বাসস
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২৪

ঢাকার পল্টনে সবচেয়ে কম মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে

ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী ঢাকার পল্টন থানা এলাকায় সবচেয়ে কম মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে- এর হার মাত্র ১ শতাংশ।

‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র, ২০২২: ছোট এলাকা প্রাক্কলন (এসএই), জেলা ও উপজেলা ফলাফল’ শীর্ষক বিবিএসের জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিবিএসের দারিদ্র্য ও জীবিকা পরিসংখ্যান (পিএলএস) সেল ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র, ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন তৈরি করে প্রকাশ করেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিমোন লসন পার্চমেন্ট এবং বিশ্বব্যাংকের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ফর বাংলাদেশ ও ভুটানের অ্যাক্টিং অপারেশন ম্যানেজার ও প্রোগ্রাম লিডার এস আমের আহমেদ।

বিবিএসের উপ-মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম এতে স্বাগত দেন এবং বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সমাপনী বক্তব্য রাখেন।

বিবিএসের উপ-পরিচালক ও ফোকাল পয়েন্ট অফিসার, পিএলএস সেল, বিবিএস, মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২ এর উপর একটি উপস্থাপনা করেন এবং ডব্লিউএফপির গবেষণা, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ ইউনিটের প্রধান তাকাহিরো উতসুমি ঝুঁকিপূর্ণতা মূল্যায়ন ও যথাযথ লক্ষ্যমাত্রার জন্য দারিদ্র্য পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পর্কে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

পরিসংখ্যান ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায় প্রশ্নোত্তর পর্বটি পরিচালনা করেন।

ঢাকা জেলার সবচেয়ে কম দরিদ্র বাসিন্দার তালিকা বিবেচনা করলে, উত্তরা পশ্চিম দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে- যেখানে ১.১% দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এরপর রয়েছে বিমানবন্দর (১.৪%), ধানমন্ডি (১.৫%), গুলশান (৩.২%), মোহাম্মদপুর (৪.৬%), রামপুরা (৬.৩%), বাড্ডা (৭.৪%), বনানী (১১.৩%) এবং মিরপুর (১২.৬%)। ঢাকা জেলার সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার ৮.৬%।

এদিকে, মাদারীপুর জেলায় দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি, জেলার জনসংখ্যার ৫৪.৪% দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, নোয়াখালী জেলায় সবচেয়ে কম দারিদ্র্যের হার মাত্র ৬.১%।

পৃথক উপজেলার দিক থেকে, মাদারীপুরের ডাসার সবচেয়ে দরিদ্র, সেখানে জনসংখ্যার ৬৩.২% দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।

আঞ্চলিকভাবে, প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে যে বরিশাল বিভাগে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ দারিদ্র্যের হার ২৬.৬ শতাংশ, যেখানে চট্টগ্রামে সর্বনিম্ন ১৫.২ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিসংখ্যান ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, দারিদ্র্য মানচিত্রের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সরকার বিশেষ ক্ষেত্রে যেখানে সহায়তা প্রয়োজন সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২’ তৈরিতে হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (এইচআইইএস) ২০২২ এবং পপুলেশন অ্যান্ড হাউজিং সেন্সাস (পিএইচসি) ২০২২ এর তথ্যকে ভিত্তি করে এসএই কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে।

এই পদ্ধতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দারিদ্র্যের স্তর অনুমানকে সহজতর করে, যা এইচআইইএস ২০২২ এর সাধারণত প্রদত্ত বিভাগ-স্তরের অনুমানকে ছাড়িয়ে যায়।

বিবিএস দুটি আন্তর্জাতিক অংশীদার- বিশ্বব্যাংক এবং ডব্লিউএফপি এর সহযোগিতায়, ২০২২ সালের দারিদ্র্য মানচিত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

২০২২ সালের দারিদ্র্য মানচিত্রে ৮টি বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং এসএই পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা, ৫৯০টি উপজেলা এবং মহানগর থানায় বিস্তৃত চিত্র দেওয়া হয়েছে।

এই বিস্তৃত চিত্র দেশের অভ্যন্তরে দারিদ্র্যের একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ও বিস্তারিত ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।