বাসস
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৩
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৯

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ১০০ একর জমির উপর গড়ে উঠছে প্লাস্টিক শিল্প পল্লী

ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ১০০ একর জমির উপর গড়ে উঠছে দেশের অন্যতম রফতানিমুখী প্লাস্টিক শিল্প পল্লী। নিরাপদ পরিবেশের স্বার্থে দেশের ছোটবড় প্লাস্টিক শিল্পকারখানাগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে আসার সরকারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এখানে এই জমি বরাদ্দ দিয়েছে। 
আজ ঢাকায় বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক এসোসিয়েশন (বিপিজিএমই)-এর এক সেমিনারে জানানো হয়, দেশে প্রায় ছোট বড় সাড়ে পাঁচ হাজার প্লাস্টিক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ১২ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করে থাকে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্পও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বিরাট অবদান রাখতে পারে। ২০২৩ সালে এই খাতে বছরে প্রায় ২১০ মিলিয়ন ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। 
 সেমিনারে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই প্লাস্টিক শিল্প পল্লীতে জমির মূল্য বেশি হওয়ায় কারখানার মালিকরা সেখানে যাচ্ছে না। 
সেমিনারে সরকার ও মালিক পক্ষ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে প্লাষ্টিক দ্রব্য উৎপাদন ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা এবং করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন। কারখানার পরিবেশ ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরপাত্তা এবং দেশের আইন বিধি, শ্রমিক ও মালিকদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে সেমিনারে আলোচনা করা হয়। 
সেমিনারে সার্ক চেম্বারস অব কর্মাসের সভাপতি, বেঙ্গল প্লাস্টিক কারখানার মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিক শিল্প পল্লীর জন্য সরকারের বরাদ্দ দেয়া এই জমির মূল্য বেশি হওয়ায় অনেকেই জমি ক্রয় করতে পারছেন না। ফলে, প্লাস্টিক কারখানা সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ পিছিয়ে পড়ছে। ছোট বা মাঝারি ধরনের মালিকরা জমির দাম দিতে পারছে না। তবে, যেসব মালিকরা দাম দিয়ে জমি নিতে পারেন তাদেরকে দ্রুত যেতে হবে। অন্যথায় তাদের কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে কিছুই করার থাকবে না। 
তিনি বলেন, দেশের পোশাক খাতের ৪৪ হাজার কারখানার মধ্যে ৫ হাজার ২০০ ফ্যাক্টরিতে এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা বিষয়ে একটি জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে ১০৬টি কারখানা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই ১০৬টি কারখানার মালিকদের সময় দেয়া হয়েছে কারখানার কাঠামোসহ সকল বিষয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। যদি তা না হয় তবে তাদের কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। 
 দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুরনো ঢাকা থেকে সব ধরনের কেমিক্যাল কারখানাসহ প্লাস্টিক কারখানা সরিয়ে নেয়ার উল্লেখ করেন তিনি বলেন, পুরানো ঢাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কেমিক্যাল ও প্লাস্টিক কারখানার কোন লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে না। যদি অবৈধ কারখানাগুলো অবিলম্বে নির্ধারিত স্থানে সরিয়ে নেয়া না হয়, তবে, যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 
বাংলাদেশ কলকারাখানা পরিদর্শন ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক মতিউর রহমান বলেন, দেশে ছোট বড় প্রায় ১৪ হাজার কেমিক্যাল ও প্লাস্টিক কারখানা রয়েছে। এসব ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকদের কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সব ফ্যাক্টরিতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। 
সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, এ শিল্পের পণ্য দেশের আভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৯০ ভাগ পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে এবং এর রপ্তানী প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৭ শতাংশ। প্লাস্টিক শিল্প খাতে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন। 
রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে কে এম ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. খন্দকার গোলাম মোয়জ্জেম, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টের তৌমো পৌতিয়েইনেন এবং বিশিষ্ট প্লাস্টিক বিশেষজ্ঞ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।