বাসস
  ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৫৫

গুলশানে এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মী খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত গ্রেফতার

ঢাকা, ২২ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস): রাজধানীর গুলশান এলাকায় মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ড হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগ। 
তার কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, এটিএম বুথ ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও শাবল উদ্ধার করা হয়।
আজ সোমবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১০ এপ্রিল ভোরে গুলশান থানার শাহজাদপুর প্রগতি সরণি মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে স্থাপিত মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ড হাসান মাহমুদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মাহফুজুর রহমান রুমেল গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ডিবি প্রধান হারুন বলেন, এ ঘটনায় থানা পুলিশ, সিআইডি এবং অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি ডিবি গুলশান জোনাল টিম মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সনাক্ত করে আরিফুলকে রোববার গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত আরিফুল ইসলাম ইউটিউবের মাধ্যমে ব্যাংক ও এটিএম বুথ ডাকাতির দৃশ্য দেখে কৌশল রপ্ত করে। এরপর সে  খুন করে হলেও এটিএম বুথের টাকা লুট করার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি মার্কেট হতে হাতুড়ি, ছেনি, মিরপুর পল্লবী মিল্লাত ক্যাম্প মোড় হতে চাপাতি, সাবল, চাকু ও মিরপুর স্টেডিয়ামের ফুটপাত হতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একটি জার্সি ক্রয় করে। 
গুলশানে মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে লোক সমাগম কম ও নিরিবিলি মনে হওয়ায় সে ওই এটিএম বুথে টাকা লুটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক আরিফুল গত ১০ এপ্রিল একটি ব্যাগে করে ওই মালামালসহ ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান করতে থাকে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে পর্যবেক্ষণ করে সে এটিএম বুথে প্রবেশ করার সময়ে নিরাপত্তা কর্মী বাধা দিলে তাকে চাপাতি নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর ১০ থেকে ১২ মিনিট চেষ্টা করে এটিএম বুথ ভাঙতে ব্যর্থ হয়ে হাতুড়ি, হেমার, ছেনি, শাবল, চাপাতি, ব্যাগ ইত্যাদি ঘটনাস্থলে রেখে একটি ছোট চাকু নিয়ে চলে যায়।
হত্যার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ২ থেকে ৩ বছর আগে গ্রেফতারকৃত আরিফুল তার বন্ধুদের পরামর্শে ব্যবসার পাশাপাশি ইট, বালি, পাথর সরবরাহের ব্যবসা শুরু করে। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার কারণে সে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তার একটি কিডনি বিক্রির চেষ্টা করে মিরপুর এলাকায় লিফলেট ছাড়ে। কিন্তু কিডনি বিক্রি করতে না পারায় এবং পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদাররা আরিফুলের বাসায় গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। পাওনাদারদের চাপে ও ভয়ে সে গত ৩ থেকে ৪ মাস যাবৎ আত্মগোপন করে। সেই টাকা পরিশোধ করতে আরিফুল এটিএম বুথ লুট করার উদ্দেশ্যে হাসান মাহমুদকে খুন করে।