বাসস
  ০৭ মার্চ ২০২৩, ১৪:৪৬

শক্তিশালী বায়ার্নের বিপক্ষে পিএসজির টিকে থাকার লড়াই

বার্লিন, ৭ মার্চ, ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর ফিরতি ম্যাচে আগামীকাল পিএসজিকে আতিথ্য দিবে বায়ার্ন মিউনিখ। দলীয় শক্তি বিচারে প্রথমবারের মত সাদিও মানে ও মাথিস ডি লিটের মত তারকার অন্তর্ভূক্তি নি:সন্দেহে বায়ার্নকে কিছুই হলেও এগিয়ে রাখবে।  
বুন্দেসলিগায় টানা ১০টি শিরোপা জয় করা বায়ার্ন গত গ্রীষ্মে ইউরোপীয়ান সাফল্যকে মাথায় রেখেই এই দুই তারকাকে দলে নিয়েছিল। প্রথম লেগে পার্ক ডি প্রিন্সেসে সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড কিংসলে কোম্যানের দ্বিতীয়ার্ধের গোলে বায়ার্নের জয় নিশ্চিত হয়েছিল। ২০১৯-২০ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে এই একই স্কোরলাইন ও একই গোলদাতার মাধ্যমে বায়ার্ন শিরোপা জয় করেছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে পথে এখন শুধুমাত্র বায়ার্নকে হার এড়াতে হবে। 
কিন্তু পিএসজি বস ক্রিস্টোফে গাল্টিয়ারের মত বায়ার্নের ম্যানেজার জুলিয়ান নাগলসম্যানও জানেন ইউরোপীয়ান আসর থেকে বিদায়ের অর্থ হলো ঘরোয়া মৌসুমের সব ফলাফলই ম্লান হয়ে যাওয়া। নাগলসম্যান বলেছেন শনিবার স্টুটগার্টের বিপক্ষে দলের কষ্টার্জিত জয়টা তাদের প্রকৃত চেহারা নয়। পিএসজির বিরুদ্ধে তার দল যে ধরনের মানসিকতা দেখিয়েছে সেটাই তারা পুরো মৌসুমে বারবার করে দেখাতে চায়। 
ইউরোপ থেকে একটু আগে ভাগে বিদায় কোনভাবেই বায়ার্ন এবার আর মেনে নিবে না। যদিও প্রতিপক্ষ হিসেবে পিএসজির সক্ষমতায় বিবেচনায় আনতে হচ্ছে। গত ১০ বছরে মাত্র একবারই কোয়ার্টার ফাইনালে আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিয়েছিল বেভারিয়ান্সরা। এক দশকের মধ্যে তারা দুইবার ইউরোপীয়ান কাপ ঘরে নিয়েছে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের বিরুদ্ধে তাদের সেই একমাত্র বিদায়টি ঘটেছিল। ঐ একই মৌসুমে বায়ার্ন লিগ ও কাপ শিরোপা জয় করেছিল। কিন্তু তৎকালীন ম্যানেজার নিকো কোভাচের অধীনে ইউরোপে সাফল্য না পাওয়ায় ঘরোয়া দুই আসরের শিরোপার আনন্দ ম্লান হয়ে গিয়েছিল। 
স্টুটগার্টের সাথে ২-১ গোলের জয়েল পর নাগলেসম্যান ড্রেসিং রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে শিষ্যদের একটাই বার্তা দিয়েছিলেন প্যারিসের জায়ান্টদেও বিপক্ষে তাদের জয়ের বিকল্প নেই। ৩৫ বছর বয়সী নাগলেসম্যান এ সম্পর্কে স্কাই স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘আমি তাদের বলেছিলাম বুধবার আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ আছে। আমাদের নিজেদের প্রমান করতে হবে। তারা এমন একটি দল যাদের পরাজিত করা কঠিন। ইউরোপে অন্যতম সেরা দল পিএসজি।’
এই মুহূর্তে দলের সব নজড় রয়েছে মানের উপর। ইউরোপীয়ান আসরে যার নিয়মিত পারফর্ম করার অভ্যাস রয়েছে। লিভারপুলের হয়ে তার গোলে বায়ার্নের বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল। ২০২২ সালের গ্রীষ্মে লিভারপুল থেকে মিউনিখে এসেছিলেন মানে। আগের পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে তিনটিতেই তিনি খেলেছেন। এর মধ্যে একটিতে জয়ী হয়েছে, আরেকটিতে গোল পেয়েছেন। গত চার মাসের মধ্যে প্রথমবারের মত বুধবারের ম্যাচে তার মূল একাদশে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। পায়ের ইনজুরির কারনে তিনি দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন, সেনেগালের হয়ে বিশ^কাপেও খেলতে পারেননি। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরার পর দুটি লিগ ম্যাচে বদলী বেঞ্চে থেকে খেলেছেন। নিজের সেরা ফর্ম ফিরে পেতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। শনিবারের ম্যাচে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ৩০ মিনিট মানে মাঠে ঠিলেন। নাগলসম্যান বলেন স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পেতে তাকে আরো কিছুটা সময় দিতে হবে। আশা করা হচ্ছে কাল তিনি মূল দলেই খেলবেন। 
এদিকে মানের পিছনে রক্ষনভাগের কেন্দ্রবিন্দুতে ডি লিটের উপরই মুল ভরসা করে আছেন নাগলসম্যান। পিএসজির লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে আটকাতে ডি লিটের বাড়তি নজড় সবসময়ই থাকবে। জুভেন্টাস থেকে জার্মানীতে আসার পর মানের থেকে কিছুটা বেশী ম্যাচ খেলেনে ডি লিট। যদিও প্রথমদিকে বদলী বেঞ্চেই বেশী সময় কাটিয়েছেন। ফরাসি তারকা লুকাস হার্নান্দেজ কাতারে পেশীর ইনজুরিতে পড়ায় ডি লিটের দরজা খুলে যায়। শনিবার ডি লিটও বায়ার্নের হয়ে এবারের মৌসুমের সেরা ম্যাচ খেলেছেন। লাইনের উপর থেকে গোল ক্লিয়ার করেছেন। ইনজুরির কারনে নেইমার কালকের ম্যাচে খেলতে না পারলেও ডাচ এই ডিফেন্ডার প্যারিসের বাকি দুই বিপদজনক স্ট্রাইকার এমবাপ্পে ও মেসির দিকে বাড়তি নজর রাখার প্রতি সতর্ক করেছেন।