বাসস
  ১৮ জুন ২০২৩, ২১:০৯

আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়কে অনেক বড় করে দেখছেন হাথুরুসিংহে

ঢাকা, ১৮ জুন ২০২৩ (বাসস) : আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্ট জয়কে ‘টেস্ট জয়ের চেয়েও বেশি’ বলে অ্যাখায়িত করেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সবুজ উইকেটে এ ফরম্যাটে জিততে পারায় তাদের মনস্তাত্ত্বিক বাঁধা দূর হবে বলে বিশ^াস  করেন বাংলাদেশ কোচ।
গতকাল শেষ হওয়া টেস্টে চারদিনেই আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে বাংলাদেশ। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়ে টাইগাররা। এমনকি শতাব্দীর সবচেয়ে বড় এবং টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ বড় জয়ের নজির গড়ে বাংলাদেশ।
আজ হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমি জানি না আপনি দেখেছেন কিনা, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছি, এটি একটি টেস্ট জয়ের চেয়েও বেশি কিছু। আমি যা বোঝাতে চেয়েছিলাম, আমরা এই ম্যাচের  জন্য যেভাবে প্রস্তুত হয়েছি, সব মিলিয়ে আগে এমন কখনও হইনি। আমরা যেভাবে দ্রুত এবং সবুজ উইকেট প্রস্তুত করেছি এটি নিয়ে চিন্তা করলে আমি মনে করি, এটি আমাদের জন্য বড় জয় ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের উইকেটে খেলে এবং জয় পাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার হয়ে আসে যা মানসিক বাধা পার করে। কারণ খেলার আগে, আমার মনে হয়েছে,আমরা কেমন করবো তা নিয়ে অনেক মানুষের সন্দেহ ছিল এবং এমনকি আমরা এমনভাবে খেলেছি যা আমরা সাধারণত খেলি না। আমাদের আলাদা শক্তি ছিল। এই ধরনের উইকেট প্রস্তুত করার জন্য কিউরেটর গামিনীকে কৃতিত্ব দিতে হবে। এজন্য আমি মনে করি, এটা টেস্ট জয়ের চেয়েও বেশি কিছু।’
দলের দুই তরুণ জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়ের প্রশংসা করেছেন হাথুরুসিংহে। তিনি জানান, তাদের পরিপক্কতা প্রত্যাশার বাইরে ছিলো।
হাথুরু বলেন, ‘আমি আসলে (তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে) খুবই সন্তুস্ট। জাকিরকে প্রথম ব্যাটিং করতে দেখলাম। আপনি জানেন, ভারত সিরিজে ইনজুরিতে পড়েছিলেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা সত্যিই ভালো করেছে।  কিন্তু প্রথমবারের মতো আমি তাকে প্রত্যক্ষভাবে  ব্যাটিং করতে দেখলাম এবং যা দেখলাম তা দুর্দান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘পেস এবং স্পিনে সমান দক্ষ সে। আধুনিক ক্রিকেটে এমন ওপেনার খুবই বিরল। দারুন টেম্পারমেন্টে ব্যাটিং করেছে জয়। তার রেকর্ডও বলে সে যদি ভালো শুরু করতে পারে তাহলে ইনিংস বড় করতে পারে। দলের জন্য এই দুই তরুণ সত্যিই ইতিবাচক ছিলো এবং মোমিনুলও রানে ফেরায় খুশি।’
টেস্টে হাফ-সেঞ্চুরি পান জাকির ও জয়। দুই বছর পর টেস্টে সেঞ্চুরি পান মোমিনুল। মোমিনুলের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেছে টাইগাররা। কিন্তু হাথুরুসিংহে জানান, তারা কিভাবে ব্যাটিং করবে সেটি নির্ধারণ করবে কন্ডিশন।
হাথুরুসিংহে বলেন, ‘যদি কন্ডিশন ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের জন্য অনুকূল হয়, আমরা করবো। আমরা সেভাবেই অনুশীলন করেছি এবং রান করার জন্য আমরা তাদের স্বাধীনতা দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কন্ডিশন কঠিন হয়, তাহলে আমরা কন্ডিশন অনুযায়ী সেভাবে ব্যাট করতে যথেষ্ট স্মার্ট হব। এই টেস্টের দুই ইনিংসে যেভাবে ব্যাটিং করেছে এজন্য শান্তকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে প্রথম দুই ঘণ্টায় সে এবং জয় দারুন ব্যাটিং করেছে এবং ড্রেসিংরুমের সকলের স্নাযুকে ঠান্ডা করেছে।’
মিরপুরে প্রথমবারের মতো তিন পেসার নিয়ে খেলতে নেমেছিলো বাংলাদেশ। তিন পেসার মিলে ১৪টি উইকেট শিকার করেন। যা টেস্টে বাংলাদেশের পেসারদের পক্ষে এক টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট।
প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন এবাদত হোসেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন তাসকিন। দুই ইনিংসে নিখুঁত বোলিং পারফরমেন্স প্রদর্শন করে আফগানিস্তানকে চাপে রাখেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম।
হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আগে আমাদের শক্তি ছিল স্পিন।  আমরা বুঝতে পারছি  এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষে বিপক্ষে আমরা ম্যাচ জিতবো। এখন বিকল্প হিসেবে পেসারদের ব্যবহার করে ম্যাচ জয়ের উপায় তৈরি করেছি।’
তাদের বোলিংয়ের ধরনটা দারুন ছিল,  খুব পেশাদার বোলিং করেছে। বারবার বাউন্সার দেয়নি, বেশিরভাগ বোলিং সামনের পায়ে করেছে। এই ছোট জিনিসগুলো পেসারদের পরিণত করে ও  তারা অনেক পথ  পাড়ি দিয়ে এসেছে। আমি খুব খুশি।’