শিশুরা ভবিষ্যৎ জাতির রূপকার : শিশুদের অধিকার ও আমাদের করণীয় 

বাসস
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:১২

ঢাকা, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ হচ্ছে শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারী প্রথম ২২টি দেশের মধ্যে একটি দেশ। এই সনদে রয়েছে বিশ্বের প্রতিটি শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান এবং সহনশীল প্ররিবেশে নিরাপদে বেড়ে ওঠার মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের দিক-নির্দেশনা। কিন্তু নানা কারণে এর ব্যতয় ঘটে আমাদের সমাজে। আদর-যত্ন, সঠিক দিক-নির্দেশনা ও বিদ্যমান পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিরূপ প্রভাবে অনেক শিশু প্রত্যাশিত লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়। ছোট ছোট ভুল করতে করতে এক সময় তারা এমন সব কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যায়, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন ও মূল্যবোধের পরিপন্থী। বিঘ্নিত হয় রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা। 

শিশুরা ভবিষ্যৎ জাতির রূপকার। একটি দেশ গড়ে তুলতে শিশুদের সুন্দর মানসিক বিকাশের জন্য গুরুত্ব প্রদান করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। তাই শিশুর শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, গুণগত শিক্ষা, নিরাপত্তা, পুষ্টি ও সুস্থ বিনোদন নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। শিশুরা মুক্তধারার চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে বেড়ে উঠলে, তারা আগামী দিনের বিশ্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। বিশ্বের প্রতিটি শিশু যেন নূন্যতম প্রয়োজনীয় সুবিধা নিয়ে জীবন যাপন করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এ কারণেই ‘বিশ্ব শিশু দিবস-২০২৪’-এর প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘প্রতিটি শিশুর অধিকার রক্ষা, আমাদের অঙ্গীকার’।

একটি শিশুকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে প্রথমেই শিশুর পারিবারিক ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বব্যাপী শিশুদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য ১৯২৪ সালে জেনেভায় এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে ‘শিশু অধিকার’ ঘোষণা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৯ সালে জাতিসংঘে ‘শিশু অধিকার সনদ’ ঘোষণা করা হয়। বর্তমান আইনে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল ব্যক্তিকে শিশু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ‘শিশু অধিকার সনদে’ ৫৪টি ধারা এবং ১৩৭টি উপ-ধারা রয়েছে। এই উপ-ধারাগুলোতে বলা হয়েছে, শিশুদের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্য করা যাবে না। রাষ্ট্রসমূহ শিশুদের পরিচর্যা ও সরকার শিশুদের সেবা এবং সুবিধাদি প্রদান করবে। শিশুদের মৌলিক অধিকার যেমন- শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে হবে। 

শিশু অধিকার সংরক্ষণ ও শিশু কল্যাণে শিশুর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ, পুষ্টি, শিক্ষা ও বিনোদনের কোনো বিকল্প নেই। তাই শিশু-কিশোর কল্যাণে জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী শিশু অধিকার সংরক্ষণ, শিশুর জীবন ও জীবিকা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনাসহ শিশু নির্যাতন বন্ধ, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের বৈষম্য বিলোপ সাধনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ঝুঁকিপুর্ণ কাজ থেকে শিশুদের বিরত রাখার জন্য শিশুশ্রম নিরসন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। 

শিশুরা বড় হবে, একদিন স্কুল পাশ করে কলেজে ভর্তি হবে। তারা শিক্ষিত হবে। জ্ঞান অর্জন করবে। তাদের মানবিক মূল্যবোধ বাড়বে। শিশুদের প্রতি বঞ্চনা, শিশুশ্রম, অপুষ্টি, ও বাল্য বিবাহসহ সকল সমস্যা যা শিশুর সঠিক মানসিক বিকাশের অন্তরায় সেসব সমস্যা দূর করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং পরিবারের সক্রিয় অংশগ্রহণ। তবেই দেশের সকল শিশুর অধিকার নিশ্চিত হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
৫ আগস্ট নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১ দফা দাবিতে উত্তাল ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজপথ
ইসির খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ১০ আগস্ট, চূড়ান্ত তালিকা ৩১ আগস্ট
রাশিয়ায় বাসের সাথে ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১১
তাইওয়ানে প্রবল বর্ষণে ৪ জনের মৃত্যু
কাল খুলে দেওয়া হবে কাপ্তাই বাঁধের ১৬ জলকপাট
ছাত্রলীগকে পরাজিত করে ছাত্রজনতার জয়
ব্রাজিলে ট্রাম্পের প্রশংসায় বলসোনারো সমর্থকদের সমাবেশ
ফেনীতে জুলাই জাগরণ আলোচনা সভা
বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় ১৪ জেলে আটক
১০