শিরোনাম
ঢাকা, ১৩ আগস্ট ২০২৪ (বাসস) : অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, সকলে মিলে সমাজ সংস্কার করতে হবে, নতুন সমাজ গড়তে হবে। এ কাজে আমাদের বুদ্ধিদীপ্ত তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। আমরা যে সমাজের ভিত রচনা করেছি, তা ঘুণে ধরা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিপ্লবী তরুণদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করবে। এ লক্ষ্যে পিছিয়ে পড়া ও প্রান্তিক তরুণদের সঠিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে হবে। আজ মঙ্গলবার সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিকনির্দেশনা প্রদান বিষয়ক এক সভায় সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ খায়রুল আলম সেখের সভাপতিত্বে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মধুমতি সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, নিজেদের শুধরে ফেলতে হবে।এখানে কোনভাবেই দলীয় রাজনীতি চলবে না। আগের অবস্থায় ফেরত যাওয়া যাবে না। বাস্তবে সবার পরিচয় একটাই, সরকারি কর্মচারী। মেধাভিত্তিক দপ্তর গড়ে তুলতে হবে, এখানে কোন ভাবেই দলীয় রাজনীতি চলবে না। মেধা, বিজ্ঞান ও যুক্তি, এতেই জাতির মুক্তি- এই প্রত্যয় নিয়ে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজ ও দেশ গঠনে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘আমি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে পেয়ে খুশি, কেননা আমার মা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিসভার নারী সদস্য হিসেবে এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে আমার এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসার কথা নয়। আমি মূলত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে থাকি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীনতা ও নিরন্তর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে সৃষ্ট ছাত্র-জনতার সফল বিপ্লবের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব নন্দিত নাবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আমার এ দায়িত্বগ্রহণ।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, আমরা বয়স্করা আমাদের কাজ ঠিক মতো করিনি। আমরা প্রতিনিয়ত ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যার মাশুল বিদায়ী সরকারকে দিতে হয়েছে। বাংলাদেশে প্রতিটি আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সংঘটিত হয়েছে এবং প্রতিটি আন্দোলনই সফল হয়েছে।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর আক্রমণ হলো, ছাত্র-জনতা রুখে দাঁড়ালো, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। আমরা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে দেখলাম ২০২৪-এ এসে। ছাত্ররা মেধার ভিত্তিতে সমাজগড়ার দাবীতে রাস্তায় দাঁড়ালে একদিকে আলোচনার কথা বলা হলো, অন্যদিকে তাদের দাবী উপেক্ষা করে গুলি চালানো হলো। ছাত্রদের এমন মৃত্যু দেখে বাংলাদেশে এমন কোন মানুষ নেই যে চোখের জল ফেলেনি। আর যারা ফেলেনি, তারা হয়তো বুঝতে পারেননি এই আন্দোলনের গুরুত্ব কতো সুন্দর প্রসারী।
এ সভায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও এর আওতাধীন ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন সোপানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।