ঢাকা, ১৫ মে ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্র সরকার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অনুদান হ্রাসের ঘোষণা দেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি ‘জরুরি গবেষণার’ জন্য ২৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেবে বলে জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, বিশ্বসেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে ফেডারেল সংস্থাগুলো হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ ২.৬ বিলিয়ন ডলার অনুদান ছাঁটাই করছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে বেআইনি হস্তক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে হার্ভার্ড আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
বুধবার হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার ও প্রোভোস্ট জন ম্যানিং এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘যদিও আমরা স্থগিত বা বাতিল হওয়া ফেডারেল অর্থায়নের সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করতে পারব না, তবু একটি রূপান্তরকালীন সময়ের জন্য জরুরি গবেষণাগুলো চালিয়ে নিতে আমরা আর্থিক সংস্থান কাজে লাগাব।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের গবেষকদের সঙ্গে মিলে বিকল্প অর্থায়ন খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাব।’
বিবৃতিতে ‘বেআইনি অনুদান স্থগিত ও বাতিল’-এর সমালোচনা করে বলা হয়, এতে ‘জীবনরক্ষাকারী গবেষণা বন্ধ হয়ে গেছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই বছরের পর বছর ধরে চলা গুরুত্বপূর্ণ কাজ নষ্ট হয়ে গেছে।’
২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী ৫৩.২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের তহবিল নিয়ে হার্ভার্ড যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ধনী বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি প্রক্রিয়া, নিয়োগনীতি ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপের ট্রাম্প প্রশাসনের দাবিকে হার্ভার্ড প্রত্যাখ্যান করায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হন।
এর জের ধরে গত মাসে প্রশাসন হার্ভার্ডের জন্য নির্ধারিত ২.২ বিলিয়ন ডলার অনুদান স্থগিত করে এবং গত মঙ্গলবার আরও ৪৫০ মিলিয়ন ডলার ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়।
হোয়াইট হাউস যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর একাধিক বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রশাসনের ভাষায়, এর লক্ষ্য হলো ‘নিয়ন্ত্রণহীন ইহুদি-বিদ্বেষ রোধ করা’ এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি অতীতের নিপীড়নের প্রেক্ষিতে গৃহীত বৈচিত্র্য-ভিত্তিক কর্মসূচি বাতিল করা।
তারা গাজা যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে জড়িত বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল ও দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগও নিয়েছে, যাদের ‘ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে সমর্থন করার’ অভিযোগ করা হচ্ছে।
বৈচিত্র্যবিষয়ক ট্রাম্পের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা রক্ষণশীল সমালোচনারই প্রতিফলন, যেখানে বলা হয়, এসব বিশ্ববিদ্যালয় অতিমাত্রায় উদারপন্থী, ডানপন্থীদের উপেক্ষা করে এবং সংখ্যালঘুদের পক্ষ নেয়।