বাসস
  ০৮ জুলাই ২০২৩, ১৫:৪৪

চেলসিতে নিজের খ্যাতির ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত পোচেত্তিনো

লন্ডন, ৮ জুলাই ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : সমস্যা জর্জরিত চেলসিতে নিজের খ্যাতির ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নতুন কোচ মরিসিও পোচেত্তিনো। কিন্তু হ্যারি কেনের সাথে আবারো কাজ করার সুবিধা পেলে তা পোচেত্তিনোকে বাড়তি কোন শক্তি যোগাবে না বলেই সংশ্লিষ্টদের মত। 
পোচেত্তিনোর সাবেক ক্লাব টটেনহ্যাম ছেড়ে কেনের চেলসিতে আসার জোড় গুঞ্জন রয়েছে। স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে এই দলবদল উভয় পক্ষের জন্যই ভাল কোন সুখবর বয়ে আনতে পারে। গত মৌসুমে স্বীকৃত একজন  স্ট্রাইকারের অভাব দারুনভাবে অনুভব করেছে চেলসি। সে কারনেই একজন শীর্ষ সারির  স্ট্রাইকারকে দলে ভেড়ানোর প্রয়োজন বোধ করছেন পোচেত্তিনো। ইংলিশ অধিনায়ক কেনই হতে পারেন সেই স্থান পূরণের যোগ্য খেলোয়াড়। 
টটেনহ্যামের রেকর্ড এই গোলদাতা পোচেত্তিনো অধীনে নিজেকে পরিণত করে তুলেছেন। দুই বছর আগে ম্যানচেস্টার সিটিও তাকে দলে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেটা সফল না হওয়ায় এবার উত্তর লন্ডনের ক্লাব ছাড়তে নিজেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কেন। এবারও তাকে দলে পেতে বায়ার্ন মিউনিখ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আগ্রহ দেখিয়েছে। আগামী বছর টটেনহ্যামের সাথে কেনের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এ কারনে এ বছরই স্থায়ীভাবে কোথাও থিতু হতে চাচ্ছেন কেন। 
টটেনহ্যাম চেয়ানম্যান ড্যানিয়েল লেভাই নিজেই কেনের বিষয়টি দেখাশুনা করছেন। শুক্রবার চেলসিতে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে পোচেত্তিনোকে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল কেনের চুক্তি। এ ব্যপারে তিনি চেষ্টা করবেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পোচেত্তিনো বলেন, ‘আমি কখনই অন্য কোন ক্লাবের খেলোয়াড় নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করিনা। কিন্তু বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে নিয়ে কথা বলতে বলার বিষয়টি ভিন্ন। যদিও এ বিষয়ে কথা বলাটা ঠিক নয়। সমর্থকরা বোকা নয়, তারা জানে কেনের সাথে আমার সম্পর্কটা সবসময়ই অসাধারন ছিল। যখন যে তরুণ ছিল তখন থেকেই আমি তাকে দেখছি। ধীরে ধীরে সে পরিণত হয়েছে, অনেক কিছুই অর্জন করেছে, সবই আমার চোখের সামনে। অবশ্যই আমাদের দুজনের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা ভিন্নভাবে চিন্তা করছি। আমরা শুধুমাত্র কেনকে নিয়ে ভাবছি না।’
কেনের সাথে শেষ পর্যন্ত চুক্তিটা যদি না হয়, তবে পোচেত্তিনোকে চেলসির স্ট্রাইকার সমস্যা মেটাতে বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে। ইতোমধ্যেই ব্লুজরা জার্মান ফরোয়ার্ড কেই হাভার্টজকে আর্সেনালের কাছে ছেড়ে দিয়েছে। গত আসরে প্রিমিয়ার লিগে সব মিলিয়ে চেলসি মাত্র ৩৮টি গোল দিয়েছে, শেষ পর্যন্ত টেবিলের ১২তম স্থানে থেকে তারা মৌসুম শেষ করেছে। পোচেত্তিনো বলেন, ‘আমাদের এনিয়ে কাজ করার সময় চলে এসেছে। আমার মনে হয় যারা গোল করতে পারে সেই মানের খেলোয়াড় দলে নেবার সময় এসে গেছে।’
চেলসির প্রস্তাব গ্রহনের আগে পোচেত্তিনোর টটেনহ্যামে ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। ৫১ বছর বয়সী পোচেত্তিনো পাঁচ বছর কাটিয়েছেন টটেনহ্যামে। বিস্ময়কর ভাবে ছাঁটাইয়ের ঠিক একমাস আগে তিনি টটেনহ্যামকে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল উপহার দিয়েছিলেন। নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে সেল্টিকের আনগে পোস্তেকোগ্লুকে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেবার আগে তাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘ড্যানিয়েলসহ টটেনহ্যামের প্রায় সকলের সাথেই আমার অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আমি এ ব্যপারে কিছু বলতে চাচ্ছিনা। আমাদের এখন একসাথে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমি এখন হ্যাঁ, না যাই বলিনা কেন, কিছুই তো আর পরিবর্তন হবে না। তবে অতীত নিয়ে আমি দারুন গর্বিত। ফুটবলে কেউই ভবিষ্যত নিয়ে আগে থেকে কিছু বলতে পারেনা।’
টটেনহ্যামের দায়িত্ব শেষে গত বছর পিএসজি থেকেও বরখাস্ত হয়েছিলেন পোচেত্তিনো। ফরাসি শিরোপা পেতে সহযোগিতা করতে না পারায় পিএসজির চাকরি হারাতে হয়েছিল পোচেত্তিনোকে। একইসাথে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও হতাশাজনক পারফর্ম করেছিল প্যারিসের জায়ান্টরা। 
১৯৯৬ সালের পর সবচেয়ে বাজে মৌসুম কাটিয়ে ঘুড়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে পোচেত্তিনোর উপর ভরসা করেছে চেলসি। গত মৌসুমে ব্যর্থতার দায় নিয়ে একে একে বিদায় নিতে হয়েছে কোচ থমাস টাচেল ও গ্রাহাম পটারকে। পোচেত্তিনো অবশ্য মনে করেন কঠিন এই মুহূর্তে চেলসির দায়িত্ব নেয়াটা সঠিক সিদ্ধান্তই ছিল। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি ঝুঁকি নিতে ভালবাসি। প্রত্যাশার চাপকে সামলে ওঠার চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। আমার কাছে এটি একটি চ্যালেঞ্জ। আমি আবারো লড়াইয়ের অনুভূতি নিতে চাই। এই ফুটবল ক্লাবের বড় শিরোপা জয়ের অতীত ইতিহাস আছে। আমি এখানে নিজেকে প্রমান করতে চাই। দলকে পুনর্গঠিত করার জন্য সময়ের প্রয়োজন, আমি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে এ ধরনের কোন অযুহাত শুনতে চাইনা। এখানে কোন অযুহাতের জায়গা নেই, প্রতিযোগিতা কারো জন্য অপেক্ষায় থাকবেনা।’