ঢাকা, ১৫ মে, ২০২৫ (বাসস): বর্তমানে বিদেশি বাজারে ব্যাপক চাহিদার কারণে কিউবার একমাত্র চুরুট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উৎপাদন সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এসব চুরুট কিউবার বিশ্ববিখ্যাত হাতে তৈরি চুরুটের তুলনায় দামে সস্তা হলেও জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে নেই। হাভানা থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল কিউবানা ডি তাবাকোস এস.এ. (আইসিটি) কারখানাটি সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা দিয়ে প্রতিদিন ৮ লাখ চুরুট তৈরি করছে। তবুও চাহিদার ঘাটতি পূরণে এটি এটি যথেষ্ট নয়।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কিউবার প্রবেশাধিকার না থাকার পরেও গত দুই দশকে রপ্তানি বেড়েছে দশগুণ, যদিও বিশ্বজুড়ে ধূমপানের ওপর বিধিনিষেধ আরও কঠোর হয়েছে।
আইসিটি’র সভাপতি রিকার্দো সোলের এএফপিকে বলেন, আজ আমাদের একটি সমস্যা রয়েছে—যা মূলত সুখের সমস্যা। আমাদের গুদামঘর, সমাপ্ত পণ্যের মজুত—সবই শূন্য। যা কিছু উৎপাদন করছি, সবই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
তিনি জানান, ইউরোপে এবং ক্রমবর্ধমান হারে এশিয়াতেও এর চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত নয়। আইসিটি একটি আধা-রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিসেবে স্পেনের তাবাকালেরা কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত হয়।
২০০১ সালে এই কোম্পানি ২ কোটি ৫৪ লাখ চুরুট বিক্রি বরেছে, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২০ কোটিতে। ওই বছর সংস্থার মোট আয় ছিল ৩ কোটি ৮ লাখ মার্কিন ডলার।
কিউবার বিখ্যাত হাতে মোড়ানো ‘হাবানোস’ চুরুটের তুলনায় সিগারিলো সাধারণত কম আয়ের ভোক্তাদের জন্য তৈরি।
বিশ্ববাজারে কিউবার চুরুটের চাহিদাও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। ২০২৪ সালে বিক্রি হয়েছে ৮২৭ মিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছরের (২০২৩ সালোর) তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। বিলাসবহুল পণ্যের প্রতি এশিয়ার চাহিদাই এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। চুরুট কিউবার প্রধান রপ্তানি পণ্যের অন্যতম।
রসিকতা করে আইসিটি’র সভাপতি রিকার্দো সোলের বলেন, ‘হাবানো রাজা, আর আমরা রাজপুত্র।’ ২০০১ সালে স্থাপিত আইসিটি কারখানায় প্রায় ৪০০ জন কর্মী কাজ করেন, যেখানে ৬৪টি মেশিন দিয়ে সপ্তাহের সাত দিন চুরুট উৎপাদন হয়।
২৪ বছর বয়সী শ্রমিক রিসেল বারবারা ফুয়েন্তে বলেন, ‘আমি আমার মেশিনটিকে ভালোবাসি।’ তিনি মাসে ১১,২০০ পেসো (প্রায় ৯৩ মার্কিন ডলার) আয় করেন, যা কিউবার গড় বেতনের প্রায় দ্বিগুণ।
অন্যান্য শ্রমিকের মতো তিনিও প্রতি মাসে একটি ভর্তুকিপ্রাপ্ত খাদ্য ও পরিচ্ছন্নতা সামগ্রীর ঝুড়ি পান, যার বাজারমূল্য তার বেতনের তিনগুণ।
সোলের আরও জানান, ২০২৫ সালের জন্য ‘ব্যাপক বিনিয়োগের’ পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে।