শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে সরকার বদ্ধপরিকর। জলাতঙ্ক বিষয়ক গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিতে ২০৩০ সালের মধ্যে জলাতঙ্কমুক্ত বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।
আগামীকাল ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২৩’ উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আমশরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘জলাতঙ্কের অবসান, সকলে মিলে সমাধান’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ‘জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি, ২০১১’ প্রণয়ন করেছে। একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সারাদেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত সাড়ে ১৪ বছরে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব-৫ বছর বয়সী শিশুর মৃত্যুহার, অপুষ্টি, খর্বতা, কম ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ (এসডিজি) অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি, কোভিড-১৯ অতিমারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা কয়েকটি কর্মপন্থা ও কৌশল অবলম্বন করি, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। মহামারি রিকভারি সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম স্থান এবং সারাবিশ্বে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। করোনা ভ্যাকসিন প্রদানেও বিশ্বের প্রথম সারির ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান। স্বাস্থ্যখাতের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ অর্জন করেছে এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড, গ্যাভি অ্যাওয়ার্ড ও ভ্যাকসিন হিরো অ্যাওয়ার্ড।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে আসছে। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআইটিআইডি হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, মহাখালী এবং জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ব্যাপক হারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আক্রান্তদের চিকিৎসা ও টিকা প্রদানের পাশাপাশি কুকুরের টিকা দান (এমডিভি) এবং কুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণ মাধ্যমে দেশকে জলাতঙ্কের ঝুঁকি থেকে মুক্ত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এ ক্ষেত্রে তিনি সরকারি কার্যক্রমের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের কার্যকরী ভূমিকা আহ্বান করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সক্ষম হব।’