শিরোনাম
। রুমানা জামান।
ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : ভোরের আলো ফুটতেই গমগমে রাজপথ। জনতার বিপুল পদচারণা। স্লোগানে-চিৎকারে ক্ষোভে আক্রোশে ফেটে পড়ছে মানুষ। কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন চারপাশ। সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দে মূর্তিমান আতঙ্ক। মিছিলে মুহুর্মুহু গুলি; রক্তাত্ব রাজপথ। দিগ্বিদিক ছুটাছুটি। সড়কে পড়ে থাকা গুলিবিদ্ধ নিথর দেহ। র্যাব-পুলিশের সতর্ক মহড়া। তবুও থামেনি প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। মাথায় জাতীয় পতাকা বাঁধা, মুখে স্লোগান- ‘আমার ভাই মরল কেন? জবাব চাই, জবাব চাই’। ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’।
জুলাই বিপ্লবের সেই রক্তক্ষয়ী দিনে এমন অজস্র স্লোগানে মুখরিত ছিল রাজপথ। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অকুতোভয় শিক্ষার্থীরা পুলিশের বন্দুকের নলের ক্রুর শাসানি উপেক্ষা করে এক পা দুই পা করে সামনে এগিয়ে আসে; গড়ে তোলে উত্তাল প্রতিবাদ।
রামপুরা, বাড্ডা হয়ে বিশ্বরোড পর্যন্ত সড়ক ‘ব্লকেড’ দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত টান টান উত্তেজনায় ধনুকের ছিলার মতো বুকটান করে অবিচল দৃঢ়তায় ধরে রাখে আন্দোলনের আবেগ, উত্তাপ অবিরাম।
জুলাই বিপ্লবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে যখন বাধ্য করা হয়। তখন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়ে আন্দোলন। এরপরই পাল্টে যেতে থাকে প্রেক্ষাপট। ওই মুহূর্তে প্রতিবাদের লাগাম ধরে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একের পর এক দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেন প্রতিবাদ-বিক্ষোভের গনগনে চুল্লী হয়ে ওঠে।
মূল সড়ক থেকে গলি। ছিল পদে পদে বাধা। সাথে আটক-গ্রেফতারের ভয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলার আতঙ্ক। তবু কিছুতেই পিছপা হয়নি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ইস্ট ওয়েস্ট, ব্র্যাক, নর্থসাউথ, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি, রামপুরায় ইম্পিরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও মডেল কলেজ, ইউআইইউ, স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীসহ আশেপাশের শিক্ষার্থীরা রামপুরা বাড্ডা সড়কে বুক পেতে আলিঙ্গন করেছে দানবের ছোড়া গুলির পর গুলি। কারফিউ উপেক্ষা করে বেগবান করেছে আন্দোলন।
মিছিল ও দ্রোহে উত্তাল হলো রাজপথ
প্রশাসনের রক্তচক্ষুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রামপুরা বাড্ডা রোড দিনের পর দিন কীভাবে ‘ব্লকেড’ রাখা হয়েছিল? এ বিষয়ে জানতে চাইলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আয়াতুল্লাহ বেহেস্তি বলেন, ‘১৫ জুলাই আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী কোটা সংস্কারের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। তবে এটি বড় আকার ধারণ করে ১৬ জুলাই। আমরা যখন দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে, এমনকি মেয়েদেরও নির্মমভাবে মারছে, তখন আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিই।’
আয়াতুল্লাহ বেহেস্তি আরও বলেন, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা হয়ে বিশ্বরোড পর্যন্ত ব্লকেড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। সে সময়ে আমরা ব্র্যাক, ইস্ট ওয়েস্ট, কানাডিয়ানসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করে একটি কমিটি গঠন করি। এখানে কেন্দ্রীয় কিছু নির্দেশনা ছিল। পরে একটা ডিভিশন করি যে আমরা পাঁচটি সেক্টরে ভাগ হয়ে আন্দোলন করব। এরপর থেকে তো লাগাতার কারফিউ ছিল। সেই কারফিউ আমরা ব্রেক করি। আন্দোলন চালিয়ে যাই। এখানে কিন্তু তখন আর কোনো কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল না। কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আমাদের শুধু একটা মিটিং হতো, সেখানে আমরা শুধু জানিয়ে দিতাম যে এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। তারা শুধু বলত হ্যাঁ, এভাবে করলে বেটার হয়।
