বাসস
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:১৩
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৩৬

পুলিশ জনগণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন পুলিশ জনগণের পুলিশ হবে। আজকে কিন্তু পুলিশ জনগণের পুলিশ হয়েছে। জনগণের জন্য তারা সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। 
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন। 
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বক্তব্য দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আরও বিশ বছর আগে পুলিশের কথা যদি চিন্তা করি, সে সময় মানুষ পুলিশকে ভয় পেত। আজকে কিন্তু সাধারণ মানুষ পুলিশের ওপর আস্থা, বিশ্বাস রাখছে, কোনো প্রয়োজন হলে মানুষ পুলিশের কাছে যাচ্ছে। কোভিডের সময় আপনারা দেখেছেন মায়ের মরদেহ সন্তান ফেলে রেখে গেছে। পুলিশই তাদের শেষ কার্যটি সম্পন্ন করেছে।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের ৫০টি থানা ৩৪ হাজার জনবল নিয়ে ঢাকায় বসবাস করা নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশের মোট জনবল দুই লাখ ১০ হাজারের বেশি। প্রতিটি পুলিশ ৮২৫ জন মানুষকে নিরাপত্তা দিচ্ছে। ডিএমপির যতগুলো ইউনিট আছে সবগুলো সুন্দরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল সেজন্য আমরা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গঠন করি। আমরা সাইবার ইউনিট তৈরি করেছি, ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার গড়ে তুলেছি ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রের জন্য ট্রাফিক ইউনিট করেছি- যা ডিএমপির কমিশনারের অধীনে কাজ করে যাচ্ছে। 
মন্ত্রী বলেন, এই জায়গায় এসে মনে হয় সেই দিনের (২৫ মার্চ) কথা। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চে যে ডাক দিয়েছিলেন, সেই ডাকে পুলিশ বাহিনী নিজের জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলো। অনেক পুলিশ সদস্য সেদিন শহিদ হয়েছিলেন। 
ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রের কাছে জায়গা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন,  ট্রাফিক সার্জেন্টরা ভয়ানক অসুবিধায় থাকে। তাদের জন্য যদি মাঝে মাঝে বিশ্রামের জন্য যদি একটু জায়গা করে দেন। তবে এতে করে ডিএমপি আরও এগিয়ে যাবে, তাদের সেবার পরিধি বাড়বে। আরও দক্ষতার সবকিছু মোকাবিলা করবে এই আস্থা ও বিশ্বাস রাখি। 


পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, থানাকে নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে দেখতে চাই। এক্ষেত্রে ডিএমপিকে এগিয়ে এসে এ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। 
আইজিপি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ জনসাধারণের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করেছে যা অতুলনীয়। জঙ্গিবাদ, সাইবার ক্রাইমসহ নাশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। ডিএমপি নাগরিকসুলভ মনোভাব যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছে। 
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ১২ টি থানা ও ৬ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নগরবাসীর আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে আজ ৫০ টি থানা ও ৩৪ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডিএমপি।
তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে অপরাধের ধরণ। ডিএমপি অতি দক্ষতার সঙ্গে এসব অপরাধকে মোকাবিলা করেছে। এসব অপরাধ দমনে ক্রাইম বিভাগের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া জঙ্গি দমনেও দক্ষতার পরিচয় দেখিয়েছে ডিএমপি। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম জঙ্গিবাদকে সফলতার সঙ্গে দমন করেছে। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল।  
এছাড়া গুজব ও সাইবার ক্রাইমের মতো অপরাধ ডিএমপি সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করে যাচ্ছে। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ডিএমপি ওয়ান স্টপ সাইবার সেন্টার চালু করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, নারী ও শিশু সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে নারী ও শিশুদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে নারীরা নারী পুলিশের কাছ থেকে সেবা নিতে পারছেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, যানজট ঢাকা শহরে অন্যতম একটি সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে সকল সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা এমন একটি ‘ঢাকা’ করতে চাই সেখানে উত্তরা থেকে ১৫ মিনিটে গুলিস্তান আসা যায়। সকলের সহযোগীতায় আমরা স্মার্ট ডিএমপি করতে চাই। আমরা এমন একটি ডিএমপি করতে চাই- যেখানে একজন নারী রাত ৩টায় রাস্তা দিয়ে চলাচল করলেও তার যেন মনে হয় যে, তার নিরাপত্তায় রাস্তায় একজন পুলিশ সদস্য আছে।