ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে রাতভর চলা সংঘর্ষের পর বুধবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে ত্রিপোলিভিত্তিক জাতীয় ঐক্য সরকার (জিএনইউ)। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে নগরীর কেন্দ্রস্থল ও আবাসিক এলাকায়, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা ও উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছে।
ত্রিপোলি থেকে সিনহুয়া জানায়, প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দেবাইবার অনুগত বাহিনী ‘৪৪৪ ব্রিগেড’-এর সঙ্গে বিশেষ প্রতিরোধ বাহিনীর প্রধান আবদেল রউফ কারার অনুগত মিলিশিয়াদের মধ্যে এই লড়াই শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের গোলাগুলি বুধবার সকাল পর্যন্ত চলতে থাকে। লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনো জানা যায়নি।
জাতিসংঘের লিবিয়া সহায়তা মিশন এই সহিংসতা এবং বেসামরিক এলাকায় হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, বেসামরিক নাগরিক ও অবকাঠামোর ক্ষতি আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
জিএনইউ’র প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, দুপুর নাগাদ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং সংঘর্ষস্থলগুলোতে পৃথকীকরণ ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার দেবাইবার অনুগত বাহিনী এবং স্ট্যাবিলিটি সাপোর্ট অ্যাপারেটাস (এসএসএ)-এর মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হয়। ওইদিন এসএসএ কমান্ডার আবদেল ঘানি আল-কিকলি, যিনি ‘ঘানিওয়া’ নামে পরিচিত, নিহত হন।
নিরাপত্তা সূত্র জানায়, ঘানিওয়া নিহত হন ৪৪৪ ব্রিগেডের নিয়ন্ত্রিত একটি কেন্দ্রে। ব্রিগেডটি দেবাইবার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতমাহমুদ হামজার নেতৃত্বাধীন। তার মৃত্যুর জেরে প্রতিশোধমূলক হামলা ছড়িয়ে পড়ে, যাতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়।
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লিবিয়া বিভক্ত হয়ে আছে। পূর্বাঞ্চলীয় সরকার লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এলএনএ)-এর প্রধান খালিফা হাফতারের সমর্থনে পরিচালিত হলেও, পশ্চিমাঞ্চলভিত্তিক সরকারকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে পশ্চিমাঞ্চলীয় এই সরকারেও প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই অব্যাহত রয়েছে।