ইব্রাহিম খলিল মামুন
কক্সবাজার, ১৩ জুন ২০২৫ (বাসস) : পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হচ্ছে শনিবার (১৪ জুন)। ছুটির শেষদিনের আগের দিন শুক্রবার কক্সবাজার সৈকতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই অবস্থা। সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে শুধু পর্যটক আর পর্যটক। সাগরতীর যেন পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে।
জেলার পুলিশ- প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত সাতদিনে কক্সবাজারে ভ্রমণ করেছেন ৮ লাখেরও বেশি মানুষ। সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারনার পাশাপাশি পর্যটকদের হয়রানি রোধে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, বালিয়াড়ি কিংবা নোনাজল সবজায়গা কানায় কানায় পূর্ণ। তীব্র গরমও হার মানছে উৎসবমুখর ভ্রমণ পিপাসুদের উচ্ছ্বাসে। শুধু সুগন্ধা পয়েন্টই নয়, লাবনী, কলাতলী, হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক ও মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত এলাকা পর্যটকে ভরপুর ছিল।
ঢাকার মতিঝিল থেকে আসা পর্যটক হুমায়ুন কবির বলেন, এখন সমুদ্রে গোসল করছি। বিকেলে মেরিন ড্রাইভে ঘুরব, এরপর শনিবার রাতে ঢাকায় ফিরে যাব।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা আসিফ আহমেদ বলেন, অনেক মানুষ, তবুও পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করছি, ছবি তুলছি, বিচ বাইক ও ঘোড়ায় চড়ছি।
কক্সবাজার শহরের তারকা মানের হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের বিপণন ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ নুর সোমেল বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত তাদের হোটেলের ৭০-৮৫ শতাংশ রুম বুকিং রয়েছে। একাধিক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, ১৩ জুন পর্যন্ত অধিকাংশ আবাসিক হোটেলই সম্পূর্ণ বুকিং হয়ে রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) নিত্যানন্দ দাস বলেন, এবার কুরবানির ঈদের পর গত সাতদিনে কক্সবাজারে ভ্রমণ করেছেন ৮ লাখের বেশি মানুষ। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
তিনি বলেন, অতীতের মতো এবারও শহরে ও সমুদ্র সৈকতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে ওয়াচ টাওয়ার থেকেও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
এছাড়াও সৈকতের প্রতিটি গোলঘরে সার্বক্ষণিক পুলিশের অবস্থান এবং মোবাইল টিমসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সাদা পোশাকেও পর্যটন স্পটগুলোতে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ।
এএসপি নিত্যানন্দ দাস জানান, আবাসিক হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিন এমন ৫টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেগুলোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম বলেন, পর্যটকদের হয়রানি রোধে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে।