বাসস
  ১৮ জুন ২০২৩, ১৬:২১
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৩, ১৬:৫৯

গত ১০ বছর যা করেছি, সেগুলো কাকতালীয় ছিল না : খাজা

লন্ডন, ১৮ জুন ২০২৩ (বাসস) : ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরির দেখা পেলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা। এই সেঞ্চুরিটা খাজার কাছে এক্কেবারেই ভিন্নমাত্রার। কারন ইংল্যান্ডের মাটিতে অষ্টম টেস্টে এসে প্রথমবারের মত সেঞ্চুরির ছোয়া পেলেন তিনি। সেঞ্চুরির পর তার উদযাপনের মাত্রাটাও বলে দিয়েছে, কতটা উচ্ছসিত খাজা। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হবার পর খাজা বলেন, ইংল্যান্ডে রান করতে পারি না বলেই হয়তো স্বাভাবিকের চেয়ে আবেগটা বেশি কাজ করেছিলো।
ইংল্যান্ডের মটিতে সর্বশেষ তিন অ্যাশেজের মধ্যে দু’টিতেই বাদ পড়েন খাজা। কারন ইংল্যান্ডের মাটিতে তার পারফরমেন্স আশানুরুপ ছিলো না। ব্যাটিং গড়- ১৭ দশমিক ৭৮ ও সর্বোচ্চ স্কোর ছিলো- ৫৪। এ অবস্থাতেও ইংল্যান্ডের মাটিতে এবার অ্যাশেজের দলে সুযোগ পান খাজা। কারন ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ থেকে ক্যারিয়ারের পুনর্জন্ম হয় তার। এরপর থেকে ব্যাট হাতে সেরা রুপেই রয়েছেন খাজা।
২০১৯ সালের আগস্টে পুনরায় দলে ফিরে অ্যাশেজের সিডনি টেস্টে টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন খাজা। এরপরই পাকিস্তান সফরে আরও দু’টি সেঞ্চুরি করে দলে নিজের জায়গা পাকা করেন বাঁ-হাতি খাজা।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে ২০ ইনিংসে ১০৮০ রান ও ২০২৩ সালে ১০ ইনিংসে ৫৪১ রান করেছেন খাজা। তাই ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজের খেলার সুযোগটা প্রাপ্যই ছিলো তার।
সুযোগ পেয়ে প্রথম ইনিংসেই বাজিমাত করলেন ৩৬ বছর বয়সী খাজা। ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরির উদযাপনটা বাঁধভাঙ্গা ছিলো তার। ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকসের বলে কাট করে বাউন্ডারির সহায়তায় তিন অংকে পা দিয়েই আকাশে ব্যাট ছুড়ে মেরে হেলমেট খুলে দু’হাত তুলে আনন্দে মেতে  ওঠেন খাজা। দিন শেষে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭৯ বলে ১২৬ রানে অপরাজিত আছেন খাজা।
দ্বিতীয় দিনের সেরা পারফরমেন্সে স্বাভাবিকভাবেই সংবাদ সম্মেলনে আসার কথা খাজার। খাজা এসেছেনও, সাথে নিয়ে আসেন মেয়ে আইশাকে। মেয়েকে কোলে নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে বসতেই, সেঞ্চুরির উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন উড়ে আসে। খাজা বলেন, ‘সত্যি বলতে এমন উদযাপনের কারণ আমিও জানি না। হতে পারে ইংল্যান্ডের মাটিতে তিনটি অ্যাশেজের দু’টি থেকেই বাদ পড়েছিলাম বলেই এমন কিছু। মিডিয়ায় আমি চোখ রাখি না। মাঠে নামার সময়, নেটে ব্যাটিং করতে যাওয়ার সময় দর্শকেরা বলছিল, আমি ইংল্যান্ডে রান করতে পারি না, তাই হয়তো স্বাভাবিকের চেয়ে উদযাপনের আবেগটা একটু বেশি ছিল।’
২০১১ সালে টেস্ট অভিষেকের পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬২ টেস্টে ১৫টি সেঞ্চুরিতে ৪৬৩৪ রান করেছেন খাজা। এ অবস্থায় নিজেকে প্রমাণের কিছু দেখেন না তিনি, ‘এমনটা আমি বারবার বলেছি, ভারতেও এমন হয়েছে। এমন না যে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। তবে গত ১০ বছরের সাফল্য যে অপ্রত্যাশিত বা কাকতালীয় ছিল না, তা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে রান করে দেখিয়ে দেয়াটা অনেক কিছু।’
গত কয়েক বছর ধরে ব্যাট দারুন ধারাবাহিক আছেন খাজা। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আপনি যা দেখতে পাচ্ছেন, এটাই উসমান। এটা লুকানোর চেষ্টা করি না আমি। সব দিক দিয়ে আমি নিখুঁত নই, আমি ভুল করি, এখানেও পারফরমেন্স করতে পেরে আমি খুশি এবং আসলে সবাইকে  দেখাতে পেরে খুশি। ব্যাট কেন থ্রো হয়েছিলো আমি জানি না, তবে এটি হয়েছে। এটা আমিই ছিলাম।’
অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন জো রুটের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ৩৯৩ রানে ইনিংস ঘোষনা করে ইংল্যান্ড। ১৫২ বলে অপরাজিত ১১৮ রান করেন রুট। দ্বিতীয় দিন শেষে খাজার শতকে ৫ উইকেটে ৩১১ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ৮২ রানে পিছিয়ে অসিরা।