
ঢাকা, ৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) স্বাধীন মূল্যায়ন বিভাগ (আইইডি)-এর নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এডিবির ট্রেড অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স প্রোগ্রাম উন্নয়নশীল এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্য অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে বিভিন্ন সংকটকালীন সময়ে।
দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের প্রভাব বজায় রাখার জন্য কৌশলগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে প্রতিবেদনটি।
২০১৪ থেকে ২০২৪ সময়কালকে অন্তর্ভুক্ত করে করা এই মূল্যায়নটি ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, সংরক্ষণবাদ বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং আঞ্চলিকভাবে সমন্বিত প্রবৃদ্ধিকে আরও ভালোভাবে সহায়তা করতে এডিবিকে তার বাণিজ্য ও সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স কার্যক্রম পুনঃসমন্বয় করতে হবে।
আইইডির মহাপরিচালক ইমানুয়েল জিমেনেজ বলেন, ‘উন্নয়নের এক শক্তিশালী ইঞ্জিন হিসেবে রয়েছে বাণিজ্য, তবে খেলার নিয়ম বদলে যাচ্ছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এডিবির প্রোগ্রামগুলোকে শুধু বাণিজ্য প্রবাহই নয়, বরং ছোট ব্যাংক ও সেবাবঞ্চিত বাজারেও পৌঁছাতে হবে।’
মূল্যায়নে দেখা গেছে, এডিবির ট্রেড ফাইন্যান্স প্রোগ্রাম কোভিড-১৯ মহামারি এবং শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের মতো সময়গুলোতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে, যদিও এর কার্যক্রম এখনো কিছু নির্দিষ্ট দেশে সীমাবদ্ধ।
মূল্যায়ন দলের নেতা পাওলো ওবিয়াস বলেন, ‘যদিও সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স প্রোগ্রাম কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে, এর প্রকৃত সম্ভাবনা এখনো যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়নি। অধিকতর উন্নয়নমূলক প্রভাবের জন্য এডিবিকে তার কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পোস্ট-শিপমেন্ট ফাইন্যান্সের বাইরে গিয়ে দেশীয় ব্যাংকগুলোর সম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং নিম্ন-আয়ের বাজারে সরবরাহকারীদের অর্থায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।’
প্রাসঙ্গিকতা ও প্রভাব বজায় রাখতে মূল্যায়নে সুপারিশ করা হয়েছে, এডিবির বাণিজ্য অর্থায়ন কার্যক্রমকে সেবাবঞ্চিত বাজারে সম্প্রসারিত করা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) আরও শক্তিশালী সহায়তা প্রদানের জন্য একটি স্পষ্ট কৌশল গ্রহণ করা।
এছাড়া, প্রোগ্রামের কার্যক্রমে বর্তমানে প্রচলিত ম্যানুয়াল পদ্ধতি আধুনিকায়নের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি ও ঝুঁকি হ্রাসের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এসএমই সহায়তা এবং ডিজিটাল ট্রেড, অর্থপাচার প্রতিরোধ ও টেকসই সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের মতো জ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রমে উন্নয়ন ফলাফল আরও কার্যকরভাবে ট্র্যাক করার প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি বলেছে, বৈশ্বিক বাণিজ্য যত বেশি জটিল ও বিভক্ত হচ্ছে, এডিবি ও তার অংশীদারদের জন্য এই মূল্যায়নের পর্যবেক্ষণগুলো সময়োপযোগী নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে, যাতে বাণিজ্য অর্থায়ন অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।
এডিবির স্বাধীন মূল্যায়ন বিভাগটি পরিচালনা পর্ষদের ডেভেলপমেন্ট ইফেকটিভনেস কমিটির মাধ্যমে সরাসরি রিপোর্ট করে। এটি এডিবির কৌশল, কার্যক্রম ও ফলাফল মূল্যায়নের মাধ্যমে সমগ্র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উন্নয়ন ফলাফল উন্নত করতে সহায়তা করে।