বাসস
  ১৯ জুলাই ২০২৩, ১৫:০১

নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রাকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে কাল থেকে মাঠে গড়াচ্ছে বিশ্বকাপ

অকল্যান্ড, ১৯ জুলাই ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : বৃহস্পতিবার থেকে নিউজল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় যৌথভাবে শুরু হচ্ছে নারী বিশ্বকাপ ফুটবল। এবারই প্রথমবারের মত ৩২টি দল নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে ফুটবলের এই সর্বোচ্চ আসর। নারী ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যই এবারের বিশ্বকাপে সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। টানা তৃতীয়বারের মত যুক্তরাষ্ট্র শিরোপা জয়ের ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামছে। 
১৯৯১ সাল থেকে শুরু হওয়া নারী বিশ্বকাপে এত দলের অংশগ্রহণ একটি বিরাট পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। চায়নায় অনুষ্ঠিত প্রথম আসরে  ১২টি দল অংশ নিয়েছিল। ২০১১ সালে মাত্র ১৬টি দল অংশ নিয়েছিল। চার বছর আগে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আসরে খেলেছিল ২৪টি দল। সবাইকে টপকে শিরোপা ঘরে তুলেছিল ফেবারিট যুক্তরাষ্ট্র। 
চেলসির তারকা ফরোয়ার্ড স্যাম কারের নেতৃত্বে ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াও এবার ফেবারিটের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। আগামী ২০ আগস্ট সিডনিতে হবে ফাইনাল। 
এবারের টুর্ণামেন্টে ৩২টি দল আটটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অংশ নিবে। প্রতিটি দল গ্রুপ পর্বে অন্তত তিনটি ম্যাচ খেলবে। গ্রুপের শীর্ষ আট দল নক আউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জণ করবে। 
অংশগ্রহণকারী দলগুলো হলো :
গ্রুপ এ : নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, ফিলিপাইন, সুইজারল্যান্ড
গ্রুপ বি : অস্ট্রেলিয়া, আয়ালল্যান্ড, নাইজেরিয়া, কানাডা
গ্রুপ সি : স্পেন, কোস্টা রিকা, জাম্বিয়া, জাপান
গ্রুপ ডি : ডেনমার্ক, ইংল্যান্ড, চায়না, হাইতি
গ্রুপ ই : যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, নেদারল্যান্ড, পর্তুগাল
গ্রুপ এফ : ফ্রান্স, জ্যামাইকা, ব্রাজিল, পানামা
গ্রুপ জি : সুইডেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইতালি, আর্জেন্টিনা
গ্রুপ এইচ : জার্মানী, মরক্কো, কলম্বিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া
আগামীকাল অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড বনাম নরওয়ের ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে। দিনের আরেক ম্যাচে সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়াতে মুখোমুখি হবে টুর্নামেন্টের যৌথ আয়োজক অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ড। 
প্রতি চার বছর অন্তর আয়োজিত নারীদের এই বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ চারবার ১৯৯১, ১৯৯৯, ২০১৫ ও ২০১৯ সালে শিরোপা জয় করেছে। এছাড়া জার্মানী দুইবার, নরওয়ে ও জাপান একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১৯ সালে সর্বশেষ আসরের ফাইনালে নেদারল্যান্ডকে ২-০ গোলে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্র শিরোপা ধরে রেখেছিল। 
এর আগে চায়না (১৯৯১, ২০০৭) ও যুক্তরাষ্ট্রে (১৯৯৯, ২০০৩) দুইবার করে বিশ্বকাপের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া সুইডেন (১৯৯৫), জার্মানী (২০০৭), কানাডা (২০১৫) ও ফ্রান্স (২০১৯) একবার করে নারী বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল। 
এবারই বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মত দুটি দেশে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজিত হচ্ছে। উভয় দেশের নয়টি শহরের ১০ ভেন্যুতে বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে। ভেন্যুগুলো হলো : অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, ব্রিসবেন, মেলবোর্ন, পার্থ ও এডিলেড এবং নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড, ওয়েলিংটন, ডানেডিন ও হ্যামিল্টন। 
শুধুমাত্র অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সংখ্যার দিক থেকেই এবারের বিশ্বকাপ সর্ববৃহৎ নয়, এবারের প্রাইজ মানিও অন্যান্য সব আসরের তুলনায় কয়েকগুন বাড়িয়েছে ফিফা। ২০১৯ সালের তুলনায় এর পরিমান প্রায় তিনগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অংশগ্রহণকারী ৩২টি দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। ২০১৯ সালে এর পরিমান ছিল মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডলার। প্রাইজমানির অংশ ব্যক্তিগত খেলোয়াড়  ও অংশগ্রহনকারী দেশগুলোকে দেয়া হবে। 
প্রাইজ মানি যেভাবে ভাগ করা হবে :
পর্ব                         খেলোয়াড়                           দল
গ্রুপ পর্ব                    ৩০ হাজার ডলার                   ১.৫৬ মিলিয়ন ডলার
শেষ ষোল                 ৬০ হাজার ডলার                    ১.৮৭ মিলিয়ন ডলার
কোয়ার্টার ফাইনাল        ৯০ হাজার ডলার                    ২.১৮ মিলিয়ন ডলার
চতুর্থ স্থান                  ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার           ২.৪৬ মিলিয়ন ডলার               
তৃতীয় স্থান                ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার           ২.৬১ মিলিয়ন ডলার     
রানার্স আপ                ১ লাখ ৯৫ হাজার ডলার           ৩.০২ মিলিয়ন ডলার
চ্যাম্পিয়ন                  ২ লাখ ৭০ হাজার ডলার           ৪.২৯ মিলিয়ন ডলার                         
কাতারে অনুষ্ঠিত ২০২২ পুরুষ বিশ্বকাপে প্রাইজ মানি ছিল ৪৪০ মিলিয়ন ডলার। সেই তুলনায় নারীদের আসরের প্রাইজমানি এখনো অনেক কম। 
প্রথমবারের মত হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হবার পথে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপীয়ান কয়েকটি দল। ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের পাশপাশি ফেবারিটের তালিকায় আরো আছে স্পেন, জার্মানী, সুইডেন ও গতবারের রানার্স-আপ নেদারল্যান্ড।