দুই রাষ্ট্র সমাধান ‘প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে’: জাতিসংঘ মহাসচিব

বাসস
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২২:২৯
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): ফিলিস্তিন প্রশ্নে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ‘প্রায় একটি অপ্রতিরোধ্য সংকটসীমায় পৌঁছে গেছে’ বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ  থেকে সিনহুয়া জানায়, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বিতর্কে মঙ্গলবার দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, অঞ্চলটি এক মৌলিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে—যেখানে সহিংসতা ও অস্থিরতার পাশাপাশি সম্ভাবনাও রয়েছে। কিন্তু টেকসই শান্তির জন্য একটি কেন্দ্রীয় প্রশ্ন রয়ে গেছে: ফিলিস্তিন ও ইসরাইলকে নিয়ে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র, যারা একে অপরের পাশে শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাস করবে, এবং যাদের রাজধানী হবে জেরুজালেম।

তবে এই দুই রাষ্ট্র সমাধানের প্রতিশ্রুতি আজ ‘প্রায় বিলুপ্তির পথে’ এবং ‘এই বহুল আলোচিত লক্ষ্যের প্রতি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দূরে অবস্থান করছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মহাসচিব জানান, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে—গাজায় অব্যাহত সংঘর্ষ ও ধ্বংস, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সামরিক অভিযান এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। এসব ঘটছে দায়মুক্তির এক পরিবেশে।

গুতেরেস বলেন, ‘বিশ্ব বসে থেকে দুই রাষ্ট্র সমাধানের অবলুপ্তি দেখতে পারে না।’ তিনি জোর দেন, রাজনৈতিক নেতাদের সামনে এখন তিনটি পথ: নীরব থাকা, আত্মসমর্পণ করা, কিংবা সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া।

ইসরাইলি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মানবিক সাহায্যকে সামরিক চাপের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের যে বক্তব্য এসেছে, তা নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ইউএনআরডব্লিউএসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তায় কোনো বাধা থাকা উচিত নয়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজন সব জিম্মির তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত মুক্তি। এবং প্রয়োজন একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি।’

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন রক্ষায় নিজেদের প্রভাব খাটাতে হবে, যাতে দায়মুক্তির সংস্কৃতি চলতে না পারে। সব পক্ষকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে।

মহাসচিব বলেন, দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরাইলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে—জনসংখ্যার খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ প্রদান এবং জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থার কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়া।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব হলো এই অবিরাম দখলদারি ও সহিংসতা ঠেকানো।

আগামী জুনে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠেয় উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনকে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন। সেখানে আন্তর্জাতিক সমর্থনকে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মহাসচিব বলেন, ‘এটা কেবল বক্তব্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এখন সাহস দেখাতে হবে—রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ এই প্রশ্ন শুধু ফিলিস্তিনি বা ইসরাইলিদের জন্য নয়, সমগ্র অঞ্চলের এবং মানবতার জন্য।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রিভিউ শুনানি আবার আগামীকাল
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিল ১০ সেপ্টেম্বর
চুয়াডাঙ্গায় মেয়াদোত্তীর্ণ টেস্টিং কিট সংরক্ষণে জরিমানা
খুলনা বিসিডিএস’র ফার্মেসি কাউন্সিলের কোর্স চালুসহ ৬ দফা বাস্তবায়নের দাবি
শেরপুর সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য জব্দ
ডাকসু নির্বাচনে ৮ কেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা, হলে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ
ঝিনাইদহে সোনালি আঁশের খুশিতে সোনালি হাসি
ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শুরু
মাংস আমদানির কথা ভিত্তিহীন : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
অস্থির বিশ্বে চীন-রাশিয়া সম্পর্ক 'সবচেয়ে স্থিতিশীল': সি
১০