বাসস
  ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:১১

ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা গোপালগঞ্জের গিয়াস

ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা গোপালগঞ্জের গিয়াস। ছবি; বাসস

গোপালগঞ্জ, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : গিয়াস উদ্দিন (৩৫)  ২০১৪ সালে মাস্টার্স শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। তবে ছোটবেলা থেকে তিনি স্বপ্ন দেখতেন উদ্যোক্তা হওয়ার। ভাল লাগেনি ব্যাংকের চাকরি। চাকরি ছেড়ে ২০১৮ সালে ফিরে আসেন জেলার কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দি নিজ গ্রামে। ৭০টি ছাগল নিয়ে শুরু করেন ছাগলের খামার।

গিয়াস ছাগল পালনে সফল না হলেও, হতাশ হননি তিনি। ছাগল বিক্রি করে ৪টি উন্নত জাতের গাভী নিয়ে শুরু করেন ‘অগ্র ডেইরি ফার্ম’ নামে একটি গরুর খামার। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে খামারটিতে গরুর সংখ্যা। বর্তমান তার খামারে দেড় শতাধিক গরু রয়েছে। খামারে ১০জন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন তার খামার থেকে ৪শ’ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদিত দুধ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

এছাড়া রয়েছে ‘অগ্র সুইটস ভিলেজ’ নামে নিজস্ব মিষ্টির দোকান। যেখানে খামার থেকে উৎপাদিত খাটি গরুর দুধ দিয়ে দই, রসমালাই, রসগোল্লা, ছানা, ঘিসহ বাহারি মিষ্টি তৈরি করা হয়।

এদিকে, গরুর খাবারের যোগান দিতে ১০ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে উন্নতজাতের ঘাস। খামারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করছেন ঘাসও। তার এ সাফল্যে গরুর খামারে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয়রা। পরামর্শের জন্য আসছেন অনেকে। গিয়াস উদ্দিনের প্রতি মাসে এখন আয় প্রায় ১ লাখ টাকা।

গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হয়েছি। পরের অধীনে বড় কর্মকর্তা না হয়ে নিজের কর্মসংস্থান নিজেই করেছি। আমার শুরুটা খুব মসৃণ ছিল না। আমি ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে খামার করায় প্রথমে অনেকে আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতেন। আমি শিক্ষিত হয়ে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়ে গরু পালন করছি। প্রথম দিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছি। তবুও হতাশ হয়নি।

গিয়াস উদ্দিন তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আত্মপ্রত্যয়ী হলে ডেইরি ফার্ম করে সফল হওয়া যায়। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। তরুণ উদ্যেক্তারা এ পেশায় এগিয়ে আসলে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এছাড়া জাতিকে দুধ ও মাংসের যোগান দেওয়া সম্ভব। মেধা জাতি গঠনে ভূমিকা রাখা যায়।

জেলার কাশিয়ানী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শুভঙ্কর দত্ত বলেন, ‘গিয়াস উদ্দিন একজন সফল খামারী। তার খামার গোপালগঞ্জ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরুর খামার। তাকে দেখে অনেকে খামার করতে আগ্রহী হচ্ছেন।