তিনি বলেন, আমরা ম্যাসেজ দিয়ে দেই- নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে প্রতিদিন ইস্ট-ওয়েস্টের সামনে জড়ো হব। পরে কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে সড়কে ছড়িয়ে পড়ি। ছোট ছোট মিছিল এসে যুক্ত হতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকত জমায়েত। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসে যুক্ত হতেন আমাদের সঙ্গে।
প্রতিবাদের ভাষা গায়ে ফুটেছে শব্দের চাবুক হয়ে
ব্র্যাক, ইস্ট-ওয়েস্ট, কানাডিয়ানসহ বেশ কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাই তাদের আন্দোলনে নামার পেছনে মুখ্য কারণ ছিল।
শিক্ষার্থীরা জানান, ১৬ জুলাইয়ের পর থেকেই পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়। এ সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আশপাশের এলাকায় প্রায় নিয়মিতই ‘ব্লেক রেইড’ দেওয়া হতো। যাতায়াতের পথে শিক্ষার্থীদের ফোন চেক করা হতো এবং আন্দোলনে যুক্ত থাকার কোনো তথ্যপ্রমাণ পেলেই তাকে আটক দেখানো হতো।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ সালেহীন বলেন, ভোরের আলো ফোঁটার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা বাড্ডা সড়কে এসে জড়ো হতাম। পুলিশের সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্থানীয় কাউন্সিলরের লোকেরা সড়কে মহড়া দিতো। মিছিল বের করলেই গুলি ছুঁড়তো। এ কারণে আমরা সড়কে বসেই প্লেকার্ড হাতে স্বৈরাচারবিরোধী স্লোগানে স্লোগানে বিক্ষোভ করতাম। তখন মূল স্লোগাম ছিলো- ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা; লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না; জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে...’। আমাদের ডাকে মিছিল ও দ্রোহে উত্তাল হয়ে উঠত রাজপথ।
এ যেন যুদ্ধক্ষেত্র
১৮ জুলাই। কোটা সংস্কারের দাবিতে সারাদেশে সেদিন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকেই রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় রাস্তায় নেমে আসেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ওই দিন বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধের মুখে পুলিশ সদস্যরা কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থান নেয়। বেলা আড়াইটার দিকে র্যাবের হেলিকপ্টার এসে অন্তত ৬০ পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ওই দিনের পর থেকেই বাড্ডা রামপুরা ধরে বিশ্বরোড পর্যন্ত পুরো সড়ক হয়ে ওঠে আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রস্থল। আরেকটি গণ-জাগরণ মঞ্চ।
কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানিয়া আমিন স্নিগ্ধা মৃধা ছিলেন বাড্ডা ‘ব্লকেডের’ প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। সাহসী এই নারী শিক্ষার্থী বাসসকে বলেন, ‘১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ মধ্যেই সকাল সাড়ে ১০টায় আমরা ব্র্যাক ইউনিভাসিটির সামনের সড়কে শান্তিপূর্ণভাবেই জড়ো হই। উত্তর দিক থেকে নর্থসাউথ, আইবিএ, এআইউবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং দক্ষিণ দিক থেকে ইস্ট-ওয়েস্ট, ব্র্যাক ও আমাদের কানাডিয়ান ইউর্নিভাটির ছাত্ররা দু’পাশ থেকে মূল সড়কে স্বৈরাচারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল। পুলিশ বিনা উসকানিতে ব্র্যাক ইউনিভার্সির সামনে আমাদের ওপর হামলা চালায়। সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। একপর্যায়ে সরাসরি মিছিলে গুলি করে। আমরা উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে প্রতিরোধ করলে পুলিশ মাঝখানে পড়ে যায়। আমাদের ভার্সিটির (কানাডিয়ান) ভেতরে পুলিশ ঢুকে পড়ে এবং রাস্তামুখী ফোকাস গ্লাস ভেঙে আবারো ওপর থেকে আমাদের ওপর অনবরত গুলি ছোড়ে। বাধ্য হয়ে আমরা প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী ভাসির্টির ভেতরে ঢুকে পড়ি। পুলিশ তখন ভবনের সিঁসিতে আমাদের ওপর গুলি করতে করতে ছাদের দিকে চলে যায়। এ সময় আমাদের দু’জন সহকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। একজনের মাথায়, আরেক জনের বুকে গুলি লাগে। দু’জনই মারা যান সঙ্গে সঙ্গেই। বেশ কয়েকজন আহত হয়।
