নারীর খণ্ডিত মাথার পর মিলল শিশু সন্তানের লাশ, ঘাতক আতিকুল আটক

বাসস
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪৭
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় শিশু সন্তান সাইমার মৃতদেহ উদ্ধার। ছবি: বাসস

রংপুর, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় নারীর মাথাবিহীন লাশ ও লাশের খন্ডিত মাথা পাওয়ার পর এবার নিহত মহিলার শিশু সন্তান সাইমার মৃতদেহ উদ্ধার করল পীরগঞ্জ থানা পুলিশ। 

ঘাতক আতিকুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ রবিবার সকালে বড় বদনাপাড়া গ্রামে আতিকুল ইসলামের বাড়ির পেছনের বাগানে পুতে রাখা শিশু সাইমার লাশ উদ্ধার করা হয়।

সহকারি পুলিশ সুপার ডি-সার্কেল আছিফা আফরোজা আদুরি জানান, নিহত দেলোয়ারার স্বামী রেজাউল করিম। তাদের আগেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। তাদের কন্যা সাইমা  মায়ের সাথে থাকতো।

ঘাতক আতিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে দেড়মাস আগে শিশু সাইমাকে হত্যার পর লুঙ্গিতে পেঁচিয়ে বাড়ির পেছনে ৩/৪ফিট গর্ত করে পুতে রাখার কথা স্বীকার করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশু সাইমার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, গত শুক্রবার সকালে বড় বদনাপাড়ায় মরিচ ক্ষেতে নারীর মস্তকহীন লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন এক নারী। এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ মস্তকহীন লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

জানা গেছে, পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নের বড় বদনারপাড়া গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে আতিকুর রহমান (৩৫) একজন পেশাদার জুয়াড়ি। তিনি মাঝে মাঝেই বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রাগানের শিল্পী নিয়ে আসতেন। কয়েকদিন আগে সে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের পশ্চিম গোলমুন্ডা ফকিরপাড়ার রবিউল ইসলামের মেয়ে দেলোয়ারা বেগম ঝিনুককে (৩৬) তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। গত শুক্রবার সকালে পীরগঞ্জের করতোয়া নদীর তীরে বড় বদনারপাড়ায় একটি মরিচের ক্ষেত থেকে ঝিনুকের মস্তকহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ।

পরে উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ এবং র‌্যাব-১৩ এর গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আতিকুর রহমানকে আটক করে। আতিকুরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার বিকেলে পুলিশ ঝিনুকের ফেলে রাখা লাশের স্থান থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ওই নদীর টোংরারদহ নামকস্থানে নদীর পাড়ে কাঁদার নিচ থেকে ঝিনুকের মাথাটি উদ্ধার করে। 

এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেন রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম। এসময় পুলিশের রংপুর সি-সার্কেলের এএসপি আসিফা আফরোজ আদুরি, ওসি এমএ ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

সিআইডি ক্রাইম সিন দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় ও ঠিকানা শনাক্ত করে। নিহত নারী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী। নীলফামারীর জলঢাকার পশ্চিম গোরমুন্ডা গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে তিনি।

পুলিশের একটি দল বস্তা ও ব্যাগে ভর্তি ছবি, সিমকার্ড, কাগজে লিখিত কয়েকটি মোবাইল ফোন নম্বর থেকে নারীর পরিচয় জানতে পারে। এক পর্যায়ে আতিকুলের গতিবিধিতে নজর রাখেন তারা।

এরপর হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বড় বদনাপাড়া গ্রামের মুনছুর আলী মন্ডলের ছেলে আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের এসআই অনন্ত কুমার বর্মণ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি এমএ ফারুক জানান, আতিকুলের স্বীকারোক্তিতে কাটা মাথা ও শিশুর লাশের সন্ধান মিললে উদ্ধারে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দু’টি হত্যাকাণ্ডের রহস্য এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে তদন্ত চলছে। 

আতিকুল এলাকায় জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত বলেও জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শ্রম অধিকার শক্তিশালী করে দেশকে মর্যাদাকর হিসেবে উপস্থাপন করা সম্ভব : শ্রম সংস্কার কমিশন
বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা নিজেদের দক্ষতা প্রমাণে সমর্থ হয়েছেন: আইজিপি
মাদ্রাসা ছাত্র হত্যা মামলায় সাবেক এমপি মনু কারাগারে
গণ-অভ্যুত্থান ও শ্রমিক আন্দোলনে নিহতদের ‘শহীদ’ স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ
সকল শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতির সুপারিশ
স্বাধীনতা কাপ ভলিবলের সেমিফাইনালে বিমান-আনসার, বিকেএসপি-বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড
ঢাকায় ইইউভুক্ত দেশের জন্য ভিসা সেন্টার খোলার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে স্পেনে ৩ দিনের শোক 
ঢাকায় আঞ্চলিক উচ্চশিক্ষা সম্মেলন ডিসেম্বরে: ইউজিসি
পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে শেকৃবি ছাত্রদলের মানব বন্ধন
১০