বাসস
  ১৫ জুন ২০২৩, ২৩:৪৭

ব্যাটার বধের সুনিপুণ কৌশল শিখছেন এবাদত

ঢাকা, ১৫ জুন ২০২৩ (বাসস) : দীর্ঘ সংস্করনের ফরম্যাটে যেহেতু সহজেই উইকেট পাওয়া কঠিন, এজন্য নিয়মিত উইকেট পাবার জন্য প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের বধ করার সুনিপুণ কৌশলই সহজ উপায় বলে মনে করেন বাংলাদেশের পেসার এবাদত হোসেন।
এবাদত জানান, টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটাররা উইকেটে সেট করে  উইকেট পেতে বা ব্রেক থ্রুর জন্য বোলাররা আরও বেশি উদগীব  হয়ে উঠে।
দিনের শুরুতে প্রথম ইনিংসে বাংরাদেশ দলের ২০ রানে ৫ উইকেট হারানোর ধাক্কা পরবর্তীতে ভুলিয়ে দেন পেসার এবাদত। ৪৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে বড় লিড এনে দিতে অবদান রাখেন এবাদত। পরবর্তীতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং জাকির হাসান ৫৪ রানের দু’টি ইনিংস খেললে দিন শেষে ভালো অবস্থায় পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
চার উইকেটের সবগুলো অতিরিক্ত বাউন্সারের মাধ্যমে পেয়েছেন এবাদত। কিন্তু বাউন্স দিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটারকে চমকে দিতে ও ইনসুইং-আউটসুইং করার জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারন করতে হয়েছে তাকে।
এবাদত বলেন, ‘আমি ধীরে ধীরে ব্যাটারদের সেট করার কৌশল শেখার চেষ্টা করছি। আমরা বাউন্স পেয়েছি এবং উইকেটে গতি ছিল। এটি আমাদের জন্য সহায়ক ছিল। আপনারা  দেখেছেন, বাউন্সার দিয়ে আমি উইকেট পেয়েছি কিন্তু এমনটা নয় ধারাবাহিকভাবে বাউন্সার দিয়েছি। প্রথমে আমি ব্যাটারদের সেট করলাম, তাদের সামনে বোলিং করলাম, সুইং করলাম এবং এরপর তাদের অবাক করার জন্য বাউন্সার দিলাম। পরিকল্পনাটি আমার জন্য কাজে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে আমি ইনসুইং-আউটসুইং করতাম এবং এক ওভারে দু’টি বা তিনটি বাউন্সার দিতাম। টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটারদের সেট করা গুরুত্ব¡পূর্ণ। কারণ এই ফরম্যাটে ব্যাটাররা একগুঁয়ে থাকে।’
এবাদতের চার উইকেট ছাড়াও আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম ২৮ রানে ২ উইকেট নেন। দুই স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ এবং তাইজুল ইসলাম বাকি চার উইকেট ভাগাভাগি করে নেন। উইকেটশূন্য ছিলেন ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে দলে ফেরা ফেরা আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ।
বাংলাদেশের পেস বান্ধব উইকেটে নিয়মিত খেলা উচিত, এমনটা টিম ম্যানেজমেন্টকে বোঝানোর সময় এখনও আসেনি বলে মনে করেন এবাদত।
তিনি বলেন, ‘উইকেট সহায়ক ছিল এবং আমাদের তিনজন পেস বোলারই ভালো বোলিং করেছে। কিন্তু ম্যাচ এখনো শেষ হয়ে যায়নি এবং মাত্র এক ইনিংস বোলিং করেছি আমরা। দেখা যাক, দ্বিতীয় ইনিংসেও আমরা ভালো করতে পারি কি-না।’
এবাদত আরও বলেন, ‘দলের জন্য ভালো শুরু করার জন্য আমরা তিন পেসারই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছি এবং তবে উইকেট সহায়ক ছিল। কন্ডিশনকে কাজে লাগাতে আমরা তিনজনই যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি এবং বাকিটা ম্যানেজমেন্টের উপর নির্ভর করে। আমার মনে হয়, এভাবে চালিয়ে যেতে পারি তবে অবশ্যই আমাদের উপর আস্থা রাখতে পারবে টিম ম্যানেজমেন্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত তিন বছরে আমাদের পেসারদের উন্নতির গ্রাফটা চমৎকার। আমি বলছি না, আমরা দুর্দান্ত বোলিং গ্রুপ হিসাবে গড়ে উঠছি। কিন্তু আমরা যদি এটি ধরে রাখতে পারি তাহলে আমরা বিশ্ব ক্রিকেটে একটি প্রভাব বিস্তারকারী গ্রুপ হয়ে উঠবো।’
ইনিংসে পাঁচ  উইকেট পাবার ভালো সুযোগ ছিলো এবাদতের। পাঁচ উইকেট শিকারের স্বাদ নিতে না পারায় হতাশ নন তিনি। সবসময় দলকে দয়ে থাকেন এবাদত।
তিনি বলেন, ‘স্পিনারদের দিয়ে বেশি বল করিয়েছেন অধিনয়ক। আমরা ওভার রেটের কারনে পিছিয়ে ছিলাম। আমার কাছে দল সবকিছুর আগে। এজন্য আমি হতাশ নই।’
আফগানিস্তান ইনিংসে চারটি স্লিপ ফিল্ডার এবং গালিতে একটি ফিল্ডার রেখে বোলিং করেছে বাংলাদেশের পেসাররা। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের পেসারদের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা। নতুন এই অভিজ্ঞতার অংশ হতে পেরে খুশি এাবদত।
তিনি বলেন, ‘এই প্রথম আমরা এমন উইকেট পেলাম। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমরা বাংলাদেশের মাটিতে তিনজন পেসার নিয়ে খেলেছি এবং এটির অংশ হতে পেরে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে তাদের বের করে আনার চেষ্টা করেছি এবং পরিকল্পনাটি কাজে দিয়েছে।’