মাশরুম চাষে সফল গৃহবধূ থেকে উদ্যোক্তা নিপু ত্রিপুরা  

বাসস
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৩ আপডেট: : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:০৬
মাশরুম চাষে সফল উদ্যোক্তা খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ঠাকুরছড়া এলাকার নিপু ত্রিপুরা। ছবি: বাসস

\ জীতেন বড়ুয়া \

খাগড়াছড়ি, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): পুরোদমে গৃহবধূ নিপু ত্রিপুরা (৩২)। খাগড়াছড়ির জেলা সদরের ঠাকুরছড়া এলাকায় স্বামী সন্তান নিয়ে সুখ-দুঃখে দিন যাচ্ছিল। কিন্তু তারপরও নিজের ভেতরে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। সংসারের পাশাপাশি নিজে কিছু করার আগ্রহ থেকে শুরু করেন মাশরুম চাষ। আর এতেই সফলতার মুখ দেখছেন গৃহবধূ নিপু ত্রিপুরা।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ঠাকুরছড়া এলাকার বাসন্দিা নিপু ত্রিপুরা। স্বামী যশু ত্রিপুরা একটি ব্যাংকের দারোয়ান হিসেবে কর্মরত। কিন্তু স্বামীর একক আয় দিয়ে দুই সন্তান নিয়ে সংসারে তেমন স্বচ্ছলতা ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে নিজে কিছু করার বাসনা থাকলেও করোনার সময় স্বপ্ন পূরণে উদ্যোগী হন। স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করে খাগড়াছড়ি/ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে মাশরুমের বীজ সংগ্রহ করেন। এর আগে কয়েকজন চাষী থেকে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ ঘরে মাশরুম চাষ শুরু করেন। প্রায় ২শ বীজ নিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার কাছে ২ হাজার মাশরুমের স্পন রয়েছে। প্রতিকেজি মাশুরুম বিক্রি করছেন ৪শ টাকায়। বছর জুড়ে হিসেব করলে গড়ে প্রতিমাসে তিনি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মাশরুম বিক্রি করেন। তবে মাশরুম উৎপাদনের এ সময়ে দুই মাসে প্রায় দেড় টন মাশরুম উৎপাদন হয় বলে জানান তিনি।

‘নিপু মাশরুম ঘর’ এর ৪ ধরনের মাশরুম আছে। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে পিও-২, পিও-১০, (সাদা জাতের) মাশরুম এবং পিএসসি (ছাই রঙের) এবং ঋষি মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। সামান্য জায়গাতে মাশরুম চাষ করা যায়। খড়ের বেডে মাশরুম চাষ সাধারণত ৩ ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। ফসল উৎপাদনের জন্য চাষ ঘরে ২১ দিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যেই মাশরুম পাওয়া যায়।

নিপু ত্রিপুরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিজে কিছু একটা করে স্বাবলম্বী হওয়ার ইচ্ছে। সবশেষ গত বছর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কাজে নেমে গেলাম। মাশরুম লাভজনক চাষ। যত্ন নিলে সারা বছর কমবেশি ফলন পাওয়া যায়। তবে বীজের অভাবে অনেকেই মাশরুম চাষ করতে পারছে না। অধিকাংশ মানুষ বাইরে থেকে বীজ সংগ্রহ করে মাশরুম চাষ করছে। এখন আগ্রহীরা তার কাছে বীজ পাবে বলেও জানান তিনি।

শুধু মাশরুম চাষ নয় বাড়ির পাশে একটি মুদি দোকানও চালান তিনি। এছাড়া স্থানীয় ৫ জন নারীকে বেতন দিয়ে যুক্ত করেছেন মাশুরুম চাষে। সেখানে কর্মরত বিনতা ত্রিপুরা ও আপন বালা ত্রিপুরা বলেন, বাইরে প্রতিদিন কাজ পেতাম না। অধিকাংশ সময় কাজ ছাড়া থাকতে হতো। কিন্তু এখানে পুরো মাসজুড়ে মাশরুম চাষে সময় দিচ্ছি। এতে যা পাই তা দিয়ে সংসার চলে যাচ্ছে। বর্তমানে দুই মাসে প্রায় দেড় টন মাশরুম উৎপাদন হয়। নিপু ত্রিপুরাকে দেখে অনেকে মাশরুম চাষে আগ্রহী হচ্ছে। তাদের অনেকের  উৎপাদিত মাশরুমও যাচ্ছে বাজারে।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মোহাম্মদ  বাছিরুল আলম বলেন, সবজি হিসেবে মানুষের মধ্যে মাশরুম এখন বেশ জনপ্রিয়। বাজারে এটির চাহিদাও অনেক। অনেকের মত নিপু ত্রিপুরা মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। সেখানে অন্য নারীরাও কাজ করছে। এটি অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হবে। উনার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিএনপি নেতা নুরুল ইসলামের স্বেচ্ছাশ্রমে নওগাঁয় ৬ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় একব্যক্তি নিহত 
নির্বাচনে জামায়াত ৩শ’ আসনেই পূর্ণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে : গোলাম পরওয়ার
ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের মৃত্যুতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার শোক 
সীতাকুণ্ডে বাসের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু 
ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের মৃত্যুতে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এর শোক
খাগড়াছড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে জেলা প্রশাসনের সহায়তা
ঢাকা-পাবনা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরেজমিন পরিদর্শন
আলজেরিয়া দলে ডাক পেলেন জিদানের ছেলে লুকা
ডেঙ্গুতে আরো ২৬৩ জন হাসপাতালে ভর্তি
১০