ও গ্লেন হুডল শট পোস্টে লাগান। ফন বাস্তেনের প্রথম গোলটি ব্রায়ান রবসনের সমতায় ফিকে হয়ে যায়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আরো দুই গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণের পাশাপাশি দলকে ৩-১ গোলের জয় উপহার দেন ফন বাস্তেন।
ইতালির ৯০’র বিশ^কাপ :
এই দুই দল আবারো ইতালিতে অনুষ্টিত ১৯৯০ বিশ^কাপে একই গ্রুপে খেলার সুযোগ পায়। ১৯৮৮ ইউরোতে খেলা বেশীরভাগ খেলোয়াড়ই আবারো একে অপরের মুখোমুখি হয়। যাদের মধ্যে ছিলেন বর্তমান কোচ রোনাল্ড কোম্যান। দুই দলই গ্রুপ পর্বের তাদের প্রথম ম্যাচটি ড্র করে। ইংল্যান্ড আয়ারল্যান্ডের সাথে ও নেদারল্যান্ডসের সাথে পয়েন্ট হারানোর মধ্য দিয়ে আসর শুরু করে। ইংল্যান্ড এবার ফন বাস্তেনকে আটকে দিয়ে ম্যাচটি গোলশুন্য ড্র করতে সক্ষম হয়। ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল। ডাচরা শেষ ষোলতে পশ্চিম জার্মানির কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নেয়।
৯৪’ যুক্তরাষ্ট্র বিশ^কাপ :
১৯৭০ সালে একবারই ইংল্যান্ড বিশ^কাপের মূল পর্বে খেলতে ব্যর্থ হয়েছিল। আর এরপর ৯৪ যুক্তরাষ্ট্র বিশ^কাপে বাছাইপর্বে নেদারল্যান্ডস তাদের বিদায় করে।
গ্রাহাম টেইলরের ইংল্যান্ড বাছাইপর্বে মোটেই নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। গ্রুপের শীর্ষ দল নরওয়ের বিপক্ষে তারা মাত্র এক পয়েন্ট সংগ্রহ করে। ওয়েম্বলিতে ঘরের মাঠে ডাচদের বিপক্ষে দুই গোলের ব্যবধানে জিতলেও রটারডামে ফিরতি ম্যাচটি ইংল্যান্ডের ভাগ্য নির্ধারিত ম্যাচে পরিনত হয়। পল গ্যাসকোয়েন নিষেধাজ্ঞায় থাকায় কোম্যানের ফ্রি-কিকে ইংল্যান্ড ঘন্টাখানেকের মধ্যে পিছিয়ে পড়ে। এরপর ডেনিস বার্গক্যাম্পের গোলে ডাচদের জয় নিশ্চিত হয়।
শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড সান মারিনোকে পরাজিত করে। কিন্তু ডাচ পোল্যান্ডকে হারিয়ে বাছাইপর্বের বাঁধা পেরুতে সক্ষম হয়। টেইলরকে নিয়ে তখন এতটাই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল শেষ পর্যন্ত তিনি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। ডাচরা সেবার বিশ^কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল।
ইউরো ৯৬ :
দুই দল আবারো ইউরো ৯৬ চ্যাম্পিয়শীপে গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হয়। উভয় দলই ওয়েম্বলির ম্যাচের আগে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট সংগ্রহ করে। এ্যালান শিয়েরার পেনাল্টি থেকে গোল করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেবার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আরো এক গোল করেন। এই ম্যাচে টেডি শেরিংহ্যাম জোড়া গোল করেছেন। প্যাট্রিক ক্লুইভার্ট ডাচদের হয়ে শেষভাগে এক গোল পরিশোধ করলে ইংল্যান্ড ৪-১ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ইংল্যান্ডের বর্তমান কোচ গ্যারেথ সাউথগেট এই দলে রক্ষনভাগে খেলেছেন। ইংল্যান্ড গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে ও স্কটল্যান্ডকে পিছনে ফেলে নেদারল্যান্ডস দ্বিতীয় দল হিসেবে পরের রাউন্ডে যায়।
নেশন্স লিগের সেমিফাইনাল :
ইউরো ৯৬’র পর থেকে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ম্যাচে ২০১৯ সালের উয়েফা নেশন্স লিগের প্রথম আসরের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। ঐ দলে সাউথগেট ইংল্যান্ডের ম্যানেজার ছিলেন। কোম্যান প্রথম মেয়াদে ডাচদের কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। মার্কাশ রাশফোর্ড পেনাল্টি থেকে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন। মাথিস ডি লিটের গোলে ম্যাচটি সমতায় ফেরার পর ফলাফল নির্ধারনে অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হয়। কাইল ওয়াকারের আত্মঘাতি গোলে ডাচরা লিড নেয়। এরপর কুইন্সি প্রোমসের আরো এক গোলে নেদারল্যান্ডস ৩-১ ব্যবধানে জয়ী হয়ে ফাইনালের টিকেট পায়। ফাইনালে পর্তুগালের কাছে পরাজিত হয়ে নেদারল্যান্ডসকে হতাশ হতে হয়।