সিগ্ধা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, সেদিন মাথায় গুলিবিদ্ধ আমার ভাইয়ের লাশ সিড়িঁতে পড়ে থাকতে দেখেছি। গুলিতে ক্ষত-বিক্ষত মাথার ভেতর থেকে মগজ আর রক্ত মিলেমিশে গড়িয়ে পড়ছিল সিড়িঁতে। সেই ভয়াবহ দৃশ্যপট আমাকে আজীবন ‘ট্রমাটাইজ’ করে রাখবে’।
সরেজমিনে কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ছাদের যে কার্নিশ দিয়ে মই বেয়ে পুলিশ পালিয়ে যায় হেলিকাপ্টারে; সেখানে দেয়ালে একপাশে হেলিকাপ্টারের ছবি এঁকে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। হেলান দিয়ে রাখা আছে মইটি।
কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এএসএমজি ফারুক বাসসকে বলেন, ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ আমাদের ভাসির্টির ভেতরে ঢুকে পড়ে। লিফট বন্ধ থাকায় এই ১৪ তলা বিল্ডিংয়ে পায়ে হেঁটে উঠে পড়ে। এ সময় পুলিশ ৫ তলার সিঁড়ি বরাবর বন্দুকের ফাঁকা আওয়াজ করে। তারা ৪ তলার পূর্ব পাশের রাস্তামুখী ফোকাস গ্লাস ভেঙে ওপর থেকে ছাত্রদের অনবরত গুলি করতে থাকে।
সড়কে বুক ঝাঁঝরা লাশ
কোটাবিরোধী আন্দোলনে সংঘাতের অন্যতম কেন্দ্রস্থল রামপুরা ওয়াপদা রোডে মূল সড়কের পাশে একটি ছোট্ট দোকানে সবজি বিক্রিতা ফিরোজ মিয়ার (৪৫) সঙ্গে কথা হয়। ‘ভাই ছাত্র আন্দোলনে কই ছিলেন? এখানে তখন দোকান ছিল? এমন প্রশ্নে আতঁকে ওঠেন ফিরোজ। উত্তরে বলেন, ‘হ আছিলাম তো। আন্দোলনের সময় আমার চক্ষের সামনেই এক বুড়া চিকশাওয়ালা চাচা মইরা গেল। এই দোকানের সামনেই চাচা খাড়াইয়া আছিল; হঠৎ কইরা প্লেনের আওয়াজ; ঠাস ঠাস কইরা গুলি পড়ল নিচে। আমি দৌঁড়াইয়া পাশের গলিতে গিয়া একটা বাড়ির গেটের মইধ্যে ঢুকছিলাম। তয় রিকশাওয়ালা চাচা বুড়া মানুষ; পলাইতে পারে নাই। পরে আইসা দেখি চাচার লাশ রাস্তায় পইড়া আছে। গুলিডা পিডে লাইগা বুক দিয়া বাইর অইয়া গেছে; রক্ত আর রক্ত। আমি হেই দৃশ্য জীবনেও ভুলুম না।’
ছোপ ছোপ রক্ত
সাউথইষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ৪থ বর্ষের শিক্ষাথী মোক্তাদির সাঈদী বলেন, র্যাব, পুলিশের কড়া পাহারা, কারফিউ, গুলি উপেক্ষা করে আমরা ১৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বাড্ডা রোডে আন্দোলন চাঙ্গা রেখেছি। রাজপথে লাশ দেখেছি। সহকর্মীদের রক্ত দেখেছি। নিজে বেশ কয়েকবার মারাত্মকভাবে আহত হয়েছি।
মোক্তাদির আরও বলেন, সেদিন ছিল ১৯ জুলাই, শুক্রবার। জুমার নামাজ পড়ে বনশ্রী ‘এ ব্লক’ থেকে ফরাজী হাসপাতালের সামনে দিয়ে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ দক্ষিণ দিক থেকে অনেকগুলো বিজিবির গাড়ি ঢুকলো গলিতে। দু’পাশের রাস্তা ধরে ‘ওপেন ফায়ার’ করতে করতে গাড়িগুলো চলে গেল। চারপাশে হই-হই পড়ে গেল। আমি মূল সড়কের পাশেই এক দোকানের ভেতরে গিয়ে দাঁড়ালাম। এমন সময় দুই পুলিশ সদস্য দোকানদার ভাইকে সাবধান করে দিয়ে বললেন, ‘ভেতর থেকে শার্টার টেনে দোকান বন্ধ করেন। সরাসরি গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাউকে আর মূল সড়কে আসতে দেওয়া হবে না। আন্দোলনকারী দেখলেই গুলি করা হবে।’
মোক্তাদির সাঈদী বলেন, পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে দেখি ফরাজী হাসপাতালের সমানে ২টা লাশ পড়ে আছে। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে বুক। রাস্তায় ছড়িয়ে আছে ছোপ ছোপ রক্ত।
বিধ্বস্ত জনপদে গুমোট আর্তনাদ
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে ৫ মাস আগে। তবু অভ্যুত্থানের স্মৃতি বয়ে বেড়ানো বিধ্বস্ত জনপদে এখানো গুমোট আর্তনাদ। সরেজমিনে রামপুরা, বাড্ডা, বনশ্রী রোড, নতুন বাজার হয়ে বিশ্বরোডের দিকে এগোলেই দেখা মিলবে বিভিন্ন ক্ষতচিহ্ন। সড়কের দুপাশের বিদুৎতের খাম্বা আর দেয়ালে গভীর গর্ত হয়ে আছে গুলির আঘাতে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে দেয়াল ছেয়ে আছে প্রতিবাদী গ্রাফিতি- ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, এখন সময় পক্ষে না’, ‘আসছে ফাগুন, আমরা হব দ্বিগুণ’, ‘ব্লাডি জুলাই’, ‘তুই মোর ছাওয়াক চাকরি না দিবু, না দে, কিন্তু মারলু ক্যানে?’ একটা দেশের স্বৈরাচারী রাজা পালিয়েছে সেই কবে; অথচ রাজপথ এখনও বলে চলে সেই রূপকথা- একদা এক দেশে এক...।