শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার নিউইয়র্কে ‘জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক’ আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে দেশে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আমাদের আগামী প্রজন্মের কল্যাণে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ রেখে যাওয়ার জন্য অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। আমাদের দেশ যেন আর পিছিয়ে না যায় সেজন্য দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলের দূরদর্শী ভূমিকা রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সব বাড়িতে এখন বিদ্যুৎ আছে। ২০০৯ সালে যেখানে ৩২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো, মাত্র ৯% মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেতো। আর গত ১৪ বছরে এখন প্রায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষি জমি কমে গেছে কিন্তু তারপরও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। আর এসব অর্জন এমনিতেই হয়নি। শেখ হাসিনার লক্ষ্যভিত্তিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে সম্ভব হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে গবেষণা, কৃষিতে ভর্তুকি প্রদানসহ সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। এখন ধান উৎপাদনে আমরা বিশ্বে চতুর্থ স্থানে, আর স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে এবং সবজি উৎপাদনেও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছি। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার হার প্রায় শতভাগ, দারিদ্রের হার আমরা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘২০৩০ সালে মধ্যে আমরা দেশকে দারিদ্রমুক্ত করবো সেই লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান আমাদের জন্য একটা বড় ইস্যু। প্রতি বছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ চাকরির বাজারে আসে। তার মধ্যে আমরা দেশে ১৫ লক্ষের চাকরির সংস্থান করতে পারি। বাকি ৫ লক্ষ বিদেশে চাকরি করতে যায়। দেশে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’
ড. মোমেন বলেন, ‘আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। তবে সকলের সহযোগিতায় আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো। আমাদের সরকারের আন্তরিকতা আর দীর্ঘদিন দেশে স্থিতিশীলতা থাকায় আমরা দেশকে অনেক দূর অগ্রসর করতে পেরেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় ৫ গুণ বেড়েছে। ২০০৯-১০ বছরে আমাদের রপ্তানি আয় ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ বিলিয়ন ডলার। তখন রেমিট্যান্স ছিল ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার আর এখন ২৪ বিলিয়ন ডলার।’ প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। যতগুলো সামাজিক সূচক আছে সবগুলোতে আমরা প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় ভালো করছি।
ড. মোমেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নেতৃত্বের ঐক্য বজায় রাখতে এসোসিয়েশনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান। সিলেটের তথা দেশের কল্যাণে নিজেদের সাধ্যমতো অবদান রাখতেও অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মতবিনিময় সভায় ‘জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক’ এর নেতৃবৃন্দ, নিউইয়র্কে বসবাসকারী বৃহত্তর সিলেটের জনগণ এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।