বাসস
  ০৯ মার্চ ২০২৩, ১৩:২৭

পিএসজিকে বিদায় করে শেষ আট নিশ্চিত করলো বায়ার্ন

মিউনিখ, ৯ মার্চ ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : উয়েফা  চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে  প্যারিস সেইন্ট জার্মেইকে(পিএসজি)স  বিদায় করে দিয়েছে  বায়ার্ন মিউনিখ। বুধবার শেষ ষোলর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে পিএসজিকে ২-০ গোলে পরাজিত করে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। 
এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোটিং তার সাবেক ক্লাব পিএসজির বিরুদ্ধে ৬১ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন। এরপর ৮৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করনে বদলী খেলোয়াড় সার্জি গ্যানাব্রি। ২০২০ সালে লিসবনের ফাইনালে বায়ার্নের কাছে ১-০ গোলের পরাজয়ের ম্যাচটিতে চুপো-মোটিং পিএসজির হয়ে খেলেছিলেন। 
১৫ বছরে ১৩বারের মত বায়ার্ন শেষ আটে খেলার কৃতিত্ব অর্জন করলো। অন্যদিকে ইউরোপীয়ান শিরোপা জয়ে অন্যতম ফেবারিট হিসেবে প্রথমবারের মত বিবেচিত পিএসজিকে আরো একবার ট্রফির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। 
বায়ার্ন কোচ জুলিয়ান নাগলসম্যান বলেছেন পিএসজির কঠিন প্রতিরোধের বাঁধা পেরুতে তার দলের সমর্থকদের সমর্থনের প্রয়োজন ছিল, ‘দ্বিতীয়ার্ধে আমরা প্রতিপক্ষের তুলনায় ভাল খেলেছি। এই জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল।’ 
মিউনিখের আলিয়াঁজ এ্যারেনাতে প্রথমার্ধে পিএসজিই দাপট দেখিয়েছে। মাথিস ডি লিট গোল লাইনের উপর থেকে একটি বল ক্লিয়ার না করলে তখনই হয়তো এগিয়ে যেতে পারতো পিএসজি। কিন্তু এছাড়া কিলিয়ান এমবাপ্পে, লিওনেল মেসিরা দলের পরাজয় এড়াতে তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারেনি।  
বায়ার্ন অধিনায়ক থমাস মুলার বলেছেন, ‘আজ ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল। সত্যি কথা বলতে কি ফুটবলে এগিয়ে যেতে হলে ভাগ্যের সহায়তার প্রয়োজন হয়। আমরা যদি ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়তাম তবে দল কিভাবে খেলতো সেটা বলা যায়না।’
পিএসজির প্রথম লেগে ১-০ গোলের পরাজয়ের ম্যাচটিতে এমবাপ্পে ইনজুরির কারনে বদলী হিসেবে মাঠে নামলেও কাল পরিপূর্ণ ফিটনেস নিয়েই মূল একাদশে খেলেছেন। কিন্তু তারপরও দলের জন্য কিছু করে দেখাতে পারেননি। গোঁড়ালির ইনজুরির কারনে পুরো মৌসুমের জন্যই ছিটকে গেছেন নেইমার। এছাড়া কালকের ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েছেন দুই ডিফেন্ডার মারকুইনহোস ও নর্ডি মুকিয়েলে। সুযোগ তৈরী করার পরেও দলের এই ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কোচ ক্রিস্টোফে গাল্টিয়ার ।  ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘ড্রেসিং রুমে দারুন হতাশা বিরাজ করছিল। আমরা কেউই এই ম্যাচের পুনরাবৃত্তি চাইনা, সবকিছু পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্যারিস মিডফিল্ডার ভিটিনহা প্রথমার্ধে সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেছেন। বায়ার্ন গোলরক্ষক ইয়ান সোমারকে একা পেয়েও তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। ভিটিনহা পোস্টে শট নিলেও লাইনের উপর থেকে তা ক্লিয়ার করেন ডি লিট। নাগলসম্যান ডি লিট সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটা সত্যিই অসাধারণ যে দলকে প্রতিরোধ করতে সে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই ধরনের প্রচেষ্টা বিশ্বের ১০ জন ডিফেন্ডারের মধ্যে ৯ জনই ব্যর্থ হতো।’
বিরতির ১০ মিনিট আগে পাঁজরের হাড়ে আঘাত লাগায় মাঠ ত্যাগ করেন পিএসজির অধিনায়ক মারকুইনহোস। তার পরিবর্তে মাঠে নামেন সদ্য পেশীর ইনজুরি থেকে দলে ফরা মুকিয়েলে। কিন্তু তিনিও বেশীক্ষন মাঠে থাকতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়ার্ধে গাল্টিয়ার ১৭ বছর বয়সী সেন্টার-ব্যাক এল চাডাইলে বিটশিয়াবুকে প্রথমবারের মত মাঠে নামাতে বাধ্য হন। 
বিরতি পর অনেকটা আগ্রাসী হয়ে মাঠে নামে বায়ার্ন। জসুয়া কিমিচের শট ফিরে এলে  ফিরতি শটে গোল করতে ব্যর্থ হন চুপো-মোটিং। ৫২ মিনিটে ক্যামেরুনের এই স্ট্রাইকার আবারো সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু জামাল মুসিয়ালার ক্রস থেকে তার হেডের আগে মুলারের অফসাইডের কারনে প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ হয়। কিন্তু ৬১ মিনিটে আর কোন ভুল করেননি চুপো-মোটিং। ভেরাত্তির কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে মুলার চিপ করে দেন। লিও গোরেৎকা  সেই বল বাড়িয়ে দেন চুপো-মোটিংয়ের দিকে। দারুন এক ফিনিশিংয়ে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন এই ফরোয়ার্ড। 
চার মিনিট পর সেন্টার-ব্যাক সার্জিও রামোস সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তার শক্তিশালী হেড রুখে দেন সোমার। ৮৯ মিনিটে হুয়াও ক্যান্সেলোর পাস থেকে বদলী খেলোয়াড় গ্যানাব্রি ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ইনজুরি টাইমে সাদিও মানে আরো এক গোল করলেও অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়।