বাসস
  ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৫৮

অন্তর্বর্তী সরকার জার্মানি, ইইউ’র সাথে সহযোগিতা জোরদার করেছে: জার্মান রাষ্ট্রদূত

ঢাকা, ৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার বলেছেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি নতুন অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্র্বর্তী সরকার দ্বিপাক্ষিকভাবে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে জার্মানির সাথে সহযোগিতার কাঠামো জোরদার করেছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জার্মান সরকার মনে করে যে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিকভাবে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সহযোগিতার কাঠামোতে সহযোগিতার অভিন্ন ভিত্তি আরো বিস্তৃত হয়েছে।’

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় জার্মান দূতাবাসে ‘জার্মান ঐক্য দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও কূটনীতিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, জার্মানি এখন ঢাকার সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নীতি শেয়ার করতে পারে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশের জনগণের সুবিধা, স্বাধীনতা, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র এবং বৃহত্তর সমৃদ্ধি এগিয়ে নিতে যৌথভাবে সুযোগটি কাজে লাগানো যেতে পারে। 

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র হিসেবে আমরা এই মূল্যবোধে বিশ্বাস করি। আমরা দেখেছি যে, বাংলাদেশের সমাজের বড় অংশ এই আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য চূড়ান্তভাবে ব্যক্তিগত ত্যাগ স্বীকার করতে পারে।’

সংহতির গুরুত্ব প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত একজন বাংলাদেশি রাজনীতিকের মন্তব্য উলে¬খ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা ও রুয়ান্ডার মতো দেশের সফল অভিজ্ঞতা এবং ফ্রান্সের সঙ্গে জার্মানির সংহতির নজিরগুলো বাংলাদেশ বিবেচনা করতে পারে বলে উলে¬খ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজ গঠনে অবদান রাখে এমন সংহতির মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত না হওয়ার কোনো কারণ নেই। 

রাষ্ট্র্রদূত বলেন, ‘সমঝোতা অর্জনের জন্য, আমরা সংঘটিত অপরাধ ও ভুলের জন্য দুঃখিত ও ক্ষমা প্রার্থনা করার শব্দ দুটি শুনতে চাই। আমার ভুল হতে পারে, তবে দুর্ভাগ্যবশত আমি এখানে এ ধরনের শব্দ শুনিনি।’ 

তিনি আরও বলেন, তদন্তত ও সত্যতা স্বীকার না করে সংহতি সম্ভব নয়।

জার্মান রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি জনসাধারণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়ের প্রত্যাশা পূরণ করে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের সহায়তায় ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসের ঘটনাবলির তদন্তকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রশংসা করেন।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং সময়েও বাংলাদেশ-জার্মানি সম্পর্ক দৃঢ় রয়েছে এবং অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় জার্মানির ৫২-বছরের অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, জার্মানি বাংলাদেশি পোশাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক এবং বিভিন্ন খাতে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী।

জার্মান সরকার বাংলাদেশে দ্রুত নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে চলমান সংস্কারের প্রশংসা করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংস্কারের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে জার্মান ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বিনিয়োগ বাড়ানো অব্যাহত রাখতে পারে।