বাসস
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৭

গোপালগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা


॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): গোপালগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ জেলায় আগাম জাতের সরিষা আরো ১০ দিন আগে  কাটা শুরু হয়েছে। আগাম জাতের সরিষা প্রতি হেক্টরে ১.৮ টন থেকে ১.৮৫ টন ফলন দিয়েছে। এছাড়া উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা মাঠে ভালো দেখা যাচ্ছে। তাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর  গোপালগঞ্জ জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করেছে।
গোপালগঞ্জে এ বছর ৪ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। গত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে গোপালগঞ্জে ৪ হাজার ৫৭০ হেক্টরে সরিষার আবদ হয়েছিল। এবছর সে হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলায়  ৪১০ হেক্টরে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত বছর ৪ হাজার ৫৭০ হেক্টরে  উৎপাদিত হয়েছিল ৫ হাজার ৯৪১ টন সরিষা। এ বছর  ৪ হাজার ৯৮০ হেক্টরে  ৬ হাজার ৪৭৪ টন সরিষা উৎপাদিত হবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৫৩৩ মেট্রিক টন সরিষা বেশি উৎপাদিত হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার  সরদার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বাসসকে বলেন,  এ বছর  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫৮৫ হেক্টরে, মুকসুদপুর উপজেলায় ১ হাজার ৬১৩ হেক্টরে, কাশিয়ানী উপজেলায় ১ হাজার ১৯০ হেক্টরে, কোটালীপাড়া উপজেলায় ২৫৭ হেক্টরে ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৩৩৫ হেক্টরে সরিষার আবাদ হয়েছে। ৪১০ হেক্টরে সরিষার আবাদ বেড়েছে।  তাই এ বছর জেলায় ৫৩৩ মেট্রিক টন সরিষা বেশি উৎপাদিত হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, চলতি অর্থ বছরে  গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় ৬ হাজার ২০০ জন কৃষককে বিনামূল্যে প্রণোদনার সরিষা বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। প্রত্যেক কৃষককে ১ কেজি করে সরিষার বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি ও  ১০ কেজি করে এমওপি সার প্রদান করা হয়। মোট ৬ হাজার ২০০ কেজি সরিষার বীজ, ৬২ হাজার কেজি ডিএপি ও ৬২ হাজার কেজি এমওপি সার দিয়ে কৃষক ৬ হাজার ২০০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেন। এ কারণে গোপালগঞ্জ জেলায় সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর সরিষার  ফলনও বেশি হবে। এতে ভোজ্য তেলর আমদানী নির্ভরতা কিছুটা হলেও কমাবে। কৃষক সরিষার ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, এ বছর আবহাওয়া সরিষা আবাদের অনুকূলে ছিল। তাই কৃষক সদর উপজেলার ১ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছে। ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়নি। তাই কৃষক মাঠ থেকে আগাম জাতের সরিষা কেটে বাম্পার ফলন পাচ্ছেন বলে আমাদের জানাচ্ছেন। আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে সরিষা কাটা শেষ হবে। তখন পুরো তথ্য পাওয়া যাবে। তারপরও মাঠের সরিষা দেথে মনে হচ্ছে, এবছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
পুরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) গোপালগঞ্জ উপ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম আকন্দ বলেন, বিনা সরিষা-১১ এ বছর প্রথম গোপালগঞ্জের ১০০ বিঘা জমিতে কৃষক পরীক্ষামূলক আবাদ করেন। আরো ১০ দিন আগে এ সরিষা কাটা শুরু হয়েছে। প্রতি হেক্টরে কৃষক এ সরিষা ১.৮৫ টন ফলন পেয়েছেন। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন উচ্চ ফলনশীল এ জাতের সরিষা আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছেন। এ সরিষায় তেলের পরিমান ৪৪ ভাগ। এ সরিষার আবাদ ছড়িয়ে দিতে
পারলে দেশে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।  আমদানী নির্ভরতা কিছুটা হলেও কমবে। এ সরিষা ক্ষেত থেকে কেটে কৃষক এখন বোরাধান চষাবাদ করছেন।