লালমনিরহাটে রেকর্ড সংখ্যক আগাম জাতের আলু চাষ

বাসস
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:০২
লালমনিরহাটে চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ আগাম জাতের আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। ছবি : বাসস

লালমনিরহাট, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলায় চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ আগাম জাতের আলু চাষ করে  করেছেন কৃষকরা। তাদের অভিযোগ আলুর কাঙ্ক্ষিত দাম না  পাচ্ছেন না। 

গত ৩ বছর আলুর বাজার ছিলো  বেশি, ২০/১৫ টাকা কেজির আলু সর্বোচ্চ ১২০ টাকা কেজিতেও খেতে হয়েছে। গত বছর আলুর দাম পেয়ে এ বছর কৃষকেরা বেশি আগ্রহী হয়ে আলু চাষ করেন।

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের তথ্য মতে,  চলতি মৌসুমে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ৬ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত অর্থে এর পরিমাণ আরো বেশি হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

গ্রামের সমতলের কৃষকের পাশাপাশি তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, রত্নাই, সতী নদীর চরাঞ্চলেও ব্যাপক হারে আলু চাষ হয়েছে। অনেক কোল্ড স্টোরের মালিক শত শত একর জমি এক বছরের জন্য লিজ নিয়ে আলু চাষ করেছে। 

ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বাজারে আগামজাতের পরিপক্ক আলু উঠতে শুরু করে। সেই  সঙ্গে আলুর দামও কমতে থাকে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারে আলুর কেজি ৩৫ -৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এখন বর্তমানে বাজারে প্রতি আলু স্থানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এ বছর খাবার আলুর দাম বেশি হওয়ায় বীজ আলু কিনতে হয়েছে বেশি দামে। এছাড়া সার, বীজ, কীটনাশক, চাষের ও পরিচর্যার খরচ মিলে প্রায় এক বিঘা জমি চাষে খরচ পড়েছে ৩৯ হাজার হতে ৪২ হাজার টাকা। 

কৃষককে উৎপাদন খরচ তুলতে হলে বাজারে আলুর দাম থাকতে হবে কমপক্ষে ৩৫ টাকা। এছাড়া এ সময়ের উৎপাদিত আলু কোল্ড স্টোরে সংরক্ষণ করা যায় না। আরো এক মাস পর যে আলু উঠবে সেই আলু কোল্ডস্টোরে সংরক্ষণ করা যাবে। ।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এবছর অনেক কৃষকরা জমিতে বছরে তিনটি করে ফসল চাষ করছেন। ইরি-বোরো ধান চাষের আগে জমিতে আলু, সরিষা, পেঁয়াজসহ নানা রবি ফসল চাষ করে থাকেন। আলু তুলে একই জমিতে সেচ নির্ভর বোরো ধানের চাষ করেন। আলু ৯০ দিনে ফসল হলেও ৬০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে। দুই বছর ধরে আলুর দাম বাজারে খুব বেশিা। তাই ব্যাপকহারে আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন ব্যবসায়ী ও কৃষক। বিশেষ করে আলু চাষে কৃষকরা গত কয়েক বছর ধরে ভালো লাভের মুখ দেখেছেন। তবে এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। আলুর ভরা মৌসুম শুরু হওয়ার অন্তত দেড় মাস আগেই কৃষকরা মাঠ থেকে আগাম আলু তুলছেন। ফলন ভালো হলেও তারা বলছেন বাজারে আলুর ন্যায্যমূল্য  পাচ্ছেন না ।

আলু চাষিরা জানান, গত বছরের আগাম আলুর বাজার ভালো থাকায় এবার দ্বিগুণ জমিতে আলু চাষ করেছেন। 

ধরলা নদীর টুনটুনির চরের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, আমার ১৮ বিঘা জমিতে কার্ডিনাল আলু হয়েছে। ১২০ টাকা কেজি দরে বীজ আলু কিনেছি। সারসহ অন্যান্য খরচও বেশি। এখন আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি খরচ পড়েছে ২৫ টাকা। আলুর পাইকারি ব্যবসায়ী মাহফুজার রহমান জানান, আমরা ১৫-২০ টাকা কেজি দরে আলু কিনে মাত্র এক টাকা লাভে বিক্রি করছি। আগাম জাতের আলুর সরবরাহ বেশি, তাই দাম পড়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইখুল আরিফিন জানান,  চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। 

সময়ের ব্যবধানে আলুর দাম বাড়বে। বিদেশে এখনো রপ্তানি শুরু হয়নি, রপ্তানি শুরু হলে আলুর দাম বাড়বে। 

এছাড়া মৌসুমের শুরুতে কৃষক আলুর দাম অনেক বেশি পেয়েছেন। আগাম জাতের আলু সপ্তাহ পর বাজারে পাওয়া যাবে না। প্রকৃত অর্থে আলু উৎপাদনের মৌসুম এখন শুরু হয়নি। ফালগুন চৈত্র মাস পর্যন্ত প্রকৃত আলুর মৌসুম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নীলফামারীতে ১২ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান
তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্রে দু’টি গভীর অনুসন্ধান কূপ খননের উদ্যোগ
ইতালির নাগরিকত্ব পাচ্ছেন জনপ্রিয় মার্কিন লেখক ফ্রান্সেস মায়েস
কিশোরগঞ্জে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের চারলাখ টাকা জরিমানা
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘বিশ্ব হিমোফিলিয়া’ দিবস পালিত
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর বিমানের কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে বাংলাদেশ
রাজশাহীতে মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে হত্যা : মামলার দুই আসামী আটক
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট পরিসংখ্যান
শেখ মুজিবের ছবি সরিয়ে বহিষ্কার ৮ শিক্ষার্থী, প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের
১০