বাসস
  ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৫৮

ফিলিপাইনে ট্রামি ঝড়ের আঘাতে ৪০ জনের প্রাণহানি

ঢাকা, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): ফিলিপাইনে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়  ট্রামি আঘাত হানলে এতে কমপক্ষে ৪০ জনের প্রাণহানি ও বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ম্যানিলা থেকে এএফপি জানায়,উদ্ধারকর্মীরা শুক্রবার বাড়ির ছাদে আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিছু এলাকায় মাত্র দুই দিনে দুই মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঝড়টি ভোরে ফিলিপাইন ছেড়ে দক্ষিণ চীন সাগরের উপর দিয়ে পশ্চিমে যাত্রা করেছে।

বন্যায় কোনো কোনো এলাকার রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়েছে। ঝড়ের কারণে কয়েকটি শহরের অর্ধাংশ কাদামাটির নিচে চাপা পড়েছে। 

বৃহস্পতিবার রাতে এক সরকারি সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রবল বন্যার মুখে ১,৯৩,০০০  লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যাদের অধিকাংশ দেশটির বিকোল অঞ্চলের। অঞ্চলটির ৩০ সহস্রাধিক মানুষ বুধবার আকস্মিক প্রবল বন্যার মুখে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।

অনেকে এখনও তাদের বাড়ির ছাদে আটকা পড়ে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করছেন। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত বিকোল অঞ্চলের পুলিশ পরিচালক আন্দ্রে ডিজন এএফপিকে বলেন, ‘যেহেতু বৃষ্টি থেমে গেছে আমরা আশা করছি আজ বন্যা কমে যাবে।’

রাজধানী ম্যানিলার দক্ষিণে বাতাঙ্গাস প্রদেশের, পুলিশ স্টাফ সার্জেন্ট নেলসন কাবুসো এএফপিকে বলেন, সাম্পালোক গ্রামে ছয়টি অজ্ঞাত লাশ পাওয়া গেছে। গতকাল ওই এলাকাটি আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরো হতাহতের  সন্ধানে আমাদের লোকজন সেখানে রয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, প্রদেশের অনেক এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পৌঁছতে পারেনি।

পুলিশ কর্পোরাল অ্যালভিন ডি লিওন জানান, সুবিক ইলায়ার উপকূলীয় গ্রামে আকস্মিক বন্যায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

লুজোনের প্রধান দ্বীপ জুড়ে সরকারি অফিস ও স্কুলগুলো শুক্রবার বন্ধ ছিল। পশ্চিম উপকূলে এখনও ঝড় বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। সেখানে সম্ভাব্য ঢেউয়ের উচ্চতা দুই মিটার। এএফপির সাংবাদিকরা শুক্রবার রাজধানীর দক্ষিণে একটি জলমগ্ন মহকুমা পরিদর্শন করেছেন।

বাতাঙ্গাসের  প্রাদেশিক আবহাওয়া সংস্থার বিশেষজ্ঞ  জোফ্রেন হাবালুয়াস এএফপিকে জানান, প্রদেশটি ২৪ ও ২৫ অক্টোবরের মধ্যে দুই মাসের সমপরিমাণ ৩৯১.৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত  রেকর্ড করেছে।

ম্যানিলা জুলাইয়ে টাইফুন গেইমির কারণে সৃষ্ট প্রবল বন্যা কাটিয়ে ওঠে।

প্রতি বছর প্রায় ২০টি বড় ঝড় ও টাইফুন ফিলিপাইন বা এর আশেপাশের সমুদ্রে আঘাত হেনে বাড়িঘর,অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ঝড়গুলো উপকূলরেখার কাছাকাছি আরো দ্রুত তীব্র আকারে আঘাত হানছে এবং অঞ্চলের স্থলভাগের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে।