
ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ‘নিবন্ধন আইন (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা আজ শনিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অ্যাটর্নি জেনারেল ভবনে সলিসিটর কার্যালয়ের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভাটি পরিচালনা করেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা।
এতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাসদার হোসেন, আইন কমিশন সচিব সৈয়দ আজাদ সুবহানী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক কাজী আব্দুল হান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড বোরহান উদ্দিন খান, আইন বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল কনসালটেন্ট ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওনসহ আরো অনেকে।
বিচারপতি জিনাত হক বলেন, এমন অনেক আইন আছে যার কোনো বিধিমালা নেই। যেমন, শিশু আইন, ২০১৩ বা অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩- এরকম অনেক আইনের জন্য এখনো বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। আইন প্রণয়নের পর একটি বিধিমালা প্রণয়ন করা যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি যথেষ্ট সময় নিয়ে উক্ত বিধিমালাগুলো তৈরি করা।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আমরা যেকোনো আইন সংশোধন খুব দ্রুত করে ফেলি, অনেক সময় ঠিকমতো রিসার্চ ওয়ার্ক করি না। অংশীজনের অভিমত গ্রহণ করি না। অনেক সময় দেখা যায়, নতুন যে আইনটা করা হলো তার সঙ্গে কোথাও হয়ত সংবিধানের অসামঞ্জস্য রয়ে গেছে।
তিনি জানান, অনেক আগে যখন আইন প্রণয়ন করা হতো তখন সে আইনটি নিয়ে কাজ করতে সমস্যা না হলেও সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছু বদলে গেলে পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কেউ কখনো এসব ব্যাপার চ্যালেঞ্জও করেনি, বদলায়ওনি। চাইলে এই জিনিসগুলো খুব ভালোভাবে ধীরে সুস্থ দেখে, সুন্দরভাবে করা যায়। এভাবেই এটা এই অধ্যাদেশের জন্য করা হবে বলে আমি মনে করছি।
আলোচনায় উপস্থিত বক্তারা কীভাবে এই অধ্যাদেশটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত করা যায় সে সম্পর্কে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের বক্তারা নিবন্ধন ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশন করার সুপারিশ করেন। সেইসঙ্গে একটি ডিজিটালাইজড ক্লাউড সিস্টেম ও তথ্য সংরক্ষণের যথাযথ পরিচালনা করতে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান।
নিবন্ধন সংক্রান্ত ডিজিটাল তথ্যসমূহকে সুরক্ষিত রাখতে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার আহ্বান জানান বক্তারা।
আলোচনায় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অথবা ভুয়া তথ্যের মাধ্যমে যারা এ আইনের অধীনে মামলা করবেন, তাদের শাস্তির বিধান রাখার সুপারিশ করা হয়।
সেইসঙ্গে উপস্থিত বক্তারা বলেন, এক জমি বারবার বিক্রয়ের জালিয়াতি রোধে জমি বিক্রি করতে হলে ক্রেতার নিজের নামে খতিয়ান রাখা বাধ্যতামূলক করা অত্যন্ত জরুরি।
তেমনি প্রয়োজন জরুরি নিবন্ধন নিতে আসা মানুষের সময়, শ্রম ও ভোগান্তি নিরসনে একটি যথার্থ আইন প্রণয়ন। যেটি হবে বাস্তবসম্মত ও দীর্ঘমেয়াদে সুফলদায়ক।