বাসস
  ২৯ জুলাই ২০২৪, ১৮:৫১

সেতু ভবনে হামলা : আসিফ-আরিফ রিমান্ডে

ঢাকা, ২৯ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 
আজ সোমবার তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদেরকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু সাইদ মিয়া।
অপর দিকে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল এবং জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মাঈনুল ইসলাম তাদের  জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৮ জুলাই প্রতিদিনের মতো সেতু ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথারীতি অফিসের কার্যক্রম করতে থাকেন। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩শ’জন আসামি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতার লক্ষ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে তাদের অফিসের সামনে এসে সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। তারা সেতু ভবনের সিনিয়র সচিবসহ কর্মকর্তাদের পদ পদবি উলে¬খ করে খোঁজাখুঁজি করে হুমকি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে সেতু ভবনে এলোপাথাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামিরা অফিসের মূল ফটক ভেঙে প্রবেশ করে সেতু ভবনের সামনে রক্ষিত জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, নিরাপত্তা ভবন, সিসি ক্যামেরা, পার্কিং শেড, ক্যানটিন, গাড়িচালকদের কক্ষ, আনসার শেড, মুজিব কর্নার, জেনারেটর কক্ষসহ মূল ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময়ে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে সেতু ভবনের সিনিয়র সচিব, অন্য অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মীদের এলোপাথাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করে। 
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, পরবর্তীতে আসামিরা নিচ তলার আনসার শেড, ড্রাইভার শেড হতে চেয়ার টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র এবং সেতু ভবনের ভেতরে নিচতলা হতে ১১ তলা পর্যন্ত অফিসে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে অফিসে রক্ষিত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইল কেবিনেট, এসি, ফ্যান, পানির ফিল্টার, চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সরকারি ও ব্যক্তিগত মালামাল সামগ্রী চুরি করে এবং প্রত্যেক ফ্লোরে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। 
আসামিদের অগ্নিসংযোগে সেতু ভবনের নিচতলা হতে ১২ তলা পর্যন্ত ফ্লোরে রক্ষিত সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, পদ্মা সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুলেন সড়ক টানেল প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, সেতু বিভাগের আওতাধীন সব প্রকল্পের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি, এফডিআর ইনস্ট্রুমেন্ট, টেন্ডার সিকিউরিটি ডকুমেন্টস, ইন্টারনেট সার্ভার, শতাধিক কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, জেনারেটর, ফায়ার এক্সটিংগুইশারসারসহ যাবতীয় নথিপত্র এবং সেতু ভবনের পার্কিংয়ে তা থাকা ৩২টি জিপ গাড়ি, ৯টি পিকআপ, ৭টি মাইক্রোবাস, ১টি মিনিবাস, ৫টি মোটরসাইকেল, ১টি অ্যাম্বুলেন্স ভস্মীভূত হয়। এতে আনুমানিক ৩শ’ কোটি টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। 
এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।