চাঁদপুরের ক্ষুদে সোহানের স্বপ্নজুড়ে শুধুই মেসি

বাসস
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৪৫ আপডেট: : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৫২
ছবি : বাসস

চাঁদপুর, ৯ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়ে ফুটবল প্রেমিদের মাঝে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির ফ্যান ফলোয়াড়ের প্রকৃত সংখ্যা হয়তো বের করা কঠিন। ফুটবলকে ভালবাসে কিন্তু মেসির খেলার ভক্ত নয় এমন মানুষের সংখ্যা খুব একটা বেশী নয়।  

তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও মেসির এক ক্ষুধে ভক্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষুদে ফুটবলার সোহান । অনন্য প্রতিভার অধিকারী সোহান মাত্র ৫ বছর ৬ মাস বয়সে মেসি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। এই বয়সেই তার মধ্যে যেন স্বয়ং মেসির ছায়া দেখা যাচ্ছে। 

ফুটবল খেলার কিছু কৌশল আয়ত্ব করে তা দেখিয়ে এই শিশু ইতোমধ্যে অনেকের দৃষ্টি কেড়েছেন। তবে তার এই প্রতিভার ধারাবাহিকতার জন্য দরকার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার, এই দাবী সোহানের অভিভাববদের। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সোহানের ফুটবল খেলার নানা কৌশলের গল্প পড়ে ও ভিডিও দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। 

বাসসের পক্ষ থেকে সোহান সম্পর্কে জানতে কথা হয় তার বাবা, প্রতিবেশী ও স্বজনদের সাথে। 

ক্ষুদে সোহানকে দেখতে প্রতিদিনই তার বাড়িতে ছুটে আসছে উৎসুক জনতা। জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচানি গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. সোহেল প্রধানিয়ার ছেলে মো. সোহান। দুই ভাই বোনের মধ্যে সোহান ছোট। তারা বাবা সোহেল প্রধানিয়া পেশায় একজন সাইকেল মেকানিক। মা রেহেনা বেগম গৃহিনী। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট বাড়িতে শিশু ফুটবলার সোহান পরিবারের সাথে থাকেন। স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিশু শ্রেণিতে পড়ে সোহান। বোন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। 

সাড়ে পাঁচানি গ্রামের শিশুদের জন্য খেলার কোন মাঠ নেই। অধিকাংশ শিশুরা সড়কে কিংবা ফসলি জমিতে খেলা-ধুলার চর্চা করে। শিশু সোহানও তার বাড়ির আঙ্গিনায় এবং তার বাবার সাইকেল গ্যারেজের সামনে রাস্তায় নিয়মিত ফুটবল খেলার চর্চা করে। 

সোহান বলেন, বাবাই আমাকে খেলা শেখায়। আমি বড় হয়ে মেসির মত খেলোয়াড় হতে চাই। আমি মেসিকে খুব পছন্দ করি, টিভিতে ও মোবাইলে  মাঝেমধ্যে তার খেলা দেখি।  

সোহানের বাড়ীতে তার বন্ধুরা জানায়, সোহান বয়সে খুব ছোট হলেও তার খেলার ধরণ অনেক ভালো। তার বাবা প্রতিদিন ফজরের নামাজের পরে তাকে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণ দেন। এরপর দিনের অন্য সময় সোহান আমাদের সাথে খেলে। শিশু সোহানের দাদী রোকেয়া বেগম বলেন, এক বছর বয়স হওয়ার পর সোহানকে বল কিনে দেন দাদা শাহ আলম। সেই থেকেই তার ফুটবলের প্রতি আগ্রহ। খেলার প্রতি তার যে আগ্রহ তা দেখে আমরা সবাই খুবই আনন্দিত। প্রতিদিনই অনেক লোকজন বাড়িতে তার খেলা দেখার জন্য আসে। আমার ছোট এই নাতি বড় খেলোয়াড় হবে এটাই আমাদের স্বপ্ন। 

বাবা মো. সোহেল প্রধানিয়া বলেন, সোহানের ফুটবল খেলার চর্চা ও প্রশিক্ষণ আমার হাতেই। আমাদের এলাকায় খেলার মাঠ নেই। আর আমি সাইকেল মেরামতের কাজ করি। সেখানেই সড়কের পাশে এবং আমার বাড়ীর উঠানে সে ফুটবল খেলে। 

মতলব উত্তর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ক্রিকেটার মো. শামছুজ্জামান ডলার বলেন, লোকমুখে সোহানের ফুটবল খেলার বিষয়ে জানতে পেরে তার বাড়িতে আসি। একজন ক্ষুদে ফুটবলারের ফুটবলের প্রতি এমন ভালবাসা খুবই বিস্ময়কর। তার এই প্রতিভা আল্লাহ প্রদত্ত। কারন এতো ছোট বয়সে কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়া এমন নৈপুণ্য দেখাতে পারা সহজ বিষয় নয়। বলের প্রতি তার অসম্ভব নিয়ন্ত্রণ। কয়েকজনের সাথে তার খেলা দেখে আমি রীতিমত বিস্মিত হয়েছি। তাকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। কারণ তার বাবা একজন দরিদ্র মানুষ এবং সাইকেল মেকানিক। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সোহান একদিন নিজস্ব প্রতিভা দিয়ে দেশের ফুটবলকে সহযোগিতা করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের দাবিতে ছাত্রশিবিরের স্মারকলিপি প্রদান
সৌদি আরবে অপহরণ, দেশে মুক্তিপণ আদায় চক্রের সদস্য গ্রেফতার
কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
রাজধানীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১১
সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া
রাজধানীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও যানজট নিরসনে ডিএমপির বিশেষ অভিযান
ঢাবির জগন্নাথ হলে সংহতির বাংলাদেশ নাইট ফুটসাল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন সামান্য বৃদ্ধি
অক্টোবর মাসে ডিএমপির সেরা হলেন যারা
বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ 
